২০২২ সালে টি-টোয়েন্টিতে স্বপ্নের মতো এক বছর কাটিয়েছেন সুরিয়াকুমার যাদব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেরিতে পদার্পন করলেও নিজের শ্রেষ্ঠত্বের জানান দিয়েছেন দ্রুতই। বছরজুড়ে অবিশ্বাস্য ৪৫ গড় এবং ১৮৭ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন হাজারের বেশি। বিগত বছরের ফর্মটা টেনে এনেছেন নতুন বছরেও। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৩১ বলে ২৬ রানের ইনিংসের পর সুরিয়ার ব্যাটিংয়ের ভুল খুঁজে পেয়েছেন দীনেশ কার্তিক।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২১ রানে হেরেছিল ভারত। সিরিজে টিকে থাকতে লক্ষ্ণৌতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জয়ের বিকল্প ছিল না হার্দিক পান্ডিয়ার দলের সামনে। স্পিন সহায়ক পিচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৯৯ রানেই গুটিয়ে যায় কিউই ইনিংস। তবে অল্প পুঁজি নিয়েও খেলা জমিয়ে তোলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দুই স্পিনার ইশ সোধি এবং মাইকেল ব্রেসওয়েল। কিন্তু ম্যাচ শেষ হওয়ার এক বল আগেই দলকে বাউন্ডারি মেরে দলকে জয় এনে দেন সুরিয়াকুমার যাদব।
পুরো ম্যাচেই ছড়ি ঘুরিয়েছেন স্পিনাররা। কেবলমাত্র ফিন অ্যালেন, গ্লেন ফিলিপস, সুরিয়াকুমার যাদব এবং হার্দিক পান্ডিয়াই ছক্কা হাঁকাতে পেরেছেন। তাঁরা প্রত্যকেরই বিগ হিটার হিসেবে সুখ্যাতি আছে ক্রিকেট বিশ্বে। মূলত সুরিয়া এবং পান্ডিয়ার ৩২ বলে ৩১ রানের জুটিতেই জয় পায় স্বাগতিকরা। ক্যারিয়ার জুড়ে ১৮০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা সুরিয়া এদিন ছিলেন নীরব, ৩১ বলে ২৬ রানের শম্ভুকগতির এক ইনিংস খেলেছেন। মূলত দলের জয় নিশ্চিত করতেই সুরিয়ার এমন ইনিংস।
তবে ভারতের অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান দীনেশ কার্তিক অবশ্য ভিন্ন ভাবছেন। তাঁর ধারণা এদিন সুরিয়ার শট সিলেকশনে বেশ সমস্যা ছিল। তিনি বলেন, “তাঁর শট সিলেকশন বেশ আগ্রহ জাগানিয়া ছিল। আমার ধারণা পুরো ইনিংসজুড়েই সে নিজের ধ্বংসাত্নক রূপেই খেলার চেষ্টা করছিল। উদাহরণস্বরূপ তাঁর সেই সুইপের কথাই ধরুন না। লক্ষ্ণৌর মাঠটা বেশ বড় এবং লেগ সাইডের বাউন্ডারিতে চারজন ফিল্ডার ছিলেন। আমার মতে, ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় তাঁর ওই শট খেলা উচিত হয়নি। তাঁর খেলার এই দিকটাতে উন্নতি প্রয়োজন। এই ধরণের লো স্কোরিং রান তাড়া করার ক্ষেত্রে তাঁকে আরো বেশি কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমি যদি এমন শট খেলে আউট হতাম তাহলে নিজেকে অবশ্যই দোষারোপ করতাম। ছয় মারার জন্য সবচেয়ে কঠিন শটটাকেই বেছে নিয়েছিল সে। উইকেট ধীরগতির ছিল, বোলারও গতি কমিয়ে বল করছেন আর আপনি ডিপ স্কয়ার লেগের উপর দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে বল পাঠাতে চাইছেন! এটা হাস্যকর এবং সে কারণেই আমি বলবো এটা তাঁর সাবলীল ব্যাটিং নয়। ট্যাকটিক্যালি তো তাঁর সেরা ইনিংসের একটা তো নয়ই। তবে ভাল ব্যাপার হল সে শেষ পর্যন্ত ক্রিজে ছিল এবং ম্যাচ শেষ করে এসেছে।”
ব্লেয়ার টিকনারের শেষ ওভারে বেশ চাপেই ছিল ভারত। শেষ দুই বল থেকে ভারতের প্রয়োজন ছিল তিন রান। ম্যাচে যেকোনো ফলাফল সম্ভব ছিল, ধারাভাষ্যকাররা তো সুপার ওভারের কথাও ভাবছিলেন। কিন্তু সুরিয়া সেসবের ধার ধারেননি, দারুণ এক চার মেরে খেলা শেষ করেছেন আপন মহিমায়। সিরিজ নির্ধারণী শেষ টি-টোয়েন্টিতে আহমেদাবাদে মুখোমুখি হবে দুই দল।