শেষ বেলায় তারার মেলা বিপিএলে

পাকিস্তানি ক্রিকেটাররাও একে একে চলে যেতে শুরু করেছেন। পিএসএল খেলার জন্য বিপিএলের পরের অংশ খেলা হচ্ছে না কোনো পাকিস্তানির। এতে করে বিপিএলের শেষ দিকে রঙ হারানোর একটা শঙ্কা দেখা গিয়েছিল ঠিকই। তবে কোয়ালিফায়ার, এলিমিনিটরে অংশ নেওয়া ৪ দল ঠিকই রিপ্লেসমেন্ট খোঁজার কাজে ব্যস্ত থেকেছে। তাতে অবশ্য বিপিএলেরই লাভ হয়েছে। শেষের দিকে এসে বেশ কিছু তারকা ক্রিকেটারকে দেখা যাবে বিপিএলে। 

আর চার ম্যাচ, চার দলের লড়াই। প্রায় এক মাস ধরে চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এখন শেষ মহারণের অপেক্ষায়। আর কয়েকদিন বাদেই দেখা মিলবে নবম আসরের চ্যাম্পিয়ন দলকে।

ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস কি পারবে শিরোপার মুকুট ধরে রাখতে? কিংবা দ্বিতীয় বারের মত শিরোপা জিতবে রংপুর রাইডার্স? নাকি নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন দল দেখবে এবারের বিপিএল? – এ সব প্রশ্নের উত্তরের জন্য শুধু আরো কয়েকটা দিনের অপেক্ষা।

এবারের বিপিএল ছিল দেশিদের প্রমাণ করার একটি মঞ্চ। সেই মঞ্চে অনেকেই আলো ছড়িয়েছেন। আবার অনেকেই প্রত্যাশা না মেটাতে পেরে আক্ষেপের কারণ হয়েছেন। তবে একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বিদেশি তারকা ক্রিকেটারদের উপস্থিতি অনেকাংশেই জৌলুশ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এবারের বিপিএলে ঠিক তেমনটা হয়নি।

একই সময়ে আরো দুটি লিগ হওয়ায় মানসম্মত বিদেশিদের পাওয়া যায়নি। তবে পুরো বিপিএলে অন্তত কিছুটা রঙ এসেছে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সুবাদে। মোহাম্মদ আমির থেকে শুরু করে ইমাদ ওয়াসিম, আজম, ওয়াহাব রিয়াজ, নাসিম শাহ, খুশদিল শাহ, হাসান আলীর মত পরীক্ষিত পারফর্মাররা এবারের বিপিএল খেলতে এসেছিলেন। তাই অন্যান্য দেশের ক্রিকেটারদের অভাব বেশ ভাল ভাবেই ঘুচিয়েছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা।

কিন্তু সেই পাকিস্তানি ক্রিকেটাররাও একে একে চলে যেতে শুরু করেছেন। পিএসএল খেলার জন্য বিপিএলের পরের অংশ খেলা হচ্ছে না কোনো পাকিস্তানির। এতে করে বিপিএলের শেষ দিকে রঙ হারানোর একটা শঙ্কা দেখা গিয়েছিল ঠিকই।

তবে কোয়ালিফায়ার, এলিমিনিটরে অংশ নেওয়া ৪ দল ঠিকই রিপ্লেসমেন্ট খোঁজার কাজে ব্যস্ত থেকেছে। তাতে অবশ্য বিপিএলেরই লাভ হয়েছে। শেষের দিকে এসে বেশ কিছু তারকা ক্রিকেটারকে দেখা যাবে বিপিএলে।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে এবারের বিপিএলে খেলেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, খুশদিল শাহ্‌। কুমিল্লাকে প্রথম কোয়ালিফায়ারে নিশ্চিত করেই তারা বাংলাদেশ ছেড়েছে। কুমিল্লাও তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে রিপ্লেসমেন্ট ঠিক করে রেখেছিল। যতদূর জানা গিয়েছে, কুমিল্লার হয়ে খেলতে এরই মধ্যে বাংলাদেশে পা রেখেছেন ইংলিশ অলরাউন্ডার মইন আলী।

গুঞ্জন আছে, মোহাম্মদ রিজওয়ানের জায়গায় আসতে পারেন প্রোটিয়া ব্যাটার ফাফ ডু প্লেসিস। ডু প্লেসিস অবশ্য গত বিপিএলেও এই কুমিল্লার হয়েই খেলেছিলেন। কুমিল্লা অবশ্য চমক দিয়েছে ম্যাচ দুয়েক আগেই। নাসিম শাহ্‌ চলে যাওয়ার পর তারা দলে ভিড়িয়েছে দুই ক্যারিবিয়ান আন্দ্রে রাসেল আর সুনীল নারাইনকে।

ফরচুন বরিশালের অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিলেন পাকিস্তানের ইফতিখার আহমেদ। কিন্তু পিএসএল খেলার জন্য তিনিও চলে গেলে কিছুটা বিপদেই পড়ে যায় বরিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজি। অবশ্য রিপ্লেসমেন্ট হিসেবেও দিয়ে তাঁরা বেশ বড় চমক। এলিমিনিটর ম্যাচের আগেই তাঁরা দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে দলে ভিড়িয়েছে।

এ ছাড়া বড় চমক হিসেবে আসছেন ইংল্যান্ডের পেসার রিকি টপলি। আর এর মধ্যেই বরিশালের হয়ে খেলার জন্য বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছেন শ্রীলঙ্কার ভানুকা রাজাপাকসে। গুঞ্জন ছিল, কাইরন পোলার্ড কিংবা ডোয়াইন ব্রাভো বরিশালের হয়ে খেলতে পারেন। তবে এখন পর্যন্ত তা গুঞ্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে।

পাকিস্তানিদের চলে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় রংপুর রাইডার্স। তবে সেখান থেকে উত্তরণের পথ অবশেষে খুঁজে পেয়েছে দলটি। এর মধ্যেই ইনফর্ম রহমানুল্লাহ গুরবাজ আর নাভিন উল হককে তারা দলে ভিড়িয়েছে। এ ছাড়া এলিমিনিটর ম্যাচ খেলার জন্য এরই মধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন আফগান লেগ স্পিনার মুজিব উর রহমান আর শ্রীলঙ্কার দাসুন শানাকা।

রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে বিদেশি ক্রিকেটার দলে ভেড়ানোর দিক দিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্স কিছুটা পিছিয়েই রয়েছে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কোয়ালিফায়ারে ওঠা দলটা পরের ম্যাচে মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিমকে পাচ্ছে না। তবে দলটার প্রধান শক্তি হচ্ছে দেশি খেলোয়াড়দের ধারাবাহিক ছন্দ।

শান্ত এবং তোহিদ হৃদয়, দুজনই রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। এ ছাড়া জাকির হাসানও এবারের বিপিএলে বেশ কয়েকটা ম্যাচে দারুণ সব ইনিংস খেলেছেন। শুরুর অফফর্ম পরে এসে কাটাতে পেরেছেন মুশফিকুর রহিমও। তাই দেশিদের নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় দলটা।

যদিও বিকল্প বিদেশিরাও পিছিয়ে নেই। এর মধ্যেই তারা আফগান অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব আর লঙ্কান পেসার ইসুরু উদানাকে দলে ভিড়িয়েছে। কলিন অ্যাকারম্যানও রয়েছেন দলে। তাই শেষ দিকে তেমন তারকা ক্রিকেটার ভেড়াতে না পারলেও ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী দলটা।

সব কিছু ঠিক থাকলে বিপিএলের শেষ দিন গুলোতে নামী বিদেশি ক্রিকেটাররা মিরপুরের মাঠ মাতাতে যাচ্ছে। সেটা হোক কম সময়ের জন্য। তবে বিপিএলের শেষের সময়ে এটাই বা কম কী! রিকি টপলির গতির ঝড়, মুজিব উর রহমানের স্পিন ঘূর্ণি, আন্দ্রে রাসেলদের তাণ্ডব- এসব কিছু মিলে বিপিএলের শেষটা হতে যাচ্ছে এক কথায় দুর্দান্ত। অন্তত পাকিস্তানিদের অনুপস্থিতিতে বিপিএলের শেষটা তো আর নিরুত্তাপে শেষ হচ্ছে না।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...