ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে; বোলিং প্রান্তে আছেন মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড – এমন একটা পরিস্থিতিতে ব্যাটার যেই হোক, রয়েসয়েই খেলতো নিশ্চয়ই। কিন্তু সায়িম আইয়ুবের এসব ভাবার সময় কই, বোলিং প্রান্তে কে আছে তা দেখার সময় কই। তিনি কেবল বল দেখেছেন আর পিটিয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে পঞ্চাশ ওভারের ফরম্যাটে অভিষেক হয় এই বাঁ-হাতির। প্রথম ম্যাচে কিছু করতে পারেননি, স্টার্কের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে গিয়েছেন এক রান করেই। সেই ব্যর্থতাই বোধহয় পরের ম্যাচে ভাল করার জ্বালানি ছিল।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছেন এই ব্যাটার, মাত্র ৭১ বলে করেছেন ৮২ রান। তাঁর ব্যাটে নান্দনিক সব শটের পসরা বসেছিল; বিশ্বের অন্যতম সেরা একটা বোলিং লাইনআপকে তিনি পাত্তাই দেননি। এমন আধিপত্যময় পারফরম্যান্সের সুবাদে পাকিস্তানও জিতেছে বিশাল ব্যবধানে।
শুরুর দিকে একেবারে টেস্ট মেজাজে খেলেছিলেন সায়িম, হয়তো বুঝে উঠতে পারছিলেন না বিশ্বসেরা বোলারদের। একটা সময় তাঁর রান ছিল ২৪ বলে ৬, আর পাওয়ার প্লে শেষে ৩০ বলে ১৫ রান। কিন্তু ফিল্ডাররা ছড়িয়ে পড়তেই সাহসী হয়ে উঠেন তিনি, এরপর তাঁকে ঠেকায় এমন সাধ্য কার।
এগারোতম ওভারে কামিন্সকে ছক্কা মেরে শুরু এই ওপেনারের, পরের ওভারেই স্টার্কের ছয় বল থেকে আদায় করেছিলেন ১৪ রান। চোখের পলকে হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন তিনি, লেগেছিল কেবল ৫২ বল।
মাইলফলক স্পর্শের পর আরো আগ্রাসী হয়ে উঠে তাঁর ব্যাটিং; চার এবং ছয়ের মারে টি-টোয়েন্টি স্টাইলে রান করেন। আউট হওয়ার আগে শেষ ১৮ বলে করেছিলেন ৩২ রান।
সেট হওয়ার পর যেভাবে রান তোলার গতি বাড়িয়েছেন এই তরুণ তুর্কি, আধুনিক ক্রিকেটে এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। অন্তত টপ অর্ডার ব্যাটারদের কাছে উড়ন্ত সূচনার প্রত্যাশায় থাকে পুরো দল। তাই পাকিস্তান যে আধুনিক ক্রিকেটের সাথে মানানসই একজনকে পেতে যাচ্ছে সেটা নিশ্চিত, তবে ধারাবাহিকতার বিকল্প নেই তাঁর সামনে।