ছক্কায় মন গলেছিল শ্বশুরের!

দিনটা ছিল ১৯৯৭ সালের ১২ এপ্রিল। সেদিন মালয়েশিয়ার কিলাত ক্লাব মাঠে ছিল আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল। আগেই ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে ফেলা বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ এবার কেনিয়া। স্টিভ টিকোলোর ১৪৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে ভর করে আফ্রিকান দলটি নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে করে ২৪১ রান।

ছক্কা হাঁকিয়ে শুধু ম্যাচ নয়, কখনও কখনও শ্বশুরেরও মন গলানো যায়। ২০-২২ বছর আগে সেই কাজটাই করেছিলেন বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান খালেদ মাসুদ পাইলট।

দিনটা ছিল ১৯৯৭ সালের ১২ এপ্রিল। সেদিন মালয়েশিয়ার কিলাত ক্লাব মাঠে ছিল আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল। আগেই ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে ফেলা বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ এবার কেনিয়া। স্টিভ টিকোলোর ১৪৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে ভর করে আফ্রিকান দলটি নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে করে ২৪১ রান।

বৃষ্টিতে ম্যাচ গড়ায় রিজার্ভ ডেতে। পরদিন মানে ১৩ এপ্রিলও বৃষ্টি থাকায় ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে বাংলাদেশের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। সেখানে ২৫ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬৬ রান। ম্যাচ গড়ায় শেষ ওভার অবধি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১১ রান।

উইকেটে তখন খালেদ মাসুদ পাইলট ও হাসিবুল হোসেন শান্ত। শেষ ওভারে মার্টিন সুজির করা প্রথম বলেই সরাসরি সাইডস্ক্রিন বরাবর ছক্কা হাঁকান পাইলট।

জয়ের পর শিরোপা হাতে অধিনায়ক আকরাম খান। সেই দৃশ্যটা বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের মনে আজও অমলীন। শুধু তাই নয়, সেই ছক্কাই মন গলিয়েছিল তাঁর শ্বশুরের।

ওই ম্যাচের সাড়ে চার মাস আগে পাইলট বিয়ে করেন ফারজানা মাসুদ দীবাকে। তবে, বিয়েটা হয়েছিল দুই পরিবারের অমতে। পাইলটের শ্বশুর কোনোভাবেই সেই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি।

তবে, ওই ছক্কাটাই দুই পরিবারের সম্পর্ক স্বাভাবিক করে দিয়েছিল!

তবে, ওই ছক্কার পরও ম্যাচের বাকি পাঁচটা বলের গল্পটা খুবই রোমাঞ্চকর। দ্বিতীয় বল ডট, পরের বল ওয়াইড এবং পরের বলে এক রান। চতুর্থ বল উড়িয়ে খেলতে গিয়ে মিস করে বসেন শান্ত।

এই সময়ে এরকম শট খেলার প্রচেষ্টা দেখে বাউন্ডারি লাইনের বাইরে ডাগআউট থেকে কিংবদন্তীতুল্য ক্যারিবিয়ান কোচ গর্ডন গ্রিনিজ আর বোর্ড সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী হাত দিয়ে শান্তকে ঠাণ্ডা মাথায় খেলার কথা বলছিলেন। পুরনো ফুটেজে সেই দৃশ্যটাও দেখা যায়।

শেষ দুই বলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন তিন রান। চতুর্থ বলে পুল করলে ডিপ মিড উইকেট থেকে ফিল্ডার বল ফেরত পাঠানোর আগে দুটি রান পেয়ে যান শান্ত। একটা সময় মনে হচ্ছিলো যে এটা চার হয়ে যাবে কিন্তু আউটফিল্ড স্লো থাকায় তা আর হয়নি।

ঐতিহাসিক জয় থেকে আর মাত্র এক রান দূরে বাংলাদেশ। স্ট্রাইকে শান্ত। অপর প্রান্ত থেকে খালেদ মাসুদ পাইলট এগিয়ে এসে শান্তকে কিছু পরামর্শ দিলেন।

কেনিয়ার পেসার মার্টিন সুজি দৌঁড়ে এসে শেষ বলটা করলেন। লেগ স্ট্যাম্পের দিকে করা ফুলার লেন্থের ডেলিভারিটা সরাসরি আঘাত হানে শান্তর পেডে, বল চলে গেল ফাইন লেগে।

এই ফাঁকে এক রান পূর্ণ করে দুই হাত উচু করে শান্ত এক দৌঁড়ে ছুটে যান ড্রেসিংরুমের দিকে। ব্যস, বাংলাদেশ হয়ে গেল আইসিসি ট্রফির নতুন চ্যাম্পিয়ন। একই সাথে পূরণ হয় প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নও।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...