ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ষষ্ঠ আসর গত মার্চে করোনা ভাইরাসের উপদ্রব বেড়ে যাওয়াতে স্থগিত করা হয়। এখন নতুন করে পিএসএল শুরু চিন্তা করা হলেও ফ্রাঞ্চাজিগুলো বলছে, তাঁরা এই অবস্থায় পাকিস্তানে খেলার ব্যাপারে আগ্রহী নয়। তাঁরা চান, খেলা আরব আমিরাতে হোক।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) নতুন করে আসরের বাকি ম্যাচগুলো খেলানোর তারিখ নির্ধারণ করে। এমনকি আসরের বাকি ম্যাচগুলোর জন্য সব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের না পাওয়ায় নতুন করে `রিপ্লেসমেন্ট ড্রাফট’ করে পিএসএল এর আয়োজন কমিটি।
এর আগে ফেব্রুয়ারি ১৪ থেকে মার্চ এর ৩ তারিখ পর্যন্ত এই আসরের ১৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানের করাচিতে আসরের সবগুলো ম্যাচ হয়েছিল। এবারও করাচিতেই টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বের ১৬ ম্যাচ, কোয়ালিফায়ার ও ফাইনাল ম্যাচ হওয়ার কথা। তবে গত কিছুদিন ধরে আগের থেকে পাকিস্তানে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে, গত বছরের শুরুর সময় মতো নতুন করে করোনার ঢেউ এসেছে সেখানে। নিয়মিত অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে করোনা আক্রান্ত হয়ে। তাই ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলো পিসিবিকে অনুরোধ করেছে এবারের আসরের বাকি ম্যাচগুলো করাচি থেকে সরিয়ে আরব আমিরাতে নিতে।
নতুন তারিখ অনুযায়ী সবাই ২৩মে এর মধ্যে পাকিস্তানে এসে বাধ্যতামূলক ৭ দিনের কোয়ারান্টাইন পালন করবে। তারপর জুন ২ থেকে জুন ১৪ পর্যন্ত আসরের গ্রুপপর্বের ১৬ ম্যাচ গুলো হবে। কোয়ালিফাইয়ারের ২টি ম্যাচ ১৬ জুন, ১৮ জুন এবং ফাইনাল ২০ জুন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে গত কয়েক দিনে পাকিস্তানে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছে। কয়েক হাজার প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন এবং প্রায় ৪০০ জন করে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে পাকিস্তানে। কঠোর জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকেও ভারতে আইপিএল এর ৮টি দলের ৪টি দলের কেউ না কেউ করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আপিএল স্থগিত করেছে।
গত বছর এই আপিএল ই দর্শকশূন্য মাঠে আরব আমিরাতে সাফল্যের সাথে হয়েছিলো। আবার বর্তমানে ভারত তাদের দেশের করোনার মারাত্মক ভয়াবহের কথা বিবেচনা করে এ বছর টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আরব আমিরাতেই আয়োজন করবে। কিন্তু পিএসএল যে সময়ে শিডিউল অনুযায়ী আয়োজন হওয়ার কথা সেই জুন মাসে আরব আমিরাতে তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে। এই সময় সাধারণত কোন ক্রিকেটে খেলার আয়োজন এখানে করা হয়না।
গরমে খেলোয়াড়দের ভোগান্তি, তাদের খাপ খাওয়ানো, নতুন তারিখের আয়োজন, নির্দিষ্ট ভেন্যু নির্ধারণ সব মিলিয়েই বিবেচনা করে হয়তো পিসিবি তাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন। শুরুতে আরব আমিরাতে হলেও গত দুই মৌসুম পিএসএল পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি তাদের দেশে ক্রিকেট ফেরানোর ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ বিশ্বের অনেক নামি দামি ক্রিকেটার ও কোচ এখানে খেলতে আসেন। তাই পিসিবি তাদের সুরক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়ার পরের ও এবারের আসরের শুরুতে কঠিন জৈব সুরক্ষা বলয়ে তারা ব্যার্থ হন।
এ অবস্থায় এই নতুন করে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আসরটির আয়োজন নিশ্চিত করার জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো পিসিবিকে উক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে অনুরোধ করেন। এছাড়াও পাকিস্তানের জাতীয় সুরক্ষার কথা চিন্তা করে বর্তমানে তাদের সরকার নির্দেশিত কঠোর লকডাউন, সীমিত সংখ্যক ফ্লাইট এসব বিবেচনা করেই হয়তো পিসিবি কোন নতুন সিদ্ধান্তে আসবে।