বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের পতন, একটি ভালবাসার গল্প

একজন রান করছিলেন, একজন করছিলেন না। একজন এই বিশ্বকাপেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। আরেকজন ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। তবে, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে তাঁদের দু’জনেরই এক সাথে জ্বলে ওঠা খুবই জরুরী ছিল।

আর সেই জরুরী কাজটাই এবার করতে পেরেছেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। রিজওয়ান তাঁর ফর্ম ধরে রেখেছেন। আর বাবর ফিরেছেন ফর্মে। বাবর পেয়েছেন ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। গোটা স্টেডিয়ামে একটা গুঞ্জন উঠল – ভারতের মাটিতে তাহলে ফিরে এসেছেন পাকিস্তান ক্রিকেটের করণ আর অর্জুন জুটি।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে এই দু’জন মিলে তুলে ফেলেন ৮২ রান। তখনও পর্যন্ত ম্যাচে ভাল ভাবেই ছিল পাকিস্তান। তবে, এরপরই বিপদ। বাবর-রিজওয়ানেও শেষ রক্ষা হল না পাকিস্তানের। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মহাবিপর্যয় হল পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপের।

রিজওয়ান ফিরে গেছেন হাফ সেঞ্চুরি থেকে এক রান দূরে থাকতে। বাবরও হাফ সেঞ্চুরি করলেও ইনিংসটা টেনে বড় করতে পারলেন না। আর এর চেয়েও বড় ব্যাপার হল। এই দু’জন ভারতের মত জরুরী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জরুরী কাজ করতে পারলেও বাকিরা ছিল ছন্নছাড়া। আহমেদাবাদ পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের বেহাল দশার দেখা মিলল আরেকবার।

টপ অর্ডারের চারজন ভাল শুরু পেয়েছেন। তবে, কেউই নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি। পারলে ম্যাচের চেহারাও ভিন্ন হতে পারত। সৌদ শাকিল, ইফতিখার আহমেদ ও শাদাব খান – পাকিস্তানের মিডল অর্ডার এদিন ছিল চূড়ান্ত ব্যর্থ। ভারতের বোলিং আক্রমণের সামনে তাঁরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি একদমই।

পাকিস্তানের এই বিপর্যয়ে উইকেটও বেশ বড় প্রভাবর রেখেছে। প্রথম দিকে উইকেট ছিল বেশ ব্যাটিং সহায়ক। বল ব্যাটে আসছিল বেশ ভাল ভাবে। তবে, সময়ের সাথে সাথে উইকেট থেকে স্পিনাররা সাহায্য পেতে ‍শুরু করেন। উইকেট মন্থর হতে শুরু করে, বলও অনেক নিচু হয়ে আসছিল। ভারত সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তান – এই দুই দলের লড়াই ঐতিহাসিক ভাবে খুবই জমজমাট হলেও বিশ্বকাপের মঞ্চে বরাবরই এই ম্যাচ হয় একতরফা। সেই ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে এখন অবধি সবগুলো বিশ্বকাপেই মুখোমুখি হয়েছে এই দুই দল। এর মধ্যে কোনোটাতেই জিততে পারেনি পাকিস্তান। এর মধ্যে ৯২-তে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। ৯৯-তে খেলে ফাইনালে।

এরপরও বারবারই ভারতের সামনে এসে ভরাডুবি হয় দলটির। এবার টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে তুলতে পারল মাত্র ১৯১ রান। ভারতের পাঁচ বোলারের প্রত্যেকে দু’টি করে উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের পতন ডেকে এনেছেন। শেষ ৩৮ রানে পড়েছে পাকিস্তানের আটটি উইকেট।

আহমেদাবাদের এই লড়াইও আবার চোখে আঙুল দিয়ে একটা প্রশ্নই করলো, বিশ্বকাপে কেন ভারতের বিপক্ষে বারবার ভরাডুবি হয় পাকিস্তানের?

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link