একটি প্রাইভেট টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট, অনলাইনে সম্প্রচার করা হচ্ছে খেলাগুলি শ্রীলঙ্কায় হচ্ছে বলে। আসলে খেলা হচ্ছিল পাঞ্জাবের এক গ্রামে।
আয়োজক রাভিন্দার দান্দিওয়ালকে গ্রেপ্তার করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। এই ধরনের ফেইক টুর্নামেন্ট সে নিয়মিতই আয়োজন করে আসছিল। এই টুর্নামেন্টকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য এমন সব ক্রিকেটারদের বেছে নেওয়া হয়েছে, যারা দেখতে শ্রীলঙ্কানদের মতো। পুলিশ এই লোককে অভিহিত করেছে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ‘কিংপিন’ হিসেবে।
টেনিসের জগতেও ম্যাচ ফিক্সিং সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা হিসেবে এই রাভিন্দারকে খুঁজছিল অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের পুলিশ।
যাহোক, এটা ছোট্ট একটা নমুনা মাত্র। বড় বড় জায়গায় বড় বড় আরও অনেক কিছু হচ্ছে। এসব থামবে না। সম্ভব নয়। বিশেষ করে, স্পট ফিক্সিং থামানো সম্ভবই না, যদি না প্রচলিত ধারা বদলানো হয়।
বহুবার বলা কথাটি আবারও বলছি, বলেই যাব বারবার, ক্রিকেটে যে কোনো পর্যায়ে, যে কোনো ধরনের ফিক্সিংয়ে সামান্যতম জড়িত থাকার প্রমাণ মিললেও ন্যূনতম শাস্তি হওয়া উচিত আজীবন নিষেধাজ্ঞা। সেটা ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ, প্রশাসক বা ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্যই। সামান্যতম ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললেও সবচেয়ে কম শাস্তি হওয়া উচিত আজীবন নিষেধাজ্ঞা – সেটা শুধু ক্রিকেট খেলা থেকে নয় নয়, সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম বা সম্পৃক্ততা থেকে নিষেধাজ্ঞা। তার পর অপরাধের মাত্রা বুঝে নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে জরিমানা কিংবা আরও অনেক শাস্তি যোগ করতে হবে।
এবং অতি অবশ্যই, সব ক্রিকেট খেলুড়ে দেশে ফিক্সিংকে ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ হিসেবে আইন করতে হবে। এই দুটি পদক্ষেপ ছাড়া কোনোভাবেই ফিক্সিং বন্ধ করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে এখন স্পট ফিক্সিং যে মাত্রায় ও যেসব ব্যাপার নিয়ে হয়, থামানো সম্ভব নয় কঠোর কোনো আইন ছাড়া।
এখন যেটা হচ্ছে, কেউ ফিক্সিং করছে, নামমাত্র শাস্তি হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবার প্রবল দাপটে ক্রিকেটে ফিরছে। লোকের ভালোবাসা-আবেগ মিলে একাকার হয়ে, নায়ক হয়ে ফিরছে একেকজন। তো, অন্য যারা সৎ ক্রিকেটার, কিংবা যারা তরুণ, উঠতি ক্রিকেটার, তাদের কাছে বার্তাটা কি যাচ্ছে?
ফিক্সিং-টিক্সিং করে বিপুল পয়সা কামাও। তার পর ধরা-টরা খেলে ওই তো, ২-৪-৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা। সময়টা কোনো রকমে কেটেই যায়। ২০-২২ বছর বয়সী কোনো ক্রিকেটার চুটিয়ে ফিক্সিং করবে, এক জীবনের কামাই করে নেবে, তারপর ধরা খেয়ে, কয়েক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে, আরও কয়েকগুণ জনপ্রিয় হয়ে ফিরবে। ব্যাস, লাইফ সেট!
__________________
বাংলাদেশে আমরা তো আরও কয়েক কাঠি সরেস। আমাদের দেশের একজন প্রমাণিত ফিক্সার, কদিন আগে একটা সাক্ষাৎকারে সে অকপটে স্বীকার করছে, ফিক্সিং করার আগের চেয়ে ফিক্সিং করার পরে তার জনপ্রিয়তা বেশি হয়েছে; এবং সে একটুও ভুল বলে নাই। আসলেই অনেক বেড়েছে।
– ফেসবুক থেকে