বিশ্বকাপের পর বিপিএল দিয়েই মাঠে ফিরেছিলেন। তবে সেই ফেরাটা আর সুখকর হয়নি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্য। বিশ্বকাপের সেরা পারফর্মার ছিলেন। কিন্তু মাস দুয়েক ফরম্যাট বদলে যাওয়া বদলে যায় তাঁর চেনা ছন্দও। তবে ব্যাট হাতে আগ্রাসী রূপে ফেরার অপেক্ষাটা আর দীর্ঘায়িত করলেন না। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে খেললেন ২৪ বলে ৫১ রানের ঝড়ো এক ইনিংস।
ফরচুন বরিশালের হয়ে এ দিনে ইনিংসের ১৪তম ওভারে ক্রিজে এসেছিলেন রিয়াদ। স্কোরবোর্ডে তখন ১১১ রান। ঠিক সেখান থেকেই পরের ৩৬ বলে ৭৫ রান তোলে বরিশাল। সিলেট স্ট্রাইকার্স বোলারদের উপর যে ধ্বংসযজ্ঞে নেতৃত্বে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি যে ফুরিয়ে যাননি, তারই একটি প্রমাণ রেখে দিলেন এই ইনিংস দিয়েই।
শুরুটা হয়েছিল বেনি হাওয়েলের বলে টানা দুই ডট দিয়ে। শঙ্কা ছিল। যে পিঞ্চ হিটিং তখন দলের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, রিয়াদ সেই চাওয়াটা মেটাতে পারবেন তো! আগের দুই ম্যাচেই এক অঙ্কে ফিরেছেন। টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থতা যখন উঁকি দিচ্ছে আড়ালে, ঠিক তখনই জ্বলে উঠলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
বেনি হাওয়েলের পরের ওভারেই সামিত প্যাটেলের টানা দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করলেন সেই ব্যাটিং তাণ্ডব। এরপর কোনো আক্রমণই আর রিয়াদকে দমাতে পারেনি। উল্টো তাঁর ঝড়ো হাওয়ায় উড়ে গিয়েছে সিলেটের বোলারদের মনোবল। ইনিংসের ১৭তম ওভারে মুশফিক ফিরে গেলেও উইকেট পতনের সেই চাপ দলের উপরে ফেলতে দেননি রিয়াদ।
শেষ ৩ ওভারে টার্গেট করেন রিচার্ড নাগারাভাকে। জিম্বাবুইয়ান এ পেসারের দুই ওভারেই তুলে নেন ৪ টা চার আর ২ টা ছক্কা। আর তাতে ইনিংসের শেষ ওভারে এসে ব্যক্তিগত পঞ্চাশ টপকে যান এ ব্যাটার। ২৩ বলে পূর্ণ করেন ব্যক্তিগত ফিফটি। যা এ আসরে দ্বিতীয় ফিফটির রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত রিয়াদ ৭ চার ও ২ ছক্কায় খেলেন ২৪ বলে অপরাজিত ৫১ রানের একটি ইনিংস। আর তাঁর এমন ব্যাটিং তাণ্ডবেই ১৮৬ রানের সংগ্রহ পায় বরিশাল।
রিয়াদ বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে নেই, তা প্রায় দুই বছর গড়িয়েছে। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ আদৌ পাবেন কিনা, তা সময়ই বলে দিবে। তবে তাঁর এই ইনিংস নির্বাচকদের জন্য একটা বার্তা। সীমিত ওভারে ক্রিকেটে রিয়াদ যে এখনই বাতিলের খাতায় যাওয়ার মতো নয়, সেটিই যেন মনে করিয়ে দিলেন এ ক্রিকেটার।