বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব সাদা পোশাকে নিজের উপন্যাসের ইতি টানতে যাচ্ছেন; অথচ দেশের মাটি থেকে বিদায় নিতে পারবেন কি না সেটা নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। রাজনৈতিক কারণে তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে ছিল শঙ্কা, তিনি নিজেও নিশ্চিত ছিলেন না দেশে এসে শেষ টেস্ট খেলতে পারবেন কি না।
তবে আশার আলো জ্বলে উঠেছে, সাকিব নিজের উঠোন থেকেই বিদায় জানাবেন এমন নিশ্চয়তা পাওয়া গিয়েছে। তাঁর ফেসবুক পোস্টেই মিলেছে সেই আভাস। অর্থাৎ সব ঠিক থাকলে মিরপুর স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলেই তুলে রাখবেন সফেদ জার্সিটা।
কিন্তু আলোচিত পোস্টে সাকিব ‘শেষ টেস্ট’ নয় বরং ‘শেষ ম্যাচ’ উল্লেখ করেছেন। তাই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়ে কেবল টেস্টকে নাকি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেই বিদায় বলবেন সেই প্রশ্ন উঠেছে।
সাকিব ইস্যুতে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া অবশ্য ইতিবাচক সুরে কথা বলেছেন। সবশেষ শারজায় সাকিবের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। তাতেই বোধহয় ঘোলা জল কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে। এবার সাকিব নিজেই ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন দেশের মাটিতে অবসর নেবেন।
প্রথমেই তিনি স্মরণ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে আত্মত্যাগকারীদের, এরপর আন্দোলন চলাকালীন নীরব থাকার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। সবশেষে এই বাঁ-হাতি সকলকে হাতে হাত মিলিয়ে তাঁকে বিদায় জানানোর আহ্বান করেন।
তিনি লিখেন, ‘আপনাদের ভালোবাসা এবং সমর্থন আমাকে আজকের সাকিব আল হাসান বানিয়েছে। আমি জিতলে, আপনারা সবাই জিতেছেন। আমি হেরে গেলে, হেরে গেছেন আপনারা সবাই! এই ক্রিকেটের এই গোটা গল্পটা আপনাদের হাতেই লেখা! তাই আমার শেষ ম্যাচে, এই গল্পের শেষ অধ্যায়ে, আমি আপনাদেরকে পাশে চাই। আমি আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে বিদায় নিতে চাই।’
স্টেডিয়ামে বা চলাফেরায় নিরাপত্তার চেয়ে এই তারকা সম্ভবত দেশত্যাগের ব্যাপার নিয়ে বেশি চিন্তিত। যদি আসলেই খেলতে আসেন বাংলাদেশে, তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তিনিই হবেন আওয়ামী লীগের প্রথম সংসদ সদস্য যিনি জনসম্মুখে এসেছেন। আর সাকিব খেলা শেষে দেশ ছাড়তে পারবেন সেই আশ্বাসও এখনো পাওয়া যায়নি। তাই তাঁর দেশ থেকে বিদায় নেয়া প্রায় নিশ্চিত হলেও কিছু যদি, কিন্তু বাকি আছে।