অভিষেকের পর থেকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপের শিকার হওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত ২০২২ সালের শেষদিকে পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, চলতি বছর তিনি হয়ে উঠেছেন দেশের সবচেয়ে ইনফর্ম ব্যাটসম্যান; রান করেছেন বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের সাথে পাল্লা দিয়ে।
স্বাভাবিকভাবেই, ভারত বিশ্বকাপে তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল একটু বেশি। কিন্তু সেই প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হবে তা নিয়ে সংশয় জেগেছে ইতোমধ্যে। এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচ খেলেছেন এই ব্যাটার; এখনি বিচার করাটা ভুল হবে। তবে তিনি যেমন পারফর্ম করছেন তাতে শঙ্কা তৈরি হয়েছে; তবে কি বিশ্বকাপের চাপ নিতে পারছেন না এই তরুণ ক্রিকেটার?
প্রথম ম্যাচেই ফিফটি করেছিলেন নাজমুল শান্ত, শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে দল জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। যদিও তাঁর রান তোলার গতি সন্তোষজনক ছিল না, পঞ্চাশ রানে পৌঁছাতে ৮০ বল লেগেছিল। ফলে নেট রান রেট বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের।
রয়ে সয়ে হলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে রান পেয়েছিলেন এই বাঁ-হাতি। পরের দুই ম্যাচে তাও হয়নি; শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রানের পাহাড় টপকে যাওয়ার সময় দলের বড্ড প্রয়োজন ছিল তাঁকে, কিন্তু ডাক মেরে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান তিনি। অথচ লিটন দাসকে সেদিন সঙ্গ দিতে পারলে অন্তত লড়াইটা করতে পারতো টিম টাইগার্স।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও একই চিত্র, মাত্র সাত রানেই আউট হয়েছেন নাজমুল শান্ত। পার্ট টাইমার গ্লেন ফিলিপসের প্রথম বলেই শর্ট কভারে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি – সবমিলিয়ে বলা যায়, বৈশ্বিক আসরে এখনো পাশ মার্ক তুলতে পারেননি এই তারকা। কিন্তু লিটনকে নিয়ে যতটা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে সেটা শান্তকে নিয়ে হচ্ছে না।
তামিম ইকবাল বিহীন টপ অর্ডারে যাদের দায়িত্ব নেয়ার কথা তারা দুজনেই ব্যর্থ হচ্ছেন বড় মঞ্চে, তবে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া আপাতত ডানহাতিকে ঘিরেই। যদিও দুই স্টাইলিশ ব্যাটারেরই এই বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান প্রায় কাছাকাছি।
অবশ্য সেটার কারণও আছে, পুরো বছর জুড়েই ধারাবাহিকতার প্রতীক হয়ে ছিলেন শান্ত। ঠিক বিপরীত ভূমিকায় ছিলেন লিটন, তাই তো দলের ‘নাম্বার থ্রি’ ব্যাটারের প্রতি একটু সহনশীলতা দেখাচ্ছে দেশের ক্রিকেট সমর্থকেরা। যদিও রানে ফিরতে না পারলে সেটা বেশিদন থাকবে না, বিশ্বকাপে রান করতে না পারলে আসলে অন্য কিছু মনে রাখবে না কেউই।