সাকিব আল হাসান নাকি সারাক্ষণ ব্যস্ত নিত্য-নতুন শো-রুম উদ্বোধন করতে। তবে সাকিব আল হাসান স্রেফ সেসবই উদ্বোধন করেন না। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে উইকেট শিকারের রাস্তাটাও তিনিই প্রথম খুলে দিলেন। ভয় ধরানো জুটিতে আঘাত সাকিবের। আর মিলে যায় প্রথম ব্রেক থ্রু।
এবারের বিশ্বকাপে সাকিবের আর পাওয়ার কিছু নেই। তিনি নিজেও জানিয়েছেন সে কথা। তিনি নিজেকে উজাড় করে দিতে চান দলের জন্যে। সে কাজটির শুভ সূচনায় সাকিবের শিকারে পরিণত হন ইব্রাহিম জাদরান। নতুন এক বিশ্বকাপ, সাকিবের রেকর্ডের ক্ষুধা তবুও আনমনে তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।
আর মাত্র ১৬টি উইকেট পেলেই তিনি চলে যেতে পারেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। বিশ্বকাপে অলরাউন্ডারদের মধ্যে প্রথম ৫০ উইকেটের মালিক বনে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ তার সামনে। সে পথেই এগিয়ে যাওয়ার ব্রত যেন তার। ইব্রাহিম জাদরানকে তাই একটু জোরের উপর বল করলেন। আগে থেকেই ডিপ স্কোয়ার লেগে রাখা ছিল ফিল্ডার।
তবুও অফ সাইডের বাইরের হালকা বাউন্সি বলটাকে ইব্রাহিম সুইপ শট খেলেন। তাতে ডিপ স্কোয়ার লেগের তানজিদ তামিমের হাতে চলে যায় সহজ ক্যাচ। এরপর ঠিক একই রকমভাবে সাকিবের শিকারে পরিণত হন রহমত শাহ। তবে মিড উইকেটে লিটনের সহজ ক্যাচে পরিণত হয়েছেন রহমত শাহ। সেই সুইপ শট খেলতে গিয়েই কুপোকাত হয়েছেন রহমত।
আফগানিস্তানের টপ অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা ছিল বাংলাদেশের। সেই টপ অর্ডারের দুইটি উইকেটই গিয়েছে সাকিবের পকেটে। অন্যের ব্যবসার শুভ সূচনায় যেমন থাকে সাকিবের অংশগ্রহণ, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের বিশ্বকাপের শুভ সূচনাও আসে সাকিবের হাত ধরে।
তবে দু’টোতেই কেন ক্ষান্ত হবেন তিনি! আরও একবার সাকিবের ভেল্কি। বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। তাতে উড়ে যায় নাজিবুল্লাহ জাদরানের উইকেট। সাকিবের সেই সাইড অন সিমে করা বল। বলে টার্ন হবে ভেবে অফ ড্রাইভ খেলার চেষ্টা করেন নাজিবুল্লাহ। তবে বল তার লাইন থেকে নড়েনি এক বিন্দু। এখানেই অভিজ্ঞ সাকিব বুদ্ধির ভেল্কি দেখান।
যেটা তিনি তার ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় জুড়ে দেখিয়ে এসেছেন। তিনি কখনোই বিশাল টার্নার ছিলেন না। তবুও ঝুলিতে তার উইকেটের অভাব নেই। স্রেফ মস্তিষ্কের জোরেই তিনি টিকে আছেন। তিনি দাপটের সাথে বিশ্ব ক্রিকেটে শাসন চালিয়ে যাচ্ছেন তার।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন উইকেট শিকার করেই বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করলেন সাকিব। তাতে রান দিয়েছেন ৩.৭৫ ইকোনমি রেটে। এই ধারা নিশ্চয়ই এখানেই স্থবির হয়ে যাবে না। সাকিব আল হাসান এই বিশ্বকাপে তার পক্ষে যা করা সম্ভব তার সবটুকুই করার চেষ্টা করবেন। বাংলাদেশের পক্ষে সফলতাই নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’ সাকিব।