বাদ পড়া থেকে টুর্নামেন্ট সেরা, রোহিতের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

২০১১ সাল, বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট বসেছিল ভারতে। টুর্নামেন্টের প্রথম বলে বীরেন্দর শেবাগের চার, শেষ বলে মহেন্দ্র সিং ধোনিংর আইকনিক সেই ছয় – প্রথম থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত সেবারের সেই বিশ্বকাপ দুইহাত ভরে উদযাপনের উপলক্ষ দিয়েছিল ভারত ক্রিকেট দলকে।

অথচ সেসব উদযাপনে সঙ্গী হতে পারেননি রোহিত শর্মা; তখনকার তরুণ এই ব্যাটারকে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ দেয়নি টিম ম্যানেজম্যান্ট। ফলে বছর কয়েক আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা দেয়া রোহিতের হৃদয় দুমড়মুচড়ে গিয়েছিল তখন। কিন্তু সেই দুঃসময় স্থায়ী হয়নি, সেদিনের তরুণ রোহিত ২০১৯ বিশ্বকাপে আবির্ভূত হয়েছিলেন বিধ্বংসী হিটম্যান হিসেবে।

চার বছর পর আবারও নিজেদের উঠোনে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে ভারত, এবার অবশ্য বাদ পড়ার কথা নয় রোহিত শর্মার৷ তবে প্রসঙ্গক্রমে এক যুগ আগের ঘটনা ঠিকই উঠে এসেছে রোহিতের কণ্ঠে; জানিয়েছেন কেমন ছিল তাঁর দিন, কিভাবে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।

এই ওপেনার জানান, ‘ আমি মন খারাপ করে আমার রুমে বসে ছিলাম; এবং এরপর কি করবো সেসব নিয়ে কোন ধারণা ছিল না। সেসময় যুবি (যুবরাজ সিং) আমাকে তাঁর রুমে ডেকেছিল এবং ডিনারের জন্য নিয়ে গিয়েছিল। তিনি আমাকে বাদ পড়লে কেমন লাগে সেটা আমাকে ব্যাখ্যা করে বলেন।’

রোহিত শর্মা আরো জানান, ‘যুবরাজ আমাকে বলে যে, আমার সামনে এতগুলো বছর আছে। যেহেতু চারবছর পর পর বিশ্বকাপে খেলি, কঠোর পরিশ্রম করে ইচ্ছে করলেই ঘুরে দাঁড়ানো যায়। আমি ভারতের হয়ে খেলবো না বা বিশ্বকাপে সুযোগ পাবো না এটা তিনি(যুবি) অসম্ভব মনে করতেন।’

যুবরাজ সিংয়ের এসব কথা রোহিত শর্মাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। ২০১১ সালে শচীন টেন্ডুলকারদের মত কিংবদন্তিদের বিদায়ের পর তাঁদের রেখে যাওয়া স্থান দখল করেছেন তিনি, আর ২০১৯ বিশ্বকাপে তো হয়েছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘আমি এরপর কঠোর অনুশীলন শুরু করি এবং বিশ্বকাপের পরপরই দলে ফিরে আসি। এবং তারপর থেকে সবকিছু ভাল যাচ্ছে। যেহেতু আমি খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছি তাই কেউ আমাকে বলতে হবে না যে – করার চেয়ে বলা সহজ। আমি একটি বিশ্বকাপে বাদ পড়েছি এবং আমি জানি এটা কেমন লাগে।’

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে রীতিমতো অতিমানব হয়ে উঠেছিলেন রোহিত শর্মা। মাত্র নয় ম্যাচ খেলেই করেছেন ৬৪৮ রান, সেঞ্চুরি পেয়েছেন পাঁচটি।

তবে ব্যাট হাতে সেরা সময় পার করলেও আরাধ্য বিশ্বকাপ জিততে পারেননি এই ডানহাতি। ২০১১ সালের মত এবার ঘরের মাঠে সেই আক্ষেপ পূরণ করার সুযোগ আছে তাঁর সামনে। সুযোগ কতটা কাজে লাগাতে পারেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link