রায়ান বার্ল, দ্য এক্স ফ্যাক্টর

রায়ান বার্লের এই টুইটটার কথা কী মনে আছে? আর্থিকভাবে ধুঁকতে থাকা একটা ক্রিকেট দল হঠাৎই নব উদ্যোম ফিরে পায় ঐ একটি টুইটের কল্যাণে। বার্লের করা সেই টুইটেই এগিয়ে আসে ক্রীড়াসামগ্রী প্রতিষ্ঠান পুমা। জিম্বাবুয়ে এরপর থেকেই একটু একটু করে আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। বহু বছর আঁধারে নিমজ্জিত থাকার পর আলোকে সঙ্গী করেই বর্তমানে চলছে তাদের ক্রিকেট যাত্রা। সবশেষ ঘরের মাটিতে তারা হারিয়েছে বাংলাদেশকে, তাও আবার টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই।

‘একটা স্পনসর পাওয়ার কোনো সুযোগ আছে কি, যাতে প্রতি সিরিজের পর জুতাগুলো আঠা দিয়ে লাগাতে না হয় আমাদের?’

রায়ান বার্লের এই টুইটারের কথা কী মনে আছে? আর্থিকভাবে ধুঁকতে থাকা একটা ক্রিকেট দল হঠাৎই নব উদ্যোম ফিরে পায় ঐ একটি টুইটের কল্যাণে। বার্লের করা সেই টুইটেই এগিয়ে আসে ক্রীড়াসামগ্রী প্রতিষ্ঠান পুমা। জিম্বাবুয়ে এরপর থেকেই একটু একটু করে আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। বহু বছর আঁধারে নিমজ্জিত থাকার পর আলোকে সঙ্গী করেই বর্তমানে চলছে তাদের ক্রিকেট যাত্রা। সবশেষ ঘরের মাটিতে তারা হারিয়েছে বাংলাদেশকে, তাও আবার টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই।

যে বার্লের সরব টুইটে জিম্বাবুয়ের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছিল সেই বার্ল কি বাইশ গজের ক্রিকেটেও সরব? হ্যাঁ। মাঠের ক্রিকেটেও তিনি নিয়মিত দ্যুতি ছড়িয়ে যান। কোনোদিন ব্যাট হাতে, কোনোদিন কব্জি ঘুরিয়ে। বাঁ-হাতি ব্যাটিংয়ের পাশে ডানহাতে লেগ স্পিনটা তিনি ভালই পারেন।

স্লগ ওভারে তার ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেট আগে থেকেই পরিচিত ছিল৷ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত তিনিই প্রথম ব্যাটার যিনি ভিন্ন ২ ম্যাচে এক ওভারে ৩০+ রান নিয়েছেন। ২০১৯ সালে মিরপুরে সাকিবের এক ওভারে ৩০ রান নেওয়ার পরে এই গত সিরিজেই বাংলাদেশের আরেক বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের ওভারে নিয়েছিলেন ৩৪ রান। তবে অস্ট্রেলিয়া সফরে তৃতীয় ওয়ানডেতে নতুন এক রায়ান বার্লকে দেখল ক্রিকেট।

মাত্র ৩ ওভার বল করলেন, তাতেই ৫ উইকেট! একে একে তুলে নিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অ্যাশটন আগার, ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউডের উইকেট। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট পাওয়ার দিনে অস্ট্রেলিয়াকে তাদেরই মাটিতে অলআউট করলেন ১৪১ রান।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কখনোই ওয়ানডে জেতা হয়নি জিম্বাবুয়ের। এবার কি সেই আক্ষেপ ঘুচবে? এমন প্রশ্নের ক্ষণে রায়ান বার্ল যখন ব্যাটিংয়ে এলেন তখনো জিম্বাবুয়ে তাদের লক্ষ্য থেকে ২৭ রান দূরে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় জিম্বাবুয়ের ততক্ষণে ৬ ব্যাটার প্যাভিলিয়নে। তবে তখন পর্যন্ত ক্রিজে আঁকড়ে থাকা রেজিস চাকাভার প্রয়োজন ছিল একটা যোগ্য সঙ্গ।

দলের প্রয়োজনে রায়ান বার্ল সেই কাজটিই করে গেলেন। উইকেট আগলে রাখলেন। চাকাভার সাথে মূল্যবান ২২ রানের জুটি গড়লেন। তাদের সেই জুটিটাই জিম্বাবুয়েকে ম্যাচজয়ের পথে এগিয়ে দেয়। যদিও লক্ষ্য থেকে ৫ রান দূরে থাকতে রায়ান বার্ল আউট হয়ে ফিরে যান। কিন্তু ততক্ষণে জিম্বাবুয়ের জন্য ম্যাচজয়ের মঞ্চ প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। জিম্বাবুয়ে ম্যাচটি জিতে নেয় ৩ উইকেটে।

দেশের বাইরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে শেষবার জিম্বাবুয়ে হারিয়েছিল দীর্ঘ ৩৯ বছর আগে, ট্রেন্টব্রিজে। ৩৯ বছর পর  দেশের বাইরে দ্বিতীয়বার এবং অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম বারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে হারানো জিম্বাবুয়ের জন্য এ ম্যাচটা হয়ে রইল একটু বেশিই স্পেশাল।

আর রায়ান বার্লের জন্য তো এ ম্যাচটি হয়ে গেল ক্যারিয়ারের অন্যতম স্মরণীয় ম্যাচ। ১০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তিনিই তো হয়ে থাকবেন এ ম্যাচজয়ের নায়ক। যেমনটি তিনি মাঠের বাইরেও ছিলেন, এখনো আছেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...