বেঞ্চেই কাটবে তাঁদের আইপিএল মৌসুম

আইপিএলের দল বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে সুযোগ পাওয়া খেলোয়াড়ের সংখ্যা। তবে স্কোয়াডে ডাক পেলেও একাদশে জায়গা পাওয়া কখনোই নিশ্চিত নয় বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই ফ্যাঞ্চাইজি লিগে। বড় অংকের অর্থের বিনিময়ে দলে ভেড়ালেও অনেক সময়েই বেঞ্চেই বসতে দেখা যায় তারকা সব ক্রিকেটারদের। আসুন দেখে নেয়া যাক সেসব তারকাদের যাদের কিনা এবারের আইপিএলে একাদশে জায়গা পাবার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

  • রিঙ্কু  সিং (কলকাতা নাইট রাইডার্স) 

২০২২ আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিলেন রিঙ্কু সিং। পাঞ্জাবের হয়ে আইপিএল ক্যারিয়ার শুরু করলেও ২০১৮ সাল থেকেই আছেন কলকাতা শিবিরে। 

বিগত আইপিএলে ম্যাচ খেলার তেমন সুযোগ না পেলেও ২০২২ সালে বিধ্বংসী ব্যাটিং করে নিজের জাত চিনিয়েছেন। রাজস্থানের বিপক্ষে তাঁর করা ২৩ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংসেই জয়ের দেখা পায় শ্রেয়াস আইয়ারের দল।

গতবারের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার লম্বা ব্যাটিং লাইনআপের দল সাজিয়েছে কলকাতা। ভেংকটেশ আইয়ার, শ্রেয়াস আইয়ার, আন্দ্রে রাসেল, নীতিশ রানাদের পাশাপাশি নতুন করে দলে ভিড়িয়েছে লিটন দাস, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, সাকিব আল হাসানদের মতো তারকাদের। তারকাবহুল এই লাইনআপ সামলে একাদশে রিংকুর জায়গা পাওয়া তাই বেশ কঠিন। 

  • রোমারিও শেফার্ড ( লখনৌ সুপার জায়ান্টস ) 

২০২২ আইপিএলে সাড়ে সাত কোটি রুপির  বিনিময়ে ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার রোমারিও শেফার্ডকে দলে ভিড়িয়েছিল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। কিন্তু নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। ফলে এবারের আইপিএলের আগে তাঁকে ছেড়ে দেয় হায়দ্রাবাদ।

তবে নিলাম থেকে তাঁকে দলে টেনেছে লখনৌ সুপার জায়ান্টস। ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ রুপির বিনিময়ে তাঁকে দলে নিলেও একাদশে দেখার সম্ভাবনা বেশ কম। সুপার জায়ান্টসের চার বিদেশি হিসেবে কুইন্টন ডি কক, মার্কাস স্টয়নিস, নিকোলাস পুরান এবং মার্ক উডের জায়গা পাওয়া একপ্রকার নিশ্চিত। ক্যারিবিয়ান এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে তাই বসতে হচ্ছে ডাগ আউটেই। 

  • ডুয়ান জেনসেন ( মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স)

ভাই মার্কো জেনসেনের মতো ডুয়ান জেনসেনও বাঁহাতি পেসার। তবে আইপিএলে দুজনের জার্সিটা ভিন্ন। ইয়ান আগের মৌসুম থেকেই খেলছেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদে। অন্যদিকে ডুয়ান প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন আইপিএলে। এবারের নিলাম থেকে ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ রুপিতে তাঁকে দলে টেনেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। 

 

আইপিএলে না খেললেও দেশের বাইরে ফ্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা আছে ডুয়ানের। সিপিএলে খেলেছেন সেন্ট কিটস এন্ড নেভিসের হয়ে। এছাড়া একই ফ্যাঞ্চাইজির দল মুম্বাই কেপটাউনের স্কোয়াডেও রয়েছেন এই পেসার। তবে আইপিএলে জোফরা আর্চার, জ্যাসন বেহরেনডর্ফকে ছাপিয়ে একাদশে জায়গা করে নেয়াটা কঠিন তাঁর জন্যে।

  • ফিন অ্যালেন ( রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ) 

সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে বরাবরই দুর্দান্ত খেলে আসছেন নিউজিল্যান্ডের ওপেনার ফিন অ্যালেন। ২৩ বছর বয়সী এই ওপেনার ৮২ টি টোয়েন্টিতে খেলে সংগ্রহ করেছেন ২২৭০ রান। তাঁর স্ট্রাইকরেটটাও চোখ কপালে তোলার মতো, ১৭২.৭৫! 

অথচ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান এখনো আইপিএলে মাঠে নামেননি। ২০২১ সাল থেকেই রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর স্কোয়াডে থাকলেও একাদশে জায়গা পাননি। আগামী মৌসুমেও তাঁর ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

আরসিবির একাদশে তাঁর মূল লড়াইটা দক্ষিণ আফ্রিকান ফাফ ডু প্লেসিসের সাথে। কিন্তু ডু প্লেসিস অধিনায়ক হওয়াতেই মূলত কপাল পুড়েছে অ্যালেনের। সেই কারণেই ডু প্লেসিস সুস্থ থাকলে এবারের আইপিএলেও অ্যালেনের অভিষেক ঘটার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

  • জশ লিটল ( গুজরাট টাইটান্স ) 

২০২২ সালে বছরজুড়ে টি টোয়েন্টিতে ভালো করার সুফল পেয়েছেন আয়ারল্যান্ডের পেসার জশ লিটল। আইপিএল নিলামে তাঁকে নিয়ে রীতিমতো লড়াই শুরু হয়েছিল। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের সাথে বিডিং ওয়ার শেষে তাঁকে সাড়ে চার কোটি রুপিতে দলে ভেড়ায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্স। 

বোলার হিসেবে সামর্থ্য প্রশ্নাতীত হলেও গুজরাটের একাদশে তাঁকে দেখতে পাবার সম্ভাবনা বেশ কম। লকি ফার্গুসনের বিদায়ের পর গুজরাটের টিম ম্যানেজমেন্ট চাইছে এমন কাউকে যিনি নিয়মিত ১৪৫+ কিমি গতিতে বল করতে জানেন।

লিটলের গতি বেশ ভালো হলেও ক্যারিবিয়ান পেসার আলজারি জোসেফ গতিতে ছাপিয়ে গেছেন তাঁকে। এছাড়া দলে দুই বিদেশি ডেভিড মিলার এবং রশিদ খানের জায়গা পাকা। মূলত জোসেফকে জায়গা করে দিতেই পুরো আইপিএল জুড়ে বেঞ্চে বসতে হতে পারে বাঁহাতি এই পেসারের। 

  • সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)

গেল আসরে সাকিব আল হাসান ছিলেন না আইপিএলে। বয়স হয়ে গেছে তাঁর। সেই সাথে কমছে সক্ষমতাও। সেদিক বিবেচনায় তাঁকে দলে নিতে আগ্রহী হয়নি কোন ফ্রাঞ্চাইজি। তবে এবারের আইপিএলের জন্যে তাঁকে ভিত্তিমূল্য দেড় কোটি রুপিতে দলে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। কিন্তু সাকিবের একাদশে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই তলানিতে।

কেননা, সাকিবের পরিবর্তে সুনীল নারাইনকে বরাবরই এগিয়ে রাখে নাইটদের টিম ম্যানেজমেন্ট। আগ্রাসী ব্যাটিং ও কার্য্যকর বোলিং দক্ষতার মানদণ্ডে। টি-টোয়েন্টি বিচারে সেদিক থেকে খানিকটা পিছিয়ে সাকিব। তাই এবার দল পেলেও সাইডবেঞ্চে বসেই সাকিবকে উপভোগ করতে হবে আইপিএল। এছাড়া বাংলাদেশের বেশ কিছু খেলাও রয়েছে আইপিএলের মধ্যভাগে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link