মেসি-রামোস-নেইমার, উত্তাপটা টের পাচ্ছেন কি?

নতুন বছরে সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না ফরাসি জায়ান্ট পিএসজির। লিওনেল মেসি, নেইমার, কিলিয়ান এমবাপ্পে, সার্জিও রামোসদের নিয়ে গড়া পিএসজি যেন পুরনো রূপে ফিরতেই পারছে না। টানা হারে ২০২৩ সালে সাম্প্রতিক সময়ে নিজেদের সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে প্যারিসের দলটি। 

লিগে রেনেসের কাছে হারকে অনেকেই অঘটন হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু কোপা দে ফ্রান্সের দ্বিতীয় রাউন্ডে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মার্শেইয়ের বিপক্ষে হারটা মেনে নিতে পারছেন না সমর্থকরা। তাছাড়া এক সপ্তাহ বাদেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হবে দলটি।

গত কয়েক মৌসুমে ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বকে পাখির চোখ করেই অর্থের কার্পন্য করেনি দলটি, একের পর এক তারকা ফুটবলারকে দলে টেনেছে তাঁরা। অথচ মহাগুরুত্বপূর্ণ সেই ম্যাচের ঠিক আগেই কিনা ছন্নছাড়া পিএসজি। 

কিলিয়ান এমবাপ্পের ইনজুরি খানিকটা দুর্বল করে দিয়েছে পিএসজির আক্রমণভাগকে। এবারের মৌসুমে ২০ গোল করে দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা এই ফরাসি তারকা। এরমাঝে সাত গোলই তিনি করেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে।

বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা এমবাপ্পে ফাইনালের হারের পর থেকেই খানিকটা নিষ্প্রভ। তাছাড়া ফাইনালে হারের পর সমর্থকদের ব্যঙ্গের শিকার এমবাপ্পেকে খানিকটা খাপছাড়াই লেগেছে বিশ্বকাপের পর থেকে। আর এখন ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরেই আছেন তিনি। 

এমবাপ্পের অনুপস্থিতিতে পিএসজির আক্রমণভাগের মূল দায়িত্ব বর্তেছে লিওনেল মেসির কাঁধেই। আর্জেন্টিনাকে পরম আরাধ্য বিশ্বকাপ জিতিয়েই তিনি যোগ দিয়েছেন ক্লাবে।

কিন্তু, দলের বাকি খেলোয়াড়দের সাথে মেসির সমন্বয়হীনতা প্রকট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্যারিসের দলটির জন্য। সাবেক বার্সা তারকা তুলুসের বিপক্ষে গোল করে দলকে জয় এনে দিলেও মার্শেইয়ের বিপক্ষে আর পেরে উঠে উঠেননি। মার্শেইয়ের ডিফেন্ডাররা কড়া পাহারায় রেখেছিলেন আর্জেন্টাইন এই তারকাকে। 

অন্যদিকে ২০১৭ সালে পিএসজিতে যোগ দেবার পর থেকেই একের পর এক ইনজুরিতে পড়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। নতুন বছরেও অ্যাংকেলের চোটে বাইরে ছিলেন বেশ কিছুদিন। মার্শেইয়ের বিপক্ষে ফিরলেও তেমন কিছু করতে পারেননি, বরং তাঁর দৃষ্টিকটু মিস হাসির খোরাক হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। 

পিএসজির আক্রমণভাগ এবং রক্ষণভাগে ভালো ফুটবলার থাকলেও মিডফিল্ডের রসায়নটা এখনো জমে উঠেনি। ক্রিস্টোফার গালতিয়ের এখনো ঠিক করে উঠতে পারেননি কোন তিনজনকে তিনি খেলাবেন মাঝমাঠে। কখনো ৪-৩-৩, আবার কখনো ৪-৪-২ ফর্মেশনে খেলিয়েছেন দলকে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি, গোটা মৌসুমে কখনোই ভারসাম্যপূর্ণ মনে হয়নি পিএসজির মিডফিল্ড। 

সাম্প্রতিক সময়ে তো মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে রক্ষণভাগের ফুটবলারদের ইনজুরি আর অফফর্ম। দুই ফুলব্যাক আশরাফ হাকিমি এবং নুনো মেন্ডেজ ফর্মে থাকলেও সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলা মার্কিনহোস এবং সার্জিও রামোসরা নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। রামোস মাঝে মধ্যে গোল করলেও মার্শেইয়ের বিপক্ষে পেনাল্টি হজম করে ডুবিয়েছেন দলকে। 

মার্শেইয়ের বিপক্ষে হারের পর তাই সমালোচনার মুখে ফরাসি দলটি। সংবাদমাধ্যমে খেলোয়াড়দের রেটিং নিয়ে রীতিমতো চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়েছে। বিশেষ করে সবার রোষানলে পড়েছেন পেনাল্টি হজম করা সার্জিও রামোস।

এছাড়া দ্বিতীয় গোল হজমের জন্য অনেকেই দোষ দিয়েছেন নেইমারকেও। লা ইকুইপে লিখেছে, ‘মার্শেইয়ের দ্বিতীয় গোলের সময় কি করে একজন ফুটবলার এত সহজে পড়ে যায়। তাঁর মানের ফুটবলারের কাছে থেকে এমনটা অপ্রত্যাশিত।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link