৮৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। সাথে সাথেই ক্রিকেট ক্যারিয়ারের পালকে যুক্ত হলো আরেকটি রেকর্ড। বাবর আজমের পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস মানেই যেন নিত্য নতুন রেকর্ডের শুরু। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সেঞ্চুরি করে পাকিস্তানের প্রথম ব্যাটার হিসেবে পেয়েছিলেন দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির দেখা।
এবার সিরিজের ষষ্ঠ ম্যাচে ৮৭ রানের ইনিংস খেলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে তিন হাজার রান পূর্ণ করলেন বাবর আজম। নিজের ৮১ তম ইনিংসে এসে তিনি এ মাইলফলক স্পর্শ করলেন। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৩০০০ রান করা ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম।
বাবর আজম ছাড়াও এর আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিন হাজার রান পূরণ করেছেন ভারতের রোহিত শর্মা, বিরাট কোহল, নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল ও আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিং। ৩ হাজার রান স্পর্শ করতে বিরাট কোহলির লেগেছিল বাবর আজমের সমান ৮১ ইনিংস।
সে হিসেবে কোহলিও একই রেকর্ডের মালিক। বরং বাবর আজমই ৮১ তম ইনিংসে ৩০০০ রান পূর্ণ করে কোহলির পাশে বসলেন। গাপটিল ৩০০০ রান পূরণ করেছিলেন ১০১ তম ইনিংসে। রোহিত করেছিলেন ১০৮ ইনিংস আর পল স্টার্লিংয়ের লেগেছিল ১১৩ ইনিংস।
এর আগে দ্রুততম ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২ হাজার ও ২ হাজার ৫০০ রানের রেকর্ডও ছিল বাবরের। ২ হাজার রান স্পর্শ করতে তাঁর লেগেছিল ৫২ ইনিংস। অবশ্য বাবরের সঙ্গে যৌথভাবে সে রেকর্ড তাঁরই ওপেনিং সঙ্গী মোহাম্মদ রিজওয়ানেরও। এখানে কোহলির লেগেছিল ৫৬ ইনিংস। আর ২৫০০ রান পূর্ণ করতে বাবরের লেগেছিল ৬২ ইনিংস।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুততম হিসেবে ১ হাজার রানের মাইলফলকের রেকর্ডটি যৌথভাবে ইংল্যান্ডের ডেভিড ম্যালান ও চেক প্রজাতন্ত্রের সাবাউন ডাজিভির। দুজনেরই লেগেছিল ২৪ ইনিংস।
তবে রেকর্ড গড়ার দিনে বাবর আজমকে অবশ্য পুড়তে হয়েছে হারের যন্ত্রণায়। ফিল সল্টের তাণ্ডবে পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ১৭০ রানের লক্ষ্য ইংলিশরা টপকে গিয়েছে মাত্র ১৪.৩ ওভারেই। ৮ উইকেটে জিতে সিরিজেও ফিরিয়েছে ৩-৩ সমতা।
লাহোরে সিরিজের ষষ্ঠ ম্যাচের আগে বাবর ৮৫টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ৮০ ইনিংসে রান করেছিলেন ২৯৪৮। ৩০০০ রান হতে তার আর প্রয়োজন ছিল ৫২ রানের। গতকাল ফিফটি করেই এই মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন তিনি।
তবে অন্য প্রান্তে ঠিকঠাক সঙ্গটা পাননি বাবর। ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ৭ চার ও ৩ ছয়ে নিজে সাজিয়েছেন ৫৯ বলে ৮৭ রানের ইনিংস। দলকে এনে দিয়েছেন ১৬৯ রানের পুঁজি।
অবশ্য বাবরের এ ইনিংস ম্লান হয়ে যায় ফিল সল্টের কাছে। শুরু থেকেই ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ইংলিশ ব্যাটাররা পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারেই তুলে ফেলে ৮২ রান। এরপর সপ্তম ওভারেই দলীয় রান তিন সংখ্যায় নিয়ে যান ফিল সল্ট।
কার্যত সেখানেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের। ৩৩ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটে ম্যাচটি জিতে নেয় ইংল্যান্ড। ফিল সল্ট ৪১ বলে খেলেন অপরাজিত ৮৮ রানের একটি ইনিংস। ইংল্যান্ড এ ম্যাচ জেতায় ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজ রয়েছে এখন ৩-৩ এ সমতায়। তাই সিরিজের শেষ ম্যাচটি এই মুহূর্তে রূপ নিয়েছে অঘোষিত এক ফাইনালে।
এক সিরিজেই একাধিক রেকর্ডের জন্ম দেওয়া বাবর আজমের জন্য পরবর্তী কোন রেকর্ডটি অপেক্ষা করছে? দ্রুততম সময়ে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১০ হাজার রানের রেকর্ড গড়েছিলেন বাবর আজম। সেই বাবরের এখন ১১ হাজার রান পূরণ করতে প্রয়োজন আরও ১২১ টি রান। পরের ম্যাচে সেটি না হলেও বাবরের ১১ হাজার রানের মাইলফলক দেখার অপেক্ষায় খুব একটা কালক্ষেপণ নিশ্চয়ই হবে না সমর্থকদের। কারণ ব্যাটারের নামটা যে, বাবর আজম, দ্য রেকর্ড ব্রেকার।