কপিল দেব ব্যাটিংয়ে আছেন। ইংল্যান্ডের ৬৫৩-এর জবাবে ভারতের স্কোর ৪৩০। নবম উইকেটের পতন হলে ক্রিজে এলেন নরেন্দ্র হিরওয়ানি। কপিল দ্রুত আম্পায়ারকে জিজ্ঞেস করে নিলেন, এই ওভারে বল বাকি কয়টি? আম্পায়ারের জবাবে কপিল আশ্বস্ত হলেন। পরের চার বলে কপিলের চার ছয়ে মুহূর্তেই ফলোঅন এড়ালো ভারত। আর পরের ওভারেই হিরওয়ানি আউট হয়ে কপিলের দূরদর্শীতা ও নির্ভরতার প্রমাণ রাখলেন!
অসম্ভবকে সম্ভব শুধু অনন্ত-ই করেন তা নয়। পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের ইএসপিএন ক্রিকইনফো কমেন্ট্রিতে কপিলের এই চোখ ছানাবড়া ইতিহাস টানার কারণ, ফলোয়ন এড়াতে পাকিস্তানের তখন দরকার ছয় রান। খানিক বাদেই ফাহিম ওয়াগনারকে সীমানা ছাড়া করে উতরে গেলেন তা। কী অসাধারণ বিনির্মাণ! তাঁর অন্তর্ভুক্তির যথার্থতা প্রমাণের কী উপযুক্ত সময়ই না বেছে নিলেন!
স্ট্যাম্প মাইক থেকে জানা গেল, তাঁর স্থিতধী মস্তিষ্ক ও পরিণতবোধ। তাঁকে বলা হলো, প্রথম সেঞ্চুরি নিয়ে কেমন উচ্ছ্বসিত বোধ করছো? তিনি জবাবে বলেন, আপাতত আমার সর্বোচ্চ স্কোর ৮৩ পেরোনো নিয়ে ভাবছি! তখন তিনি ঊনআশিতে ব্যাট করছিলেন। প্রথম সেঞ্চুরি না পেলেও দলের আত্মবিশ্বাসে জ্বালানী তো পুরেছেন। ৮০/৬ এর ধ্বংসস্তুপ হতে দলের জন্য অট্টালিকা না হোক, মাথা গোঁজার ঠাঁই তো দিলেন।
আমাদের শৈশবে আব্দুল রাজ্জাক, জ্যাক ক্যালিস, ল্যান্স ক্লুজনার, ক্রিস কেয়ার্নসদের মতো পেস-অলরাউন্ডাররা মাঠ মাতাতেন। তারও আগে ইমরান, কপিল, বোথাম, হ্যাডলি ছিলেন। মাঝে বিশাল এক গ্যাপ। ফাহিম, হার্দিক, শানাকা যদি স্টোকস-হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার আসরে জায়গা খোঁজেন, আগামী দিনের ক্রিকেট তাহলে আরো আনন্দদায়ক হবে নিশ্চয়!
একদিকে রাহানে, অন্যদিকে রিজওয়ান। কী দারুণ ক্যাপ্টেনস নক। আবার রান আউটে দুটোরই দুঃখজনক পরিণতি। রিজওয়ান সেই ইংল্যান্ড সফর থেকে স্ট্যাম্পের সামনে-পেছনে দারুণ করছেন। ইনিংস ও জুটিটা বড় করা গেলে পাকিস্তান হয়তো আরো খানিকটা এগিয়ে যেতে পারত।
রাহানে ও ভারতেরও একই দশা। হয়তো জাদেজার ইনিংস আরো বড় হতো, হয়তো ভারতের স্কোরবোর্ডে আরো কিছু রান জমা পড়তো। হয়তো হতো না, তারপরও সম্ভাবনার এমন দুঃখজনক পরিণতি মোটেই উপভোগ্য না।
দুষ্টলোকেরা বলেন, অস্ট্রেলিয়া টেনেটুনে ৩৬-এর কিছু বেশি টার্গেট দিতে পারলেই হবে। বাকিটা নাকি হিস্ট্রি রিপিটস ইটসেলফ। আর কিছু দুষ্টলোক জবাবে বলেন, ন্যাড়া দুইবার বেলতলায় যায় না। ধমকে বা পিটিয়ে নিতে হয়। ধমকানোর বা পিট্টি দেয়ার আদৌ শক্তি সাহস আছে কিনা!
দক্ষিন আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ জমজমাট। ওভারপ্রতি চার রান তোলার জবাবে ওভারপ্রতি সাড়ে চার তুলেছে স্বাগতিকরা। চালকের আসনে দক্ষিণ আফ্রিকা মনে হলেও, আসলে হুড়মুড়িয়ে গুটিয়ে যেতে পারে যেকোনো সময়। ইঞ্জুরি-আঘাত শ্রীলঙ্কার জন্য ম্যাচটা কঠিন হয়ে গেছে। তবে দলটায় সত্যিকার ম্যাচ উইনার আছে। যারা একা হাতে গড়ে দেবে ম্যাচ-ভাগ্য। দেখা যাক কী হয়!