বড় ম্যাচের ‘ছোট্ট’ সমাপ্তি

কিন্তু অনেক সময় কোনো কোনো ম্যাচে ১০০-১৫০ ওভারের মধ্যে শেষ হয়। বছর কয়েক আগে যেমন আহমেদাবাদে হয়েছে, এবার আবুধাবিতেও সেই সেই একই চিত্র দেখা গেল ২০২১ সালে। আহমেদাবাদে দুই দিনেরও কম সময়ে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল ভারত, এবার আফগানিস্তানকে আবুধাবিতে দুই দিনের মধ্যে হারালো জিম্বাবুয়ে। এমন সংক্ষিপ্ত কিছু ম্যাচ নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন।

ক্রিকেটের সবচেয়ে পুরাতন সংস্করণ হলো টেস্ট ক্রিকেট। অনেক ক্রিকেট সমর্থক এবং সমালোচকরা বলেন ক্রিকেটের শুদ্ধতম সংস্করণ হলো টেস্ট ক্রিকেট। ক্রিকেটারদের দক্ষতা, ক্রিকেট মস্তিষ্ক বোঝার একমাত্র জায়গা হলো বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেট।

ক্রিকেটের সকল ঐতিহ্য লুকায়িত অবস্থায় অবস্থায় আছে টেস্ট ক্রিকেটে। শুরুর দিকে টেস্ট ক্রিকেট মানে ছিলো দীর্ঘ সময়ের একটা খেলা। ম্যাচের ফলাফল না আসা পর্যন্ত ম্যাচ চলতে থাকবে। এখন যেমন প্রতি ওভারে ছয় বল হয়, তখন ওভারের দৈর্ঘ্য টাও ছিলো বেশি। আট বলে ওভার হিসেবে গণ্য করা হত।

এখন সময়ের সাথে সাথে কিছু নিয়মের বেড়াজালে টেস্ট ক্রিকেটকে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এখন আর অনন্ত সময়ের জন্য কোনো টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করে রাখা হয় না। সাথে প্রতি ওভারে এখন আর আট বল করা হয় না। এখন টেস্ট ম্যাচ করা হয় পাঁচ দিনের, ম্যাচের ফলাফল আসুক কিংবা না আসুক পাঁচ দিনেই টেস্ট ম্যাচ শেষ করতে হবে। পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচে প্রায় ৪৫০ ওভার খেলা হয়ে থাকে।

কিন্তু অনেক সময় কোনো কোনো ম্যাচে ১০০-১৫০ ওভারের মধ্যে শেষ হয়। কিন্তু অনেক সময় কোনো কোনো ম্যাচে ১০০-১৫০ ওভারের মধ্যে শেষ হয়। বছর কয়েক আগে যেমন আহমেদাবাদে হয়েছে, এবার আবুধাবিতেও সেই সেই একই চিত্র দেখা গেল ২০২১ সালে। আহমেদাবাদে দুই দিনেরও কম সময়ে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল ভারত, এবার আফগানিস্তানকে আবুধাবিতে দুই দিনের মধ্যে হারালো জিম্বাবুয়ে। এমন সংক্ষিপ্ত কিছু ম্যাচ নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন।

  • দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া, ১৯৩২ (৬৫৬ বল)

১৯৩২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ছোটো টেস্ট ম্যাচ হয়। এই ম্যাচের স্থায়ীত্ব ছিলো মাত্র ৬৫৬ বল। এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩২ রানে অল আউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫৩ রান গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসে আবারো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৪৫ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। আর এই ম্যাচের স্থায়ী ছিলো মাত্র ৬৫৬ বল।

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ইংল্যান্ড, ১৯৩৫ (৬৭২ বল)

ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ক্রিকেট বিশ্ব সাক্ষী হয়েছিলো দুইবার ১০০ এর কম রানে ইনিংস ঘোষণার। কিন্তু এই ম্যাচে ১০০ এর বেশি রান হয়েছিলো মাত্র এক ইনিংসে।

প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০২ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর জবাবে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে ৮১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ উইকেটে ৫১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। আর ছোটো লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড।

এই ম্যাচের ফল পেতে দুই দলকে খেলতে হয়েছিলো মোট ৬৫৬ বল।

  • ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া, ১৮৮৮ (৭৮৮ বল)

এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ম্যানচেস্টারে। এই ম্যাচে ইংল্যান্ড ম্যাচ জিতে নেয় ইনিংস এবং ২১ রানে। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ১৭২ রানে অলআউট হয়। অপরদিকে দুই ইনিংসে ৮১ এবং ৭০ রান করে অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচের ফলাফল পেতে খেলতে হয় মাত্র ৭৮৮ বল।

  • ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া, ১৯৮৮ (৭৯২ বল)

এই ম্যাচ ছিলো লর্ডসে। এই ম্যাচ উপরের বর্ণিত সিরিজের ম্যাচ। এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে মাত্র ১১৬ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে মাত্র ৫৩ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে ব্যাটিং বিপর্যইয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। তারা করে মাত্র ৬০ রান। ১২৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪৭ ওভারে ৬২ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া।

এই ম্যাচের ফলাফল পেতে মাত্র ৭৯২ বল খেলতে হয় দুই দলকে।

  • দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড, ১৮৮৯ (৭৯৬ বল)

কেপ টাউনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে সফরকারী ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৯২ রান অলআউট হয়। জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে দুই ইনিংসে করে ৪০ এবং ৪৩ রান। এই ম্যাচে ইংল্যান্ড জয় লাভ করে ইনিংস এবং ২০২ রানে। ফলাফল পেতে দুই দলকে খেলতে হয় ৭৯৬ বল।

  • ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯১২ (৮১৫ বল)

ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ওভালে। একটি ত্রিদেশীয় টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিলো ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকা কোনো ইনিংসেই ১০০ রানের বেশি করতে পারেনি। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে সংগ্রহ করে ১৭৬ রান। দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ডকে জেতার জন্য লক্ষ্য দেয় মাত্র ১৩ রানে। ৪.৩ রানে এই লক্ষ্যে যায় ইংল্যান্ড। এই ম্যাচের ফলাফল পেতে দুই দলকে খেলতে হয় ৮১৫ বল।

  • ভারত বনাম ইংল্যান্ড, ২০২১ (৮৪২ বল)

ভারত-ইংল্যান্ডের মধ্যকার এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ভারতে আহমেদাবাদে।  টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ১১২ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। জবাবে ১৪৫ রানে অলআউট হয় ভারত। জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৮১ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ৪৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৭.৪ ওভারে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। এই ম্যাচের ফলাফল পেতে মাত্র ৮৪২ বল খেলতে হয় দুই দলকে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...