রিঙ্কু সিংয়ের ব্যাটিং ঝড় উঠেছিল এ দিনেও। তার আগে দলের অধিনায়ক নিতিশ রানাও অসম্ভব সমীকরণের পথে হেঁটেছিলেন। তবে দিনশেষে হ্যারি ব্রুকের সেঞ্চুরি আর হায়দ্রাবাদের রানপাহাড়ের কাছেই ম্লান হয়েছে সব। ঘরের মাটিতে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের কাছে ২৩ রানে হেরেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ম্যাচের আগে একাদশে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনার কথা শোনা গেলেও এ দিন কলকাতার একাদশে ঠাই হয়নি লিটন দাসের।
কলকাতার ইডেন গার্ডেনে এ দিন টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন কলকাতার অধিনায়ক নিতিশ রানা। তবে অধিনায়কের সে সিদ্ধান্তের যথাযথ প্রতিদান দিতে পারেননি বোলাররা। ইনিংসের শুরু থেকেই হায়দ্রাবাদের দুই ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল আর হ্যারি ব্রুকের ব্যাটিং তোপের মুখে পড়েন উমেশ যাদবরা।
আন্দ্রে রাসেল যদিও এ দিন বোলিংয়ে এসে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন। ফিরিয়েছিলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল আর রাহুল ত্রিপাঠিকে। তবে হ্যারি ব্রুকের সাথে পরবর্তীতে এইডেন মারক্রামের জুটিতে আবারো দারুণ ভাবে ম্যাচে ফিরে আসে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ।
এ দুই ব্যাটারের জুটি থেকে আসে ৭২ রান। এর মধ্যে দুজনেই তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। অধিনায়ক মারক্রাম ২৬ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নিলেও ইনিংসের শেষ পর্যন্ত উইকেটে ছিলেন হ্যারি ব্রুক। ইংলিশ এ ব্যাটার ফিফটি পূরণের পর হাঁটেন সেঞ্চুরির পথেও।
শেষ পর্যন্ত ৫৫ বলে পেয়ে যান সেঞ্চুরিও। ১২ চার আর ৩ ছক্কায় সাজানো ১০০ রানের এ ইনিংসের মধ্য দিয়ে আইপিএল ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন ইংলিশ এ ব্যাটার। হ্যারি ব্রুকের এমন ঝড়ো সেঞ্চুরির দিন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদও পায় ২০০ পেরোনো স্কোর। নির্ধারিত ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে তাঁরা যোগ করে ২২৮ রানের পাহাড়সম এক সংগ্রহ।
হায়দ্রাবাদের দেওয়া ২২৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ইনিংসের প্রথম ওভারেই কোনো রান না করেই ভূবনেশ্বর কুমারের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান রহমানুল্লাহ গুরবাজ। এরপর ২০ রানের ব্যবধানে কলকাতা হারিয়ে ফেলে আরো দুটি উইকেট।
ভেঙ্কটেশ আইয়ার ১০ রানে ফিরে যাওয়ার পর এ দিন আগে ব্যাট করতে এসে শূন্য রানেই আউট হন সুনীল নারাইন। নারাইনের মতো একই পথে হেঁটেছেন আন্দ্রে রাসেলও। মারকান্দের বলে আউট হওয়ার আগে যোগ করতে পারেন মাত্র ৩ রান। ওপেনিংয়ে নামা নারায়ণ জগদীশান যদিও বা একটু পথ দেখাচ্ছিলেন, তবে তিনিও আটকে যান ব্যক্তিগত ৩৬ রানে।
৯৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কলকাতার ম্যাচ জয়ের আশা কার্যত তখনই শেষ। তবে হায়দ্রাবাদের বোলিং তোপের সামনে কিছুটা প্রতিরোধ গড়তে শুরু করেন অধিনায়ক নিতিশ রানা আর রিঙ্কু সিং। প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠা সমীকরণ টপকানোর পথে হেঁটেছিলেন নিতিশ রানা। সেই যাত্রায় মাত্র ২৫ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। শেষ পর্যন্ত ৫ চার আর ৬ ছক্কায় ৪১ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন এ ব্যাটার।
তবে নিতিশের এই ইনিংসও শেষ পর্যন্ত ম্যাচজয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। মূলত আস্কিং রেটের চাপেই কলকাতা আর পেরে ওঠেনি। তবে নিতিশের বিদায়ের পরও জয়ের পথে চোখ রেখেছিলেন রিঙ্কু সিং। আগের ম্যাচে শেষ ৫ বলে ৫ ছক্কা মেরে দলকে জয় এনে দেওয়া এ ব্যাটার এ দিন ২৭ বলে ফিফটি তুলে নিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু শেষ ওভারে ৩২ রানের সমীকরণ টপকে আর দলকে জয় এনে দিতে পারেননি। নির্ধারিত ২০ ওভারে কলকাতার ইনিংস শেষ হয় রানে।