পুরো রিয়াল মাদ্রিদ তাকিয়ে আছে ঘড়ির কাঁটার দিকে, কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে লুকা মদ্রিচ কর্নার কিক নেয়ার জন্য প্রস্তুত। রেফারির বাঁশি বেজে উঠতেই বল ভাসলো হাওয়ায়, অতঃপর একজন সেন্টার ব্যাকের মাথা ছুঁয়ে বল জড়ালো জালে – এমন দৃশ্য শুনলেই মনে পড়ে লা ডেসিমার কথা, এবার প্রায় একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটলো সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে।
ভিএফবি স্টুটগার্টের সাঁড়াশি আক্রমণে রিয়াল মাদ্রিদের তখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা; তার উপর জয়ের প্রত্যাশা তখন এভারেস্ট সমান চাপ হয়ে হাজির হয়েছে। সে সময় ত্রাণকর্তা হয়ে এসেছেন মদ্রিচ আর অ্যান্টনি রুডিগার – ক্রোয়াট মিডফিল্ডারের কর্নার কিক থেকে দলকে জয়সূচক গোল এনে দিয়েছিলেন জার্মান ডিফেন্ডার।
ম্যাচের বাকি গল্পটা অবশ্য অভিষেকময়; এই ম্যাচ দিয়েই রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেক হয়েছে কিলিয়ান এমবাপ্পের। আর অভিষেকেই গোল করে দিনটা রাঙিয়ে রাখলেন তিনি। সেই সাথে ছুঁয়ে ফেলেছেন লস ব্ল্যাঙ্কোস কিংবদন্তি আলফ্রেড ডি স্টেফানোকে; দুজনেরই এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোলসংখ্যা ৪৯টি। তবে ফরাসি তারকা এই সংখ্যাটা আরও অনেক দূর নিয়ে যাবেন বটে।
অন্যদিকে, এন্ড্রিকের কথা বলতে বাধ্য হবেন যে কেউ, জুড বেলিংহ্যামের পরিবর্তে যখন মাঠে আসেন তিনি তখনও দল আকাঙ্ক্ষিত গোলটা পায়নি ৷ কয়েক মিনিট পরেই পেয়েছো অবশ্য, তবে জয়সূচক গোলের চেয়েও তাঁর গোল নিয়ে মাতামাতি বেশি – অবাক হওয়ার কোন কারণ নেই। নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে এক দৌঁড়ে প্রতিপক্ষের ফাইনাল থার্ডে চলে আসেন এই ব্রাজিলিয়ান; এরপর বুম! বাম পায়ের অবিশ্বাস্য গতির শট – দলের তৃতীয় আর নিজের প্রথম গোল পেয়ে যান তিনি।
মাঝে অবশ্য অল হোয়াইটদের ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন দেনিজ উনদাভ। ইউরোপীয় পর্যায়ে প্রথমবার খেলতে নেমেই দারুণ একটা মুহুর্তের জন্য হয়, তবে শেষ পর্যন্ত রুডিগার এবং এন্ড্রিকের গোলে সহজ জয় পায় স্বাগতিকরা।
জিতলেও অবশ্য কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে তাঁদের; স্কোরবোর্ডে ফুটে না উঠলেও নব্বই মিনিটে পুরোটা সময় সমানে সমানে লড়াই করেছিল বুন্দেসলিগার দল। সমানে সমানেও নয়, গোলের সুবর্ণ সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে এগিয়েই ছিল তাঁরা, তবে থিবো কোর্তায়া থাকায় রক্ষা। তাই তো ভিনিসিয়াস, এমবাপ্পেদের সুযোগ কাজে লাগানোর পাশাপাশি রক্ষণে আরও সতর্ক হতে হবে এখন থেকে।