পেসারদের জন্য এক আদর্শ পরিবেশ। মৃদু বাতাস বইছে, উইকেটের উপর আছে ঘাস। আকাশটা পরিষ্কার তবে রোদের তেমন তীব্রতা নেই। এমন পরিবেশে রিপন মণ্ডল নিজেকে উজাড় করে দিলেন। পরিবেশের পূর্ণ ফায়দা তুলে তিনি রেখেছেন নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ।
অস্ট্রেলিয়ার বুকে টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার চার দলের সাথে বাংলাদেশের হাই পারফরমেন্স ইউনিট ও পাকিস্তান শাহীনসও অংশ নিয়েছে। সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচে মেলবর্ন রেনিগেডসের বিপক্ষে ৭৭ রানের বিশাল জয় পেয়েছে বাংলাদেশ এইচপি।
এই জয়ের অন্যতম সেনানী ছিলেন ডান-হাতি পেসার রিপন। তার আঁটসাঁট লাইন-লেন্থ মেলবর্নের ব্যাটারদের কোনরকম সুযোগ সৃষ্টি করতে দেয়নি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ম্যাচে তিনি তিন ওভার হাত ঘুরিয়েছেন। খরচা করেছেন মাত্র ১২ রান। ইকোনমি রেট মাত্র ৪।
বল হাতে কেবল কৃপণ ছিলেন তিনি, সেটা বলবার উপায় নেই। আগ্রাসনের চূড়ান্ত রূপ হয়ে ধরা দিয়েছেন তিনি ইনিংসের ১৫ তম ওভারে। ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে তিনি তুলে নেন তিন-তিনটি উইকেট। দলের হাতে জয় তিনি তুলে দেন সেই ওভারেই।
১৫ তম ওভারের প্রথম বলেই জেভিয়ার ক্রোনের উইকেট তুলে নেন। এক বল বাদে দারুণ খেলতে থাকা মার্কাস হ্যারিসকে ফেরান রিপন। ছত্রখান করে দেন উইকেট। ৯২ রানে প্রতিপক্ষের সাত উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ এইচপি তখন স্রেফ জয়ের ক্ষণ গুণতে শুরু করেছিল। জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন রিপন নিজেই।
সেই ওভারের শেষ বলে আরও একটি উইকেট তুলে নেন রিপন। এদফা উইকেট প্রাপ্তিতে তাকে সহয়তা করেন রাকিবুল হাসান। ক্যাচ লুফে নেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী এই ক্রিকেটার। ঠিক তার পরের ওভারেই রাকিবুল ম্যাচের সমাপ্তি ঘটান পরপর দুই বলে দুইটি উইকেট নিয়ে।
তবে এদিন রিপন আলাদা নজর কেড়েছেন বল হাতে। বাংলাদেশের পেসারদের উত্থান চলমান। এমন সময়ে রিপনদের ভাবা হচ্ছে পাইপ লাইনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে। দেশের মাটিতে ততটা পেস সহায়ক উইকেট তারা পান না। কিন্তু পেস বান্ধব উইকেটের যথাযথ ব্যবহারটা কিভাবে করতে হয় সেটার একটা আংশিক চিত্র আঁকলেন রিপন।
উইকেট প্রাপ্তি, কিংবা কৃপণ বোলিং- এসব কিছু ছাপিয়ে রিপন বল হাতে ভীষণ চাপে রেখেছিলেন প্রতিপক্ষ বোলারদের। তার ছোড়া ১৮টি বলের মধ্যে ১২টি বলেই কোন প্রকার রান নিতে পারেনি মেলবর্ন রেনেগাডসের ব্যাটাররা। প্রস্তুতির মঞ্চে এমন বোলিং পারফরমেন্স নিশ্চয়ই আশা জাগানিয়া। রিপনরা তাই এমন সব সিরিজের প্রত্যাশা আরেকটু বেশি করতেই পারেন।