‘নট অ্যা ফেইরিটেল এন্ডিং’

অবসরের ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন কুইন্টন ডি কক। বিশ্বকাপটা তাই চাপহীন ভাবেই খেলে গিয়েছেন তিনি; পারফর্মও করেছেন দুর্দান্ত। কিন্তু শেষমেশ সেমিফাইনালের চাপে ভেঙে পড়েছেন নিদারুণভাবে, তাই তো ওয়ানডে ক্যারিয়ারের বিদায়লগ্নটা সুন্দর হলো না তাঁর।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এদিন প্রথম থেকেই নড়বড়ে মনে হয়েছিল ডি কককে। অন্য ম্যাচে যেখানে তিনি উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দলকে, সেখানে অজি বোলারদের বিরুদ্ধে নিজেই পিছিয়ে গিয়েছেন। এই শোচনীয় অবস্থা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি; ১৪ বলে ৩ রান করে জস হ্যাজলউডের বলে আউট হন তিনি।

সবদিন একজন ব্যাটার রান পাবেন না সেটা স্বাভাবিকই বটে। তাই তো প্রোটিয়া ওপেনার অল্পতে ফিরে গেলেও খানিকটা আক্ষেপ করা ছাড়া কিছুই করার ছিল না সমর্থকদের। কিন্তু নাটকীয়তা তখনি শেষ হয়নি, দ্বিতীয় ইনিংসে দেখা গেলো আরো অনাকাঙ্ক্ষিত চিত্র।

পঞ্চাশ ওভারের সংস্করণে গ্লাভস হাতে শেষবার মাঠে নেমে বোধহয় মানসিক দৃঢ়তা হারিয়ে ফেলেছিলেন এই তারকা। তাই তো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হন তিনি। একবার নয়, দুই দুইবার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন; যার খেসারত দিতে হয়েছে পুরো দলকে।

প্রথমবার স্টিভ স্মিথকে জীবন দিয়েছিলেন এই উইকেটরক্ষক। ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে তাব্রাইজ শামসির কাছে পরাস্ত হন স্মিথ, সেই ডেলিভারি ব্যাট ছুঁয়ে ছুটে যায় গ্লাভসের দিকে। কিন্তু তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন তিনি, ফলে অজিদের ওপর চাপ বাড়াতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।

তবে ডি কক সবচেয়ে বড় ভুল করেছেন ৪৫তম ওভারে। এইডেন মার্করামের করা দ্বিতীয় বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে পিছনে ক্যাচ দিয়ে বসেন প্যাট কামিন্স – ম্যাচের ওমন সময়ে সাদামাটা ক্যাচটাও ধরে রাখতে পারলেন না তিনি। এই কামিন্সের ব্যাট থেকেই শেষপর্যন্ত উইনিং রান এসেছে।

১০ ম্যাচে ৫৯৪ রান করেছেন এই বাঁ-হাতি; প্রায় ৬০ গড়ে ব্যাটিং করে দলকে টেনে এনেছেন পুরো আসর জুড়ে। অথচ শেষ সময়ে এসে নিজেই ভুল করে বসলেন – সুন্দরতম একটা যাত্রার সমাপ্তি হলো করুণ সুরে।

দক্ষিণ আফ্রিকা যেমন বারবার ভাগ্যের কাছে হেরে যায়, তেমনি আজ হেরে গেলেন কুইন্টন ডি কক। ভাগ্যের ছোঁয়া পেলে সম্ভবত রান পেতেন, ক্যাচও নিতে পারতেন অনায়াসে। সেক্ষেত্রে তাঁর গল্পটাও হয়তো বাঁধিয়ে রাখার মতই হতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link