ঝড়ের আগে নিস্তব্ধতার সাকিবীয় রূপ

যেন তারা দাঁড়িয়ে দেখলেন কোন এক সেনাপতির যুদ্ধাভিযানের পূর্বের প্রস্তুতি। তবে না সাকিব বড় ধরণের লড়াইয়ে নামেননি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ব্যাটিং সত্ত্বাকে খানিকটা উজ্জীবিত করবার প্রয়াসই করে গেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সাকিবের ব্যাট। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার খানিকটা নাখোশ। পছন্দসই ব্যাটটা খুঁজে পেতে কিছু সময় ব্যয়। সহযোগী একজন দৌড়ে গেলেন, নিয়ে আসা হয় দ্বিতীয় ব্যাট। এবার যেন হাতের সাথে জমে গেল সেই ব্যাট। তাতে ছিল না তেমন কোন সমস্যাও। এরপর আবারও নিজের অনুশীলনে মত্ত সাকিব আল হাসান।

সবাই ঠিক যেখানে শেষ করেন, সাকিব আল হাসানের শুরুটা যেন সেখান থেকেই। প্রথম ওয়ানডের আগের দিন মোটে ৪০ মিনিট অনুশীলন করেছে পুরো বাংলাদেশ দল। অনুশীলনও নয়, স্রেফ গা গরম করা।

সবাই যখন এক এক করে মাঠ ছেড়ে গেল, তখনই নিজের ক্রিকেট সরঞ্জামে সজ্জিত হয়ে নিলেন নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার। সাকিব যখন তৈরি হয়ে নিচ্ছিলেন ব্যাটিং অনুশীলনের জন্য, তখন মাঠকর্মীরা বেশ আগ্রহ নিয়েই অবলোকন করে গেলেন পুরো প্রক্রিয়া।

যেন তারা দাঁড়িয়ে দেখলেন কোন এক সেনাপতির যুদ্ধাভিযানের পূর্বের প্রস্তুতি। তবে না সাকিব বড় ধরণের লড়াইয়ে নামেননি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ব্যাটিং সত্ত্বাকে খানিকটা উজ্জীবিত করবার প্রয়াসই করে গেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

দুইজন থ্রোয়ার নিয়ে তিনি সাগরিকার বুকে টানা ঘন্টাখানেক ব্যাট চালিয়ে গেলেন। একেবারেই ভাবলেশহীনভাবেই যেন ব্যাটিংটা করে গেলেন। স্রেফ ব্যাট আর বলের মেলবন্ধনটা ঠিকঠাক করে যাওয়ার প্রচেষ্টা। বন্ধ দরজার আড়ালে হয়ত নিজের যত ত্রুটি ছিল তা সব ঠিক করে ফেলেছেন সাকিব। তাইতো কেবল ম্যাচের আগের দিন দেখা মেলে বাঁ-হাতি এই অলরাউন্ডারের।

এর আগের অবশ্য বাংলাদেশ দলের প্রতিটা খেলোয়াড় নিজেদের অনুশীলন সেরে নিয়েছেন। তাছাড়া পাওয়ার হিটিং অনুশীলনও করতে দেখা গেছে নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী মিরাজ, আফিফ হোসেন, নাইম শেখদের। সেখানেও অনুপস্থিত ছিলেন সাকিব।

তার তো সবকিছুই রপ্ত। তিনিই তো বুদ্ধিদীপ্ত। তিনি জানেন তার ঠিক কতটুকু অনুশীলন প্রয়োজন। তাছাড়া পাওয়ার হিটিং কখনোই সাকিবের দূর্বলতা ছিল না। নিজের দিনে সাকিবের রুদ্রমূর্তিতে বহুবার ভষ্ম হয়েছে প্রতিপক্ষ। সেই স্মৃতিও তো কম নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের।

তাছাড়া ফর্মের তুঙ্গে থাকা সাকিব যে ঠিক কতটা ভয়ংকর রুপে আবির্ভূত হতে পারেন, সেই উদাহরণ তো ২০১৯ বিশ্বকাপ। আরও একটি বিশ্বকাপ সন্নিকটে। এটা খুব সম্ভবত সাকিবের শেষ। শেষটাও রাঙিয়ে যেতে চাইবেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে সাম্প্রতিক সময়ে চোখে লেগে থাকার মত পারফরমেন্স তিনি উপহার দিতে পারেননি। সেই দশা নিশ্চয়ই কাটিয়ে উঠতে চাইবেন সাকিব।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটা হতে পারে আদর্শ মঞ্চ। তার ব্যাটে আবারও রান ফোয়ারা ফোঁটার এটাই সূবর্ণ সুযোগ। যদিও চট্টগ্রামে তার রেকর্ডটা খুব একটা উজ্জ্বল নয়। কেবল একটি সেঞ্চুরির বিপরীতে দুইটি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তার নামের পাশে। ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এই পরিসংখ্যানে আরেকটু রঙ ঢেলে নিশ্চয়ই দিতে চাইবেন সাকিব।

মানসিক প্রস্তুতিটা তিনি নিয়ে রেখেছেন হয়ত। ব্যাট হাতেও নিজেকে প্রস্তুত করেছেন প্রথম ওয়ানডের আগের দিন। এখন কেবল সময় মাঠে আলো ছড়ানোর।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...