চলতি সিরিজের আগে কখনোই নিউজিল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টিতে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-১ এ সিরিজ জয়ের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রত্যাশাটা তাই আরেকটু বেশিই ছিলো সাকিব-রিয়াদদের কাছে। আর ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখিয়ে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেই ব্ল্যাকক্যাপদের ধরাশায়ী করলো বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথম জয়ের পথে সফরকারী দলটিকে লজ্জায় ডুবালো স্বাগতিক বাংলাদেশ। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সাকিব-মুস্তাফিজদের দাপুটে বোলিংয়ে মাত্র ৬০ রানেই গুড়িয়ে যায় সফরকারীরা। এর আগে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর ছিলো ৬০ রান। দুই অংক ছুঁতে পেরেছেন মাত্র দু’জন। ইনিংসে বাউন্ডারি মাত্র তিনটি।
বাংলাদেশের বিপক্ষে আবারো ওই লজ্জার রেকর্ডের পাশে নাম তুললো কিউরা। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মন্থর উইকেটে ৬১ রানের সহজ লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে ৭ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ব্যাটে বলে অবদান রেখে আরেকটি ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন সাকিব আল হাসান।
তবে, নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টিতে এই লজ্জার ব্যাটিং একটু ইতিহাস স্মৃতিচারণার সুযোগ করে দিল। পরিসংখ্যান ও অতীত ঘেটে কয়েকটা ম্যাচের স্মৃতিচারণা করছে খেলা ৭১।
- ৮১ – প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, ২০১০
লওডারহিলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নুয়ান কুলাসেকারা ও লাসিথ মালিঙ্গার পেস দাপটে মাত্র ৮১ রানেই গুড়িয়ে যায় কিউইরা। অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টোরি ও নাথান ম্যাককালাম ছাড়া কেউই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের কোটা। সেদিন টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে নিজেদের সর্বনিম্ন দলীয় রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড।
জবাবে সহজ লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে সাত উইকেট হাতে রেখে সহজ জয় পায় কিউইরা। ঘরের মাটিতে সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় ডুবে নিউজিল্যান্ড।
- ৮০ – প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, ২০১১
২০১১ সালে ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডকে ১৮১ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুড়ে দেয় পাকিস্তান। আহমেদ শেহজাদ, মোহাম্মদ হাফিজ, উমর আকমলদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। জবাবে লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে মাত্র ৮০ রানেই থেমে যায় কিউইদের ইনিংস। কিউইদের প্রথম চার ব্যাটসম্যানই আউট হন শূন্য রানে! মাত্র ১১ রানেই ৫ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
শহিদ আফ্রিদি ও আব্দুল রাজ্জাকের ম্যাজিকেল স্পেলে মাত্র ৮০ রানেই গুড়িয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের কাছে ধরাশায়ী হয় কিউইরা। ১০৩ রানের বড় জয় পায় সফরকারী পাকিস্তান।
- ৬০ – প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, ২০১৪
২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চট্রগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ৬০ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি লঙ্কানরাও। ইনিংসের চার বল বাকি থাকতেই জিমি নিশাম ও ট্রেন্ট বোল্টদের দাপুটে বোলিংয়ে ১১৯ রানে গুড়িয়ে যায় লঙ্কানরা। ১২০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করে ৯ উইকেটে মোটে ৬০ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড দল।
কেন উইলিয়ামসনের ৪২ ছাড়া কেউই বলার মত রান করতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হল পাঁচ রান। সেটা করেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল! পাঁচ ব্যাটসম্যান রানের খাতাই খুলতে পারেননি!
সাত বছর ধরে এটিই ছিলো নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোর। বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ৬০ রানে অলআউট হয় সেই লজ্জার রেকর্ডের পাশে আবারো নাম লেখায় সফরকারী নিউজিল্যান্ড দল। দু’টো লজ্জার রেকর্ডই ঘটলো বাংলাদেশের মাটিতে – প্রতিপক্ষ কেবল ভিন্ন।