লিটন দাসের সেঞ্চুরি আর মুশফিকের দুর্দান্ত পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসে বাংলাদেশের পাহাড়সম সংগ্রহের পর সাকিব-তাসকিনদের বোলিং দাপটে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৮৮ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ তে সিরিজ জিতে নিলো বাংলাদেশ।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের ব্যাটে শুরুটা ভালোই করে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের মতো শুরুতেই অবশ্য মুখ থুবড়ে পড়েনি বাংলাদেশের ব্যাটিং শিবির। ওপেনিং জুটিতে আসে ৩৮ রান। এরপর দলীয় ৩৮ রানের আগের ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং শিবিরকে তছনছ করে দেওয়া ফজল হক ফারুকির স্যুইংয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে আউট তামিম!
টানা দুই ম্যাচেই ব্যর্থ তামিম ফিরেন ১২ রান করে। এরপর সাকিব-লিটনের ব্যাটে এগোতে থাকে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দু’জনে মিলে করেন ৪৫ রান। এরপর রশিদ খানের প্রথম ওভারেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ব্যক্তিগত ২০ রানেই আউট সাকিব।
তবে ইনিংসের বাকিটা সময় ব্যাট হাতে ছিলো লিটন-মুশফিকের দাপট। মুজিব উর রহমান-রশিদ খানদের পাত্তাই দেননি এই দুই ব্যাটার। একপ্রান্তে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে লিটন তুলে নেন ফিফটি। লিটনকে অনুসরণ করেন মুশফিকও। মুশফিকও দেখা পান ব্যক্তিগত ফিফটির।
সেই সাথে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন মি. ডিপেন্ডেবল। এরপর দুর্দান্ত ব্যাটিং করে একপ্রান্তে দাপুটে সেঞ্চুরির দেখা পান লিটন। লিটনের ৫ম ওয়ানডে সেঞ্চুরির ইনিংসে দু’জনে মিলে গড়েন ডাবল সেঞ্চুরির জুটি!
দলীয় ২৮৫ রানে ব্যক্তিগত ১২৬ বলে ২ ছক্কা ও ১৬ চারে ১৩৬ রানের ইনিংস শেষে আউট হন লিটন। ঠিক পরের বলেই আউট মুশফিকও! সেঞ্চুরি থেকে ১৪ রান দূরে থাকতে ৮৬ রানে ফিরেন মুশফিক। তবে ফিনিশিংটা প্রত্যাশা অনুযায়ী করতে পারেননি রিয়াদ-আফিফরা। শেষ ৪ ওভারে আসে মাত্র ২২ রান! শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩০৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ! আফগানদের পক্ষে ফরিদ আহমেদ ২ ও রশিদ-ফারুকিরা নেন ১ টি করে উইকেট।
জবাবে বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে দলীয় ৯ রানেই আফিফ হোসেনের দুর্দান্ত থ্রো’য়ে রান আউট হয়ে ফিরেন রিয়াজ হাসান। শরিফুলের শিকার হয়ে দ্রুতই ফিরেন অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদি। সাকিবের বলে স্টাম্পিং হয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাইও দ্রুত ফিরলে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন ব্যাকফুটে আফগানিস্তান।
চতুর্থ উইকেটে রহমত শাহ ও নাজিবুল্লাহ জাদরানের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় আফগানরা। দু’জনে মিলে যোগ করেন ৮৯ রান! অবশ্য সাকিবের বলে জাদরানের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন শরিফুল! একপ্রান্তে লড়াই করে রহমত শাহ তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি।
দলীয় ১২৩ রানে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে রহমত ফিরলে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি আফগানরা। একে একে বিদায় নেন নাজিব ও গুরবাজরা। প্রথম ম্যাচের পর এই ম্যাচেও ফিফটি তুলে নেন নাজিব। খেলেন ৬১ বলে ৫৪ রানের অসাধারণ ইনিংস। ১৫১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তখন ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে আফগানরা। একপ্রান্তে মোহাম্মদ নবি লড়াইয়ের চেষ্টা করলেও দলীয় ১৮৪ রানে মিরাজের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন নবি।
রশিদ খানের ২৬ বলে ২৯ রানের পরে শেষ পর্যন্ত ২১৮ রানেই গুড়িয়ে আফগানিস্তানের ইনিংস। ৮৮ রানের বিশাল জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে ২-০ তে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ – ৩০৬/৪ (৫০ ওভার); লিটন ১৩৬ (১২৬), মুশফিক ৮৬ (৯৩), সাকিব ২০ (৩৬); ফরিদ ৮-০-৫৬-২, রশিদ ১০-০-৫৪-১, ফারুকি ১০-১-৫৯-১।
আফগানিস্তান – ২১৮/১০ (৪৫.১ ওভার); নাজিব ৫৪ (৬১), রহমত ৫২ (৭১), নবী ৩২ (৩৮); তাসকিন ১০-২-৩১-২, সাকিব ১০-০-৩৮-২, শরিফুল ৬-০-৩৫-১, মেহেদী ১০-০-৫২-১।
ফলাফল: বাংলাদেশ ৮৮ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: লিটন দাস (বাংলাদেশ)