ভিন্ন ভিন্ন পথে হয়ে দুটি দল এই পর্যন্ত এসে পৌছেছে। এই দুই দলের সবকিছুই ছিল ভিন্ন। পরিকল্পনা, শক্তির জায়গা কিংবা দুর্বলতা সবই আলাদা। তবে লম্বা পথ পারি দিয়ে দুটি দল এবার এক হয়েছে। টুর্নামেন্টে নিজেদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হবে তাঁরা। জিততে পারলে স্বপ্নের ফাইনাল আর হারলেই বিদায়। বলা হচ্ছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স ও রংপুর রাইডার্সের কথা।
ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে রংপুর শুরু থেকেই বেস গোছানো। তাঁরা দারুণ পরিকল্পনা করে দেশি-বিদেশী ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গড়েছে। বিদেশী ক্রিকেটাররাই তাঁদের বড় শক্তির জায়গা। এমনকি নিজেদের আলাদা অনুশীলনের জায়গাও ছিল দলটার। পুরো টুর্নামেন্টে তাঁরা অনুশীলন করেছে আলাদা, নিজেদের মত করে।
ওদিকে পুরোপুরি ভিন্ন চেহারা সিলেট স্ট্রাইকার্সের। তাঁদের পরিকল্পনা বলতে ছিলই শুধু এক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ফ্র্যাঞ্চাজিটি পুরোপুরি নির্ভর করেছে এই একটা মানুষের উপর। মাঠের ক্রিকেট তো বটেই মাঠের বাইরে। সিলেট স্পন্সর এনে দেয়ার কাজটাও তিনিই করে দিয়েছেন। ফলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মাশরাফি ছাড়া আর কোন পরিকল্পনাই ছিল না।
ওদিকে মাঠের ক্রিকেটে তাঁদের শক্তির জায়গাটাও আলাদা। এখানেও আরেকবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন মাশরাফি। দলের তরুণ ক্রিকেটারদের দারুণ ভাবে উজ্জিবীত করেছেন। আর লোকাল ক্রিকেটারদের পারফর্মেন্সেই এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দল তাঁরা।
রংপুর রাইডার্স এই পর্যন্ত এসেছে নানা চড়াই উৎরাই পারি দিয়ে। লম্বা টুর্নামেন্টে কখনো খারাপ সময় গিয়েছে, কখনো আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন নুরুল হাসান সোহানরা। তবে সিলেট স্ট্রাইকার্সের পথটা ছিল কেবলই সাফল্যে গাঁথা। লিগ পর্বে তাঁরা প্রায় অপ্রতিরোদ্ধ হয়ে উঠেছিল। টানা ম্যাচের পর ম্যাচ জিতেছে। লিগ পর্বের সেরা দল হিসেবেই প্লে অফ খেলতে এসেছে।
তবে কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সাথে হোঁচট খেয়েছে মাশরাফির দল। উল্টো দিকে রংপুর রাইডার্স বেশ আত্মবিশ্বাসী। ইলিমেনেটর ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেয়েছে তাঁরা। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই রংপুর মাঠে নামবে সিলেটের বিপক্ষে।
আগামীকাল সন্ধ্যায় কোয়ালিফায়ার দুইয়ে মুখোমুখি হবে রংপুর রাইডার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স। যে দল জিতবে তাঁরাই পৌছে যাবে বিপিএলের ফাইনালে। ওদিকে আগে থেকেই ফাইনাল নিশ্চিত করে রেখেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
ফলে এই দুই দলের লড়াইটা বেশ জমে উঠবে বলেই ধারণা করা যাচ্ছে। সিলেট স্ট্রাইকার্স এখনো ভরসা রাখছে তাঁদের লোকাল ক্রিকেটারদের উপরই। নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়রাই দলটার ট্রাম্পকার্ড। এছাড়া বিদেশি কোটায় খেলা ইসুরু উদানা, রায়ান বার্লের দিকেও তাকিয়ে থাকবে দলটা।
ওদিকে রংপুর রাইডার্সের শক্তির জায়গা তাঁদের বিদেশি ক্রিকেটাররা। প্লে অফের আফে দলে বেশ কয়েক বিদেশি ক্রিকেট যোগ করেছে তাঁরা। নিকোলাস পুরান, ডোয়াইন ব্রাভো, দাসুন শানাক, মুজিব উর রহমানরা খেলবেন এই দলটার হয়ে। বড় ম্যাচে এই বিদেশিদের দিকেই তাকিয়ে থাকবে দলটা।
যদিও ইলিমেনেটর ম্যাচে তাঁদের কেউই তেমন ভালো পারফর্ম করতে পারেনি। রংপুরের হয়ে সেদিন জ্বলে উঠেছিলেন লোকাল ব্যাটার শামীম পাটোয়ারি। এই ব্যাটারের একাই সামলেছেন ফরচুন বরিশালের ব্যাটিং লাইন আপ। তবুও বড় ম্যাচে তাঁদের ভরসা মুজিব, শানাকার। আর সিলেট তাকিয়ে ঘরের ছেলেদের দিকেই।