কলকাতা কাব্য ২০০১, শচীনের এক ওভার বোলিংয়ের মর্ম বোঝা দায়!

সেদিন হঠাত অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি নিয়ে নেন এক আজব সিদ্ধান্ত। ডাক দিলেন পার্টটাইম বোলার শচীন রমেশ টেন্ডুলকার কে। বললেন, ‘কেবল একটা ওভার পাবে তুমি।’ 

এক ওভারেই কেল্লা ফতে। সেই বোলারটা আর কেউ নন, খোদ শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। এক ওভার বল করতে যেয়ে ম্যাচ জেতানো এক স্পেল ফোটে তার হাতে। 

সাল ২০০১। মার্চ মাস। সেই বিখ্যাত ইডেন টেস্ট। যদিও বিশ্ববাসী টেস্টটাকে হরভজন সিং হ্যাটট্রিক বা ভিভিএস লক্ষণ-রাহুল দ্রাবিড়ের জুটি দিয়েই মনে রাখবে। তবে এই টেস্টে বল হাতে জ্বলে উঠেছিলেন ব্যাটিং কিংবদন্তি শচীন। 

প্রথম ইনিংসে হরভজনের হ্যাট্রিক আর স্টিভ ওয়াহ’র ১১০ এ অজিরা অল আউট হয় ৪৪৫ রানে। এরপর ব্যাট হাতে ভারত বিদ্ধস্ত হয় ১৭১ রানে। পড়ে ফলোঅনে। 

সেখান থেকে এক কথায় লক্ষণ-দ্রাবিড়ের ঐতিহাসিক জুটি দরে পায়ের নিচে মাটি এনে দেয়। ৬৫৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। টানা ১৬ ম্যাচ জেতা অজিদের শেষ দিনে জয়ের জন্য দরকার ৩৮৪ রান।

সেদিন হঠাত অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি নিয়ে নেন এক আজব সিদ্ধান্ত। ডাক দিলেন পার্টটাইম বোলার শচীন টেন্ডুলকারকে। বললেন, ‘কেবল একটা ওভার পাবে তুমি।’ 

টেস্ট শেষে তাঁর নামের পাশে ছিল ১১ টা ওভার। আর ৩১ রান দিয়ে তিন খানা উইকেট। প্রথম শিকার ছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। সুইপ শট খেলতে গিয়ে প্রথম বলেই লেগ বিফোরে পড়েন তিনি।

এর পরের শিকারটা ছিলেন ওপেনার ম্যাথু হেইডেন। ফুলটসে শট খেলতে যেয়ে ৬৭ রানে গুটিয়ে পড়েন তিনি।

এখানেই কিন্তু গল্প শেষ না। এরপর ব্যাট করতে আসেন শেন ওয়ার্ন। বিখ্যাত লেগিকে কিংবদন্তি ব্যাটার ছুড়ে দেন এক গুগলি। তার প্যাচে পড়ে প্লাম হন ওয়ার্ন। এককথায় তাঁর অস্ত্রের প্রয়োগ তারই উপর করলেন শচীন।

১৬৬ রানে ৩ উইকেট খোয়ানো অজিরা অল আউট হন ২১২ রানের মাথায়। ম্যাচ সেরার তকমাটা যদিও সেদিন লক্ষণ পেয়েছিলেন। তবে, ভারতও সেদিন শচীনের বোলিংয়ের মর্ম বুঝতে পারে। পরে তিন ম্যাচ সিরিজ ভারত ২-১ এ জিতে নেয়। ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে থাকে ভারতের সেই বীরত্ব।

Share via
Copy link