শুরুতে তাঁকে বলা হতো – দ্য নেক্সট শচীন।
অনেকেই বীরেন্দ্র শেবাগের মধ্যে শচীন টেন্ডুলকারের ছায়া দেখেছিলেন। কিন্তু শেবাগ ছায়া হয়ে থাকেননি। বরং টেন্ডুলকারের যোগ্য সতীর্থ হয়ে উঠেছিলেন।
শেবাগ দলে তাঁর নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন। টেকনিক্যালি শচীন টেন্ডুলকার এবং বীরেন্দ্র শেবাগ দুইজনের ব্যাটিং ছিলো প্রায় একই ধরনের। দুইজনই অফসাইডে খেলতে ভালোবাসতেন। এছাড়াও দুইজনেরই স্পিনের বিরুদ্ধে ব্যাটিং করাটা ছিলো অনবদ্য।
শচীন এবং শেবাগ ভারতের হয়ে ওয়ানডেতে বেশ নিয়মিতই ইনিংসের গোড়াপত্তন করতেন। যেখানে শেবাগকে ভাবা হত তিনি হবেন শচীনের উত্তরসূরী হবেন, সেখানে তিনি নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন। শচীনের ক্যারিয়ারের কিছু ঘটনা শেবাগের ইনিংসের কিছুটা দৈবভাবে মিলে গিয়েছে।
- ওয়ানডেতে ডাবল
শচীন টেন্ডুল ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে দ্বিশতক হাঁকান। ২০১০ সালে গোয়ালিওরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন শচীন টেন্ডুলকার। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটাই শচীনের একমাত্র দ্বিশতক।
এর এক বছর পর এই রেকর্ড ভাঙ্গেন বীরেন্দ্র শেবাগ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইন্দোরে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম এবং একমাত্র দ্বিশতক করেন বীরেন্দ্র শেবাগ। এই ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির অনুপস্থিতিতে অধিনায়কত্ব করেন শেবাগ।
- টেস্টে ডাবল
টেস্টে শচীন টেন্ডুলকার এবং বীরেন্দ্র শেবাগের ব্যাটিংয়ের ধরণ ছিলো ভিন্ন। টেস্ট ক্রিকেটেও বেশ ঝড়ো ব্যাটিং করতে অভ্যস্ত ছিলেন শেবাগ। এই কারণেই টেস্টে খুব বেশি সংখ্যক বড় ইনিংস খেলতে পারেননি শেবাগ।
অপরদিকে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য উপযুক্ত ব্যাটসম্যান ছিলেন ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকার। তিনি বেশ ভালো টেস্ট মেজাজে খেলতে পারতেন। আর টেস্ট মেজাজে খেলেই টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন তিনি।
শচীন টেন্ডুলকার এবং বীরেন্দ্র শেবাগ দুইজনই টেস্ট ক্যারিয়ারে ছয়টি করে দ্বিশতক হাঁকিয়েছেন।
- ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি
শচীন টেন্ডুলকার তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন ১৯৯৪ সালে। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ ছিলো অস্ট্রেলিয়া। শেবাগও একই শহরে নিজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন।
২০০১ সালে তাসমান পাড়ের দেশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন তিনি।
- টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি
শচীন টেন্ডুলকার ১৯৯০ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি করেন তখন তাঁর ব্যাটিং পজিশন ছিলো ছয়। তখন ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিক খেলতো বেশ কিছু সিনিয়র ক্রিকেটার। এই কারণে দলের জুনিয়র সদস্য শচীন টেন্ডুলকার ব্যাটিং করতেন ছয় নাম্বারে। পরবর্তীতে তিনি ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারের চার নম্বর পজিশনের ব্যাটিং করেন।
একই ঘটনা ঘটেছিলো বীরেন্দ্র শেবাগের সাথে। তিনিও ভারতের হয়ে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করার সময় ছয় নাম্বার পজিশনে ব্যাটিং করেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ব্লোয়েমফেইন্টনে তিনি নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বেশ নিচের দিকে ব্যাটিং করতেন তিনি। পরবর্তীতে সৌরভ গাঙ্গুলির অধিনায়কত্বের সময় উপরের দিকে খেলা শুরু করেন তিনি।
- আইপিএলের প্রথম ম্যাচে রান
আইপিএলের প্রথম আসরে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের আইকন ক্রিকেটার ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। অপরদিকে প্রথম আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে খেলেন বীরেন্দ্র শেবাগ।
আইপিএলের অভিষেক ম্যাচে দুই জনই নিজের দলের হয়ে ওপেনিং করেন। শচীন এবং শেবাগ দুই জনই নিজ দলের হয়ে অভিষেক ম্যাচে ১২ রানে আউট হন।