একেবারে শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপ দলে জায়গা মিললো তার। তাকে দলে নেওয়া কিংবা না নেওয়া নিয়ে হয়েছে বিস্তর সমালোচনা। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নিজের অভিজ্ঞতার প্রমাণই রাখলেন। দলের প্রয়োজনে নিজেকে আরও একবার উজাড় করে দিলেন ‘সাইলেন্ট কিলার’।
ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচ। দলের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ইনজুরির কারণে ডাগআউটে। এমন এক ম্যাচে স্বাভাবিকভাবেই রিয়াদের উপর বাড়তি দায়িত্ব ছিল। সেই দায়িত্ব ষোল আনা পূর্ণ করেছেন মাহমুদউল্লাহ।
এদিন বাংলাদেশের ওপেনারদের দুর্দশা যেন দূর হয়। প্রথম ধীরস্থির শুরু করলেও ক্রমশ রানের চাকা সচল করেন দুই ওপেনার। তানজিদ হাসান তামিম আগ্রাসী ব্যাটিং করে পেয়ে যান নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। সেই সুবাদে ওপেনিং জুটি থেকে আসে ৯৩ রান। লিটন দাসও এদিন হাফ সেঞ্চুরি করেছেন, তবে দীর্ঘায়িত হয়নি তার ইনিংস।
ওপেনারদের দারুণ শুরুর দিনটা ঠিকঠাক ব্যবহারই করতে পারেনি বাংলাদেশের মিডল অর্ডার। রানের চাকা স্লথ হয়েছে। নিয়ম করে উইকেট গিয়েছে। একটা পর্যায়ে ১৭৯ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে লড়াকু একটা সংগ্রহও বেশ দূরের কোন লক্ষ্য ঠেকছিল। তবে তখনও উইকেটে ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
আশা তবুও জ্বলছিল নিভু নিভু করে। রিয়াদরাই আশার আলোটা জ্বালিয়ে রাখছিলেন তীব্র হাওয়ার মাঝেই। শেষ অবধি বাংলাদেশ স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারে ২৫৬ রান। যার কৃতীত্ব রিয়াদের প্রাপ্য। তার স্ট্রাইকরেট নিয়ে হয়েছে নানামুখী আলোচনা। সমালোচনাই হয়েছে বেশি। সেই রিয়াদই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলে গেলেন প্রায় ১২৮ স্ট্রাইকরেটের এক ইনিংস।
৪৬ রান করেছেন রিয়াদ। বল খরচ করেছেন ৩৬টি। শেষের দিকে রিয়াদের এই মানানসই ধরণের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচেই আসলে ২৫০ পার করেছে বাংলাদেশের সংগ্রহ। রিয়াদ তার এই কার্য্যকর ইনিংসে সমান তিনটি করে চার ও ছক্কা ছিল।
তিনি যেন মানই বাঁচালেন শেষ পর্যন্ত। অথচ এই রিয়াদকে একটা সময় বিশ্বকাপ দলে বিবেচনা করা হয়নি তাকে। এমনকি বিশ্বকাপের প্রাথমিক স্কোয়াডেও জায়গা ছিল না তার। তবে একেবারে শেষ মুহূর্তে তাকে ১৫ তম খেলোয়াড় হিসেবেই বিশ্বকাপের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
রিয়াদ যেন সুদে-আসলে বুঝিয়ে দিচ্ছেন অভিজ্ঞতার দামটা ঠিক কতটুকু। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪১ রানে অপরাজিত থেকেছিলেন রিয়াদ। বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার প্রায় প্রতিদিনই মুখ থুবড়ে পড়ছে। তবে রিয়াদ দুই দফা দলের পায়ের তলায় মাটির সঞ্চার করেছেন। তবুও আগের ম্যাচ বাংলাদেশ হেরেছে বেশ বড় ব্যবধানেই।
ভারতের বিপক্ষে জয়-পরাজয় ছাপিয়ে রিয়াদের এই ইনিংসটি আসলে তার সামর্থ্যের প্রমাণ করে। জাসপ্রিত বুমরাহ অসাধারণ এক ইয়োর্কার বলে আউট করেছেন মাহমুদউল্লাহকে। নতুবা রান আরও খানিকটা বাড়তেই পারত বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই ডানহাতি ব্যাটারের।