বার্সেলোনা: ‘গুড কপ, ব্যাড কপ’-এর খেলা

ঐতিহাসিক ক্লাব থেকে অধ:পতনের মুখে- এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া ইউরোপিয়ান ক্লাবের সংখ্যা নেহায়েতই কম নয়। তবে এই তালিকায় যে বার্সেলোনার নাম একটা সময় উচ্চারিত হবে- সেটা বোধহয় কেউ কল্পনাতেও আনেননি। অথচ ১০ বছর আগের বার্সেলোনা রীতিমত একটা সাম্রাজ্য তৈরি করেছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে, সেই একক সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি হয়েছে বছর খানেক আগেই। অন্ত:সারশূন্য এক ক্লাবে পরিণত হয়েছে বার্সা। 

ঐতিহাসিক ক্লাব থেকে অধ:পতনের মুখে- এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া ইউরোপিয়ান ক্লাবের সংখ্যা নেহায়েতই কম নয়। তবে এই তালিকায় যে বার্সেলোনার নাম একটা সময় উচ্চারিত হবে – সেটা বোধহয় কেউ কল্পনাতেও আনেননি।

অথচ ১০ বছর আগের বার্সেলোনা রীতিমত একটা সাম্রাজ্য তৈরি করেছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে, সেই একক সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি হয়েছে বছর খানেক আগেই। অন্ত:সারশূন্য এক ক্লাবে পরিণত হয়েছে বার্সা।

এমন অধ:পতনের দায়টা দ্বিধাহীনভাবেই বোর্ডের। সমর্থকদের তোপে কিংবা বাইরের চাপে একটা সময় বার্তামেও বোর্ডের পতন ঘটে। তারপর থেকে একটা উত্তরণের পথে এগোচ্ছে ক্লাবটা।

নতুন প্রেসিডেন্ট হুয়ান লাপোর্তার হাত ধরে আবারো উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বার্সেলোনা। অবশ্য এখনও বলার মত সাফল্য এসে ধরা দেয়নি। তবে সেই পথেই আছে স্পেনের এ ঐতিহাসিক ক্লাবটা।

লাপোর্তা বোর্ডে আসার পর তাঁকে নিয়ে প্রথম সমালোচনা ছিল, কেন তিনি মেসিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য ছিলেন। কিন্তু সে সময় বোর্ড আসলেই নিরুপায় ছিল।  মেসিকে না ছেড়ে দিলে আর্থিক নিয়মবিধিতে আটকে যেত বার্সা। তাই এক প্রকার ক্লাবের স্বার্থেই তাদের ইতিহাসের সেরা তারকাকে ছেড়ে দিতে হয়।

মেসির বিদায়ের পর ক্লাব ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়ায় গিয়েছে বার্সেলোনা। সাফল্য আসেনি। তবে দিন বদলের গানের একটা সুরের ইঙ্গিত ঠিকই পাওয়া যাচ্ছিল।

সেই যাত্রায় কিছুদিন আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে সুপার কাপের শিরোপা জিতেছে কাতালানরা। সেই সাফল্য ধরা দিচ্ছে লা লিগাতেও। এখন পর্যন্ত রিয়ালের চেয়ে ৮ পয়েন্টের স্পষ্ট ব্যবধানে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে বার্সেলোনা।

অবশ্য এত কিছুর পরেও এ বোর্ড যে শতভাগ স্বচ্ছ কিংবা নির্ভুল তা কিন্তু নয়। বিশেষ করে, এই বোর্ডের ডিরেক্টর এবং স্পোর্টিং ডিরেক্টর- দুজনের পরিকল্পনাই অনেকটা বিপরীতমূখী।

গত বছরের জুলাইয়ে স্পোর্টিং ডিরেক্টর হিসেবে বার্সায় যুক্ত হয়েছিলেন জর্দি ক্রুইফ। আর অনেক আগে থেকেই ক্লাবের ডিরেক্টর ছিলেন মাতেও আলেমনে। সমস্যাটা হচ্ছে, এ দুই জন ডিরেক্টরই ক্লাবে কাজ করছেন ভিন্ন দর্শনকে কেন্দ্র করে।

আলেমনে বরাবরই ক্লাবের অর্থ সাশ্রয় করার দিকে নজর দেন। আর তাঁর অন্যতম নেতিবাচক দিক হল, তিনি কোনো ফুটবলারকে দলে ভেড়ানোর জন্য কাজ শুরু করলে সময় খুব কম দেন।

তাতে চুক্তি সম্পন্ন না হলে, তিনি ঐ ফুটবলারের জন্য অপেক্ষা করেন কম। তাঁর বদলে খুব কম সময়ের মধ্যেই বিকল্প খোঁজা শুরু করেন। এ কারণে বার্সেলোনা বিগত বছরে অনেক ডিল মিস করেছে।  অবশ্য এ বছরে জুনেই আলেমনের মেয়াদ শেষ হবে।

আলেমনের ঠিক বিপরীত দর্শন জর্দি ক্রুইফের। ক্লাবের চেহারা বদলানোর জন্য তিনি মনে করেন, ক্লাবে আরো খেলোয়াড় ভেড়াতে হবে। সেই পরিকল্পনায় তাঁর হাত ধরেই ক্লাবে এসেছে রবার্ট লেওয়ানডস্কি, জুলস কুন্দে, আন্দ্রেস ক্রিস্টিয়ানসেন মতো দুর্দান্ত ফুটবলাররা।

আর জর্দি ক্রুইফ স্পোর্টিং ডিরেক্টর হিসেবে আসার পরই বার্সার চেহারা পাল্টাতে শুরু করেছে। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ বাদে কোপা দেল রে, লা লিগা- দুই শিরোপা রেসেই বেশ ভাল অবস্থানে আছে বার্সেলোনা। প্রায় অধ:পতনের মুখে ধাবিত হওয়া ক্লাব বার্সেলোনা একটু একটু করে আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...