টিকিটাকার স্প্যানিশ গোল উৎসব

মুহুর্মুহু আক্রমণে দিশেহারা কোস্টারিকার রক্ষণভাগ। ম্যাচের ১১ মিনিটের মাথায় ফরোয়ার্ড ড্যানি ওলমো বোকা বানান কেইলর নাভাসকে। অভিজ্ঞ এই গোলরক্ষক বলটি প্রতিহত করবার সুযোগই যেন পাননি। আলতো চিপ শটে বিশ্বকাপের মঞ্চে স্পেনের ১০০ তম গোলটি আদায় করে নেন ওলমো। সেখানেই থেমে থাকেনি স্পেন। নিজেদের উপস্থিতি আর আধিপত্য জানান দেওয়ার কোনরকম সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ স্প্যানিশরা।

উত্তেজনায় ঠাসা এবারের বিশ্বকাপ। সত্যিকার অর্থে ফেভারিট যেন কেউই না। আর্জেন্টিনা সম্মুখীন হয়েছে অঘটনের। এরপরে সে তালিকায় নাম লিখিয়েছে জার্মানি। বড় দল, ফেভারিট দল, এসব মোটেও খুব একটা কাজে আসছে না। প্রতিটা দলই এক অপার্থিব উন্মাদনায় উজ্জীবিত। তাইতো তথাকথিত বড় দলগুলোর সবাই মোটামুটি রয়েছে বিপাকে। নিজেদের প্রথম ম্যাচের আগে নিশ্চয়ই স্পেনও খানিকটা ভয় নিয়েই মাঠে নামার কথা।

কিন্তু লুইস এনরিকে টোটকারা ঠিকঠাক দিয়ে পাঠিয়েছিলেন স্প্যানিশদের। তাঁর প্রতিফলনও ঘটেছে মাঠের ফুটবলে। কোস্টারিকার বিপক্ষে গ্রুপ ই-এর দ্বিতীয় ম্যাচে সার্জিও বুসকেটসের সতীর্থরা দাপট বিস্তারেই ব্রত হয়ে মাঠে নামে। স্প্যানিশ পজিশন ফুটবল খেলবার সুফলটা পেতেও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি।

মুহুর্মুহু আক্রমণে দিশেহারা কোস্টারিকার রক্ষণভাগ। ম্যাচের ১১ মিনিটের মাথায় ফরোয়ার্ড ড্যানি ওলমো বোকা বানান কেইলর নাভাসকে। অভিজ্ঞ এই গোলরক্ষক বলটি প্রতিহত করবার সুযোগই যেন পাননি। আলতো চিপ শটে বিশ্বকাপের মঞ্চে স্পেনের ১০০ তম গোলটি আদায় করে নেন ওলমো। সেখানেই থেমে থাকেনি স্পেন। নিজেদের উপস্থিতি আর আধিপত্য জানান দেওয়ার কোনরকম সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ স্প্যানিশরা।

প্রথমার্ধেই ব্যবধান ৩-০ শূন্য করে ফেলে একবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। প্রথম গোলের মিনিট দশেক বাদেই স্কোরশিটে নাম তোলেন মার্কো অ্যাসেনসিও। জর্ডি আলবার করা লো ক্রসে আসা বলটাকে জালের ঠিকানায় পাঠান রিয়াল মাদ্রিদের তারকা এই ফুটবলার। দলের আক্রমণভাগের দুই খেলোয়াড় গোল পেয়েছেন। তবে ফেরান তোরেসের নামটি ওঠেনি গোলের খাতায়।

সময় সেখানেও বেশি প্রয়োজন পড়েনি। স্প্যানিশদের পজিশন ফুটবল আর ক্রমাগত আক্রমণে বেগতিক দশা কোস্টা রিকার রক্ষণের। আর দিকহীন রক্ষণ করে বসে আরেক ভুল। এবার ভুলের সুযোগটা তুলে দেওয়া হল তোরেসের কাঁধে। স্পটকিক থেকে গোল করা যে একেবারেই সহজ কর্ম তেমনটাও নয়। আগের রাতেই এই সময়ের ধুরন্ধর স্ট্রাইকার রবার্ট লেওয়ান্ডস্কি মেক্সিকোর বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করেছেন। তবে তোরেস মিস করলেন না।

স্পটকিক থেকে নিশানাভেদ। স্প্যানিশদের জয়ের ভীতটা প্রথমার্ধে গড়ে নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল। রেড ফিউরিদের গোল উৎসব থেমে থাকেনি দ্বিতীয়ার্ধেও। দ্বিতীয় দফা গোলের ঠিকানা খুঁজে পেলেন তোরেস। ক্যারিয়ারের ১৫তম গোলটি তিনি আদায় করে নিলেন বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে। যথারীতি ভঙ্গুর ডিফেন্সের সামনে অসহায় কেইলর নাভাস।

ম্যাচের ৭৪ মিনিটে তরুণ গাভি বনে যান বিশ্বকাপে স্পেনের সর্বকনিষ্ঠ গোলস্কোরার। আউটার ফুটের করা গোলটা স্রেফ উড়িয়ে দেয় কোস্টারিকাকে ম্যাচ থেকে। অবশ্য কোস্টারিকা ম্যাচে ছিলই না কখনো। স্পেনের গোল মহোৎসবে একবারের জন্যেও গোলমুখ শট চালাতে পারেনি কোস্টারিকা। বরং ম্যাচের শেষ দিকে আরও দুই খানা গোল হজম করে নাভাসের দল। আলভারো মরাতার সাথে কার্লোস সোলারও স্কোরশীটে নিজেদের নাম তোলেন।

আর ৭-০ গোলের বিশাল জয় নিয়ে টেবিলের শীর্ষ্যস্থান নিজেদের দখলে নেয় লা রোজারা। বিশ্বকাপের মঞ্চে এটাই স্প্যানিশদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। অন্যদিকে ১৯৭৫ সালের পর আরও এক দফা ৭-০ ব্যবধানের পরাজয় গ্লানি কাঁধে মাঠ ছাড়ে উত্তর আমেরিকার দলটি। নিজেদের টিকিটাকা ফুটবলের সৌন্দর্য আরও একটিবার তুলে ধরলেন এনরিকের শীর্ষ্যরা। ১০৮৩টি পাস খেলেছে লা রোজা বাহিনী। একটা প্রলয়ংকর বার্তাই দিয়ে রাখলো এক বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...