ব্যাটারদের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বোলাররা রীতিমত অসহায়- এটাই যেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের চিরন্তন চিত্র। বর্তমানে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে, পিচ আর প্লেয়িং স্টাইল আমূল বদলে যাওয়ার দরুণে বোলারদের আসলে কিছু করার থাকে না। তাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বোলারদের নামের পাশে ‘খরুচে’ শব্দটা স্বাভাবিক ভাবেই ধরা হয়। তবে নিজেদের দিনে বোলারদের আগ্রাসনে আবার ব্যাটারদের নাকানি চুবানির খাওয়ার দৃশ্যও ক্রিকেট ইতিহাসে আছে।
খুব বেশি দিন আগের কথা না। ২০২২ এর এবারের বিগব্যাশের একটি ম্যাচের দৃশ্যপটে ফিরে তাকালেই হয়। সিডনিতে নিজেদের মাটিতে সিডনি থান্ডার মুখোমুখি হয়েছিল অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের সাথে। আর এ ম্যাচেই অ্যাডিলেডের দেওয়া ১৪০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৫ রানেই সবকটি উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল সিডনি থান্ডার। তাদের সেই দলীয় ইনিংসের স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র ৩৫ বল। যা বল, ওভার কিংবা রানের দিক দিয়ে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বনিম্ন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এর আগে সর্বনিম্ন ইনিংসের বিব্রতকর রেকর্ডে নাম লিখিয়েছিল তুরস্ক। মূলত ক্রিকেটের এই সবচেয়ে ক্ষুদ্র সংস্করণের ক্ষুদ্র সব দলীয় ইনিংসের ইতিবৃত্ত জানাতেই খেলা-৭১ এর আজকের এই আয়োজন। চলুন সিডনি থান্ডারের আগে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সেই সব ছোট ইনিংসগুলো দেখে নেওয়া যাক।
- তুরস্ক (২১ রান)
২০১৯ সালের ৩০ আগস্টে একটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল তুরস্ক আর চেক রিপাবলিক। ক্রিকেট মানচিত্রে এমনিতে এ দুই দলের ইতিহাস তেমন নেই বললেই চলে। তবে এ ম্যাচের মাধ্যমে দারুণ সব রেকর্ডে নাম লিখিয়েছিল এ দুই দল।
প্রথমত ২৭৮ রানের পাহাড়সম এক দলীয় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল চেক রিপাবলিক। যা এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ রানের দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড। তবে এমন এক রেকর্ডের দিনেই আবার প্রতিপক্ষ তুরস্ক ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে। ২৭৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তারা মাত্র ২১ রানেই গুটিয়ে যায়। যা সে সময় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়েছিল।
- তুরস্ক (৩২ রান)
সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড তালিকায় পরের নামটাও তুরস্কের। ২১রানে অলআউট হওয়ার ঠিক পরের দিনই আবার ৩২ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। এবার তাদের প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রিয়া। একই মাঠ, একই চিত্র। তবে ভিন্নতা হলো, তুরস্ক সেদিন প্রথম ব্যাট করতে নেমেছিল। আর তাদের ইনিংসের স্থায়ীত্ব ছিল ৫৩ টি বল।
- মোহামেডান (৪৫ রান)
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশেরও একটি ঘরোয়া ক্লাব। ২০১৩ সালে সিলেটে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০৪ রানের এক বিশাল সংগ্রহ গড়েছিল প্রাইম ব্যাংক। সে ম্যাচে ৬৩ বলে ১০৫ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেছিলেন এনামুল হক।
তবে, প্রাইম ব্যাংকের দেওয়া সে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৪৫ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল মোহামেডান। আর মোহামেডানের এমন ব্যাটিং ধ্বসের পিছনে মূল ত্রাস হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেদিন মোহামেডেন বিপক্ষে তিনি একাই নিয়েছিলেন ৬ উইকেট।
- রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু (৫১ রান)
এই তালিকায় ৫ নম্বর নামটা বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর। ২০১৭ সালে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ১৩১ রানের টার্গেটে তারা মাত্র ৪৯ রানেই অলআউট হয়ে যায়। তাদের ইনিংসের স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র ৫৮ বল। তখন পর্যন্ত যেটি ছিল দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের ইনিংস।