ভারত-নিউজিল্যান্ড ও বৃষ্টি বিলাস

এই নিয়ে দুইবার কোনো আইসিসি ট্রফি জয় করলো নিউজিল্যান্ড। দুইবারই ফাইনালে দেশটির প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। একটা তো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। তবে দ্বিতীয় ট্রফির কথা কী ঠিক মনে পড়ছে? ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কিউইরা।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করে অতিকায় ট্রফি হাতে দেশে পৌছেছে নিউজিল্যান্ড দল। ওদিকে ভারতও ফাইনালের ব্যাথা ভুলে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজকে সামনে রেখে। তবুও বহুল প্রতিক্ষিত চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের রেশ যেনো কাটছেন না। এখনো ক্রিকেটের এই অভিজাত ফরম্যাট নিয়ে মানুষের আগ্রহ অবাক করার মত। ফলে চায়ের কাপে উঠে আসছে দুই দলের ক্রিকেটীয় নানা সমীকরণ।

এই নিয়ে দুইবার কোনো আইসিসি ট্রফি জয় করলো নিউজিল্যান্ড। দুইবারই ফাইনালে দেশটির প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। একটা তো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। তবে দ্বিতীয় ট্রফির কথা কী ঠিক মনে পড়ছে? ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কিউইরা। সেবারও ফাইনালের দেশটির প্রতিপক্ষ ছিল ভারতই। আর এই দলের নক আউট ম্যাচ মানেই যেনো বৃষ্টির হানা।

ভারত কী তবে বড় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের প্রিয় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠলো। ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়েই শুরু করা যাক। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় আসরটি বসেছিল কেনিয়াতে। জিমখানা ক্লাব স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও নিউজিল্যান্ড। পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ ক্রিকেট খেলে ফাইনালে উঠেছিল সৌরভ গাঙ্গুলির ভারত। কোয়াটার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিল সৌরভরা।

টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক। ফলে ফাইনাল ম্যাচে ফেভারিটের তকমা নিয়েই মাঠে নামে ভারত। সৌরভ ও শচীনের ব্যাটে চড়ে শুরুটাও অসাধারণ হয়েছিল ভারতের। ওপেন করতে নেমে দুইজন মিলে করেন ১৪১ রানের বিশাল জুটি। শচীন ৬৯ রানে আউট হয়ে ফিরলেও সৌরভ খেলেছিলেন ১১৭ রানের ইনিংস। তবে এরপরে রাহুল দ্রাবিড়ের ২২ রান ছাড়া আর কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ফলে ভালো শুরু পেয়েও ২৬৪ রানেই থেমেছিল ভারতের ইনিংস।

ওদিকে নিউজিল্যান্ড ব্যাট করতে নেমে ৩৭ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে ফেললে জয়ের স্বপ্নই দেখতে থাকে ভারত। তবে ক্রিস কেয়ার্নসের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে শেষ ওভারে রোমাঞ্চকর জয় পায় নিউজিল্যান্ড। সেটিই ছিল নিউজিল্যান্ডের প্রথম কোনো আইসিসি ট্রফি জয়। ২১ বছর পর দেশটি আবার কোনো আইসিসি ট্রফি জয় করলো সেই ভারতের বিপক্ষেই।

এই দুই ফাইনালের মাঝে একটি সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। সেখানেও ছিল বৃষ্টির হানা। ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ধোনির রান আউট হয়ে ফেরার দৃশ্য নিশ্চই ভুলে যাননি। তবে সেই সেমিফাইনালের ফলাফলও এসেছিল দুই দিনে। নির্ধারিত ম্যাচের দিন নিউজিল্যান্ড ৩.৪ ওভার ব্যাটিং করার পরই বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। পরেরদিন রিজার্ভ ডেতে আবার মাঠে নামে এই দুই দল। সেবারও ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল নিউজিল্যান্ড।

নিউজিল্যান্ডের ভারত বধের সর্বশেষ কাব্যটি রচিত হলো সাউদাম্পটনে। কেন উইলিয়ামসনের পরিকল্পিত নিউজিল্যান্ড আবারো মুখোমুখি হলো বিরাট কোহলির দুরন্ত ভারতের সামনে। আগের দুবারের মত এবারও ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নেমেছিল ভারত। পুরো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই অসাধারণ ক্রিকেট খেলে সর্বোচ্চ ৫২০ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনাল খেলতে এসেছিল কোহলিরা। তবে এবারো সেই ব্যাটিং বিপর্যয় ভারতের।

বড় ম্যাচের চাপ সামলে স্বাভাবিক ব্যাটিংটা করতে আবারো ব্যর্থ হলেন ভারতের ব্যাটাররা। কোহলি, রাহানে কিংবা পূজারার মত পরীক্ষিত ব্যাটসম্যানরা নিজেদের উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসলেন। ওদিকে বড় ম্যাচে ভারত-নিউজিল্যান্ড মাঠে নামবে আর বৃষ্টি হবেনা তা কী হয় নাকি। এবারো বৃষ্টির আনাগোনায় টেস্ট ম্যাচের ফলাফল আসলো ষষ্ঠ দিনের শেষ সেশনে। এবং উইলিয়ামসন-টেলর জুটি আরো একবার ভারতকে জানিয়ে গেল যে বড় ম্যাচ জিততে পরিকল্পনাও দরকার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...