আউট হননি সাকিব

নিজের ইনিংসের প্রথম বল। শাদাব খানের বলটা ক্রিজ থেকে অনেকটা বাইরে এসে খেলতে চাইলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক করতে পারলেন না। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে মৃদু আবেদন উঠলো। অন ফিল্ড আম্পায়ার অনেকটা সময় নিয়ে শেষ পর্যন্ত আঙুল উঠালেন। তবে সাথে সাথেই রিভিউ নিলেন সাকিব। আউট না দেয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ থাকার পরেও ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বজায় থাকল। অবাক সাকিব কোন ভাবেই মাঠ ছাড়তে রাজি নন, তবে মাঠ তো তাঁকে ছাড়তে হতোই।

সাকিবের মত অবাক হয়েছে গোটা ক্রিকেট জাতিই। ক্রিকেট বিশ্বের অনেক বিশ্লেষকই অবাক হয়েছেন আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তে। আম্পায়াররা ভুল করেন, কিন্তু থার্ড আম্পায়ার কী করে এমন সিদ্ধান্ত দেন। মাঠে সাকিব আম্পায়ারদের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললেন। বলটা যে তাঁর ব্যাটে লেগেছিল সেটা বোঝানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু কিছুতেই কাজ হল না। আম্পায়ার তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়।

অগত্যা মাঠ ছাড়তে হল সাকিব আল হাসানকে। তবে আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্ত মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়লো সব জায়গায়। এর আগের বলটাতেই আউট হয়ে ফিরেছিলেন সৌম্য সরকার। সাকিবের নিজের প্রথম বলটা ফ্লিক করতে চাইলেও পুরোপুরি করতে পারেননি। খালি চোখে দেখে মনে হচ্ছিল বলটা ব্যাটে লেগে তারপর প্যাডে আঘাত করে।

থার্ড আম্পায়ারের কাছে যাবার পরও সেটাই দেখা গেল। বলটা ব্যাট অতিক্রম করার সময় আল্ট্রা এজে পরিষ্কার সেটা দেখাও গেল। তবে আম্পায়ার জানালেন ‘নো ব্যাট ইনভলভড’। থার্ড আম্পায়ারের ধারণা ব্যাটটা মাটিতে স্পর্শ করেছিল। তবে বল ব্যাট অতিক্রম করার সময় ব্যাটটা মাটি থেকে উপরে ছিল বলেই দেখা যায়। এছাড়া সাকিব বলটি খেলছেন প্রায় তিন মিটার বাইরে এসে। সেটাও আউট না দেয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ হতে পারত।

তবে এসব কোন কিছুই যথেষ্ট মনে হয়নি মাঠে থাকা আম্পায়রদের। এমনকি বেনিফিট অব দ্য ডাউটও যায়নি সাকিবের পক্ষে। ফলে ব্যাটার সাকিবের অবাক তো হবারই কথা। কমেন্ট্রি বক্স থেকেও ভেসে আসছিল অবাক হওয়া সুরই। এছাড়া ইনিংস ব্রেকেও সাকিবের আউটের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল শাদাব খানের কাছে। তিনি বলেন, ‘আম্পায়ার এটা আউট দিয়েছে, তো এটা আউট।’

ভারতের ক্রিকেট বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া টুইটারে লিখেছেন, ‘সাকিবের ব্যাটটা মোটেও মাটি ছোঁয়নি। ব্যাটের ছায়ার দিকে মনোযোগ দিন। স্পাইক ছিল তখন। বলের ব্যাটে আঘাত করা ছাড়া অন্য কিছুই হতে পারে না। বাংলাদেশ বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হল।’

এছাড়া সাকিবের এমন আউটের পর চুপ থাকতে পারেননি বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও। তিনি নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একেবারে জঘন্য সিদ্ধান্ত…। গো টু হেল ম্যান।’

এর আগে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেও আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই ম্যাচে বিরাট কোহলির ফেক ফিল্ডিং নিয়ে হয়েছিল অনেক আলোচনা-সমালোচনা। আর আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেও ভুল আম্পায়ারিং এর শিকার হল বাংলাদেশ। অথচ এই ম্যাচ জিতলে সেমিফাইনাল খেলতে পারত সাকিবরা।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link