উঠতি এক শাহবাজ

মেওয়াট। হরিয়ানার ছোট্ট একটা শহর। এমন একটা জায়গায় থেকে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখা সহজ নয়। তেমনই এক স্বপ্ন দেখেছিলেন এক কিশোর। সেই স্বপ্নটা তাঁর একার নয়, গোটা বাংলারও বটে। আর সেই স্বপ্নের পূর্ণতা আসে ভারতের ‘এ’ দল হয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলার মধ্য দিয়ে।

মেওয়াট। হরিয়ানার ছোট্ট একটা শহর। এমন একটা জায়গায় থেকে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখা সহজ নয়। তেমনই এক স্বপ্ন দেখেছিলেন এক কিশোর। সেই স্বপ্নটা তাঁর একার নয়, গোটা বাংলারও বটে। আর সেই স্বপ্নের পূর্ণতা আসে ভারতের ‘এ’ দল হয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলার মধ্য দিয়ে।

পশ্চিম বাংলা বেশ অনেকবারই ভারতকে আন্তর্জাতিক মানের কিছু ক্রিকেটার উপহার দিয়েছে। সেই ভারতের জন্মলগ্নেই বাংলা থেকে এসেছিলেন কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান পঙ্কজ রায়। তাছাড়া এসেছেন ভারতের অন্যতম সেরা অধিনায়ক ‘প্রিন্স অব ক্যালকাটা’ খ্যাত সৌরভ গাঙ্গুলি। মোহম্মদ শামির মত পেসাররাও এসেছেন এই বাংলা থেকেই। তবে এখান থেকে কখনো অলরাউন্ডার বা স্পিনার সর্বোচ্চ পর্যায়ে সাফল্য পাননি।

বাংলার এই আক্ষেপ পূরণ করতে পারেন বঙ্গের নতুন তারকা শাহবাজ আহমেদ, দ্য নেক্সট বিগ থিঙ।

কয়েকদিন আগের কথা। আইপিএলে নিজের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে তাঁর স্পিন বোলিং দিয়ে ম্যাচ জেতালেন এই অলরাউন্ডার।প্রতিপক্ষ সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের অসাধারণ ইনিংসে ভর করে ১৫০ রানের লক্ষ্য যেনো মামুলিই লাগছিল।

শেষ চার ওভারে ৮ উইকেট হাতে থাকা হায়দ্রাবাদের জয়ের জন্য দরকার মাত্র ৩৫ রান। তখনই অধিনায়ক কোহলি বল তুলে দেন এই স্পিনারের হাতে। প্রথম বলেই তুলেন নেন জনি বেয়ারস্টোর উইকেট। তারপরের বলে আবার আউট করেন ৩৮ রান করা মানিশ পান্ডেকে। ওই ওভারের শেষ বলে আব্দুল সামাদকে ফিরিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন শাহবাজ। ওই ম্যাচে ২ ওভার বল করে মাত্র ৭ রান দিয়েই তুলে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। এর আগে ব্যাট হাতেও খেলেছিলেন ১০ বলে ১৪ রানের ইনিংস।

২০১৮-১৯ সালে বাংলার হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন এই অলরাউন্ডার। সেবছর সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে টি-টোয়েন্টি অভিষেক ঘটে তাঁর। ১৬ টি টি-টোয়েন্টিতে ৩১.৬০ গড়ে করেন ১৫৮ রান। বল হাতেও নিয়েছেন ১৫ উইকেট। ২০১৯ সালে ভারতের এ দলের হয়ে সুযোগ পান এই ক্রিকেটার। তারপরের বছর আইপিএল নিলামে বেঙ্গালুরুতে বিক্রি হন তিনি।

এখন অবধি আইপিএলে মাত্র চারটি ম্যাচ খেললেও ইতোমধ্যেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন এই অলরাউন্ডার। শেষ ম্যাচে হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে অসাধারণ বোলিং পারফরম্যান্স তাঁকে আলোচনায় নিয়ে এসেছে। ব্যাট হাতে তেমন সুযোগ না পেলেও বল হাতে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। আইপিএলে তাঁর ইকোনমি রেট মাত্র ৭.২২।

ফলে বাংলার ক্রিকেট এখন নতুন করে আশায় বুক বানছে এই অলরাউন্ডারকে নিয়ে। এই মুহুর্তে ভারতীয় দলে তরুণদের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা হলেও অলরাউন্ড পারফর্ম দিয়ে শাহবাজও জায়গা করে নিতে পারেন সেই দলে। সেক্ষেত্রে এবারের আইপিএল তাঁর জন্য বেশ বড় সুযোগ।

ইতোমধ্যেই দলকে ম্যাচ জিতিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। তাই তাঁর সামনে ভাল সুযোগ এই আসরের বাকি ম্যাচ গুলোতে নিজের সেরাটা দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করা। হয়তো তিনিই হবেন বাংলার ক্রিকেটের নতুন আন্তর্জাতিক তারকা। আপাতত তাহলে সেদিনের অপেক্ষা করা যাক!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...