সুপার ওভারে সুপার শূন্য

ক্রিকেটের সবচাইতে শ্বাসরুদ্ধকর মুহুর্তের জন্ম হয় সুপার ওভারে। কালেভদ্রে দেখা যাওয়া এই সুপার ওভারে গ্যালারিতে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। কিন্তু, এই সুপার ওভারেও আছে শূন্য রানের রেকর্ড,পুরো একটা দল সুপার ওভারে করেছে শূন্য। এরকম পাঁচটি দলের গল্পই আজকে বলব

  • সাসেক্স শার্কস-ডায়মন্ড ঈগলস (২০০৯)

এই ম্যাচটাই ছিল সুপার ওভারের ইতিহাসে প্রথম ‘০ রান করার ম্যাচ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টির ম্যাচ। সুপার ওভারের আগে ম্যাচটাতে সাসেক্স শার্কস ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে তোলে ১১৯ রান। ১২০ রান তাড়া করতে নেমে ঈগল শেষ ওভারে গিয়ে ম্যাচটি টাই করে। ডায়মন্ড ঈগলের পক্ষে ৬২ বলে ৬৫ রান করে রাইলি রুশো সর্বোচ্চ রান করেন।

সুপার ওভারেও রাইলি রুশোর ব্যাট কথা বলে বেশ ভালভাবেই। দলের নয় রানের আটই করেন তিনি একাই। সাসেক্সকে থামাতে এরপর ঈগল বল তুলে দেয় সিজে ডি ভিলিয়ার্সের হাতে। প্রথম বলেই তিনি তুলে নেন দুই উইকেট। এরপর আর কোন রান নিতে পারেনি সাসেক্স।

  • হ্যাম্পশায়ার-বার্ভাডোজ (২০১১)

২০১১ সালের ক্যারিবিয়ান টি-টোয়েন্টিতে আবার সুপার ওভারে শূন্য দেখে ক্রিকেট। শন আর্ভিনের ১৯ বলে ৩২ রানের সৌজন্যে আগে ব্যাট করা হ্যাম্পশায়ার স্কোরবোর্ডে তোলে ১৩৬ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শেষ ওভারে বার্বাডোজের টিনো বেস্ট আউট হয়ে গেলে ম্যাচটি গড়ায় সুপার ওভারে।

যা হোক, সুপার ওভারে বার্বাডোজ দুই উইকেট হারিয়ে ফেললে আর কোন রান স্কোরবোর্ডে তুলতে পারেনা । সুপার ওভারে রান থেকে যায়- ০!

  • ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো রেড স্টিল-গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স (২০১৪)

সুপার ওভারে শূন্যর এই ঘটনাটা ঘটে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার ‍লিগে (সিপিএল) । ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের এই ম্যাচটিতে ত্রিনিদাদ আগে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে তুলে ১১৮ রান। এখানেও চেজ করতে নেমে ম্যাচটিকে শেষ ওভারে নিয়ে যায় গায়ানা। গায়ানার জিততে শেষ বলে গায়ানার দরকার ছিল ৩ রান, ক্রিজে ছিলেন রন্সফর্ড বিটন।
শেষ বলটিকে উড়িয়ে আকাশে উঠিয়ে দেন রন্সফর্ড। কিন্তু পুরান তার ক্যাচটি নিতে ব্যার্থ হয়। দৌড়ে ২ রান নেওয়ার ম্যাচটি গড়ায় সুপার ওভারে।

সুপার ওভারে ব্যাট করতে নেমে গায়ানা ৬ বলে করে ১১ রান। ১২ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে নিকোলাস পুরানকে সুনীল নারাইনের সামনে মনে হয় অসহায়। আর এরপর তো ক্রিকেট রেকর্ডেই নাম লেখান নারাইন- সুপার ওভারে তিনি করেন মেইডেন!

  • ওয়ারিয়র্স-নাইটস (২০১৫)

সেটা ছিল র‌্যাম স্ল্যাম টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টের ম্যাচ। ছিল বৃষ্টির বাগড়া । সেই বাগড়া এতটাই বেশি যে ২০ ওভারের ম্যাচ কার্টেল ওভারে নেমে আসে মাত্র ছয় ওভারে। আগে ব্যাট করতে নেমে কলিন ইনগ্রামের ২১ বলে ৫২ রানের তাণ্ডবে ওয়ারিয়র্স স্কোরবোর্ডে তুলে ৮১ রান।

জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করে নাইটস আর শেষ পর্যন্ত ৬ ওভারে রান তোলে একেবারে ওয়ারিয়র্সের সমান।

সুপার ওভারে ওয়ারিয়র্সের হয়ে বল করতে নামেন অ্যান্ড্রু বার্চ। তা সুপার ওভারের বোলিং তিনি শেষ করে দেন দুই বলেই- দুই উইকেট তুলে নিয়ে। ক্রিকেটে লজ্জার এই রেকর্ডে নাম লেখায় নাইটস । এরপর ব্যাট করতে নেমে কলিন ইনগ্রাম প্রথম বলেই চার মেরে ওয়ারিয়র্সের জয় নিশ্চিত করে।

  • আমো শার্কস-স্পিন ঘার টাইগার্স (২০১৭)

সুপার ওভারে এই ঘটনা ঘটে মাত্র তিন বছর আগে, আফগানিস্তানের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শাপগিজা ক্রিকেট লিগে।

তাহির খান আর নুরুল হকের ব্যাটে চড়ে আমো শার্কস প্রথম ইনিংসে তোলে ১৫৯ রান।১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এলটন চিগুম্বুরা ব্যাট হাতে করেন ১৬, দলটি করে একেবারে কাঁটায় কাঁটায় ১৫৯! ম্যাচটি গড়ায় সুপার ওভারে।

সুপার ওভারে ব্যাট করতে নেমে স্পিন ঘার টাইগার্স ৬ বলে তোলে ১৭ রান। ১৮ রানে ব্যাট করতে নেমে আমো শার্কের ব্যাটসম্যানেরা শুরু থেকেই ব্যাট চালাতে চেষ্টা করেন। তবে সেই ব্যাট চালানোটা সুখকর হয়না বিলাল খানের পা দিলে। বিলাল খান প্রথম দুই বলে তুলে নেন দুই উইকেট। সুপার ওভারে আমো শার্ক করে ০, গড়ে লজ্জার রেকর্ড।

লেখক পরিচিতি

আদ্যোপান্ত স্টোরিটেলার!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link