অফ ফর্মে তামিম ইকবাল, রান নেই ব্যাটে, দলে জায়গা পাওয়া উচিত নয় – কত কত সমালোচনা তামিম ইকবালের নামের ওপর। দল থেকে বাদ দিতে পারলেই যেন তুষ্টি মিলবে নিন্দুকদের, তাই যৌক্তিক অযৌক্তিক সমালোচনা করতে দ্বিধা করেনি তাঁরা।
অথচ, ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের একজন তামিম ইকবাল। বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের সাথে তাল মিলিয়ে পারফর্ম করেছেন তিনি; মানেন আর না মানেন গত কয়েক বছরে ওয়ানডে ফরম্যাটে সেরা পারফর্মার এই বামহাতি।
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পর থেকে ৪০ ইনিংসে ১৪৪২ রান করেছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের সদ্য সাবেক অধিনায়ক; আর তাঁর ব্যাটিং গড় চল্লিশের বেশি। এসময় তামিমের চেয়ে বেশি রান করতে পেরেছেন মাত্র তিনজন তারকা।
এদের মধ্যে আছেন তামিম ইকবালের ওপেনিং সঙ্গী লিটন দাস। তিনি তামিমের চেয়ে ৩ রান বাড়তি করেছেন, যদিও এক ইনিংস কম ব্যাট করেছেন। লিটনের গড়ও তাই বেশি, ৪২.৫০।
দুই বাংলাদেশীর উপরে আছেন বিরাট কোহলি এবং বাবর আজম। এই দুই বিশ্বসেরা যথাক্রমে ৩৭ ও ২৮ ইনিংস খেলেছেন; যেখানে তাঁদের রান সংখ্যা ১৬১২ এবং ১৮৭৬। ব্যাটিং গড়ের দিক দিয়ে অবশ্য যোজন যোজন এগিয়ে আছেন পাক অধিনায়ক। বিরাটের ৪৬ গড়ের বিপরীতে তাঁর গড় ৭২.১৫।
সেরা পাঁচে অবশ্য আরো দুইজন আছেন; ভারতের শ্রেয়াস আইয়ার এবং শুভমান গিল দুজনে যৌথভাবে পঞ্চম স্থানে আছেন। এই দুই তরুণ করেছেন ১৪২১ রান, তবে গিলের প্রয়োজন হয়েছে মাত্র ২৫ ইনিংস আর আইয়ার খেলেছেন ৩৩টি।
এসব কিছু ছাপিয়ে অবশ্য আলোচনা এখন তামিম ইকবালকে নিয়ে। যেই অফ ফর্মের জেরে তাঁকে এতটা সমালোচনা সহ্য করতে হচ্ছে, অধিনায়কত্ব ছাড়ার পিছনেও যেই অফ ফর্ম দায়ী সেটাকেই ভুল প্রমাণ করেছে এমন পরিসংখ্যান।
তামিম ইকবাল যে ছন্দ হারিয়েছেন সেটা সত্য, গত কয়েক সিরিজে তাঁর ব্যাটের ঝলকানি ছিল তাও মানতে হবে। কিন্তু সবমিলিয়ে এই বামহাতি রান খরায় আছেন এটা বলা অন্যায় হবে।
স্ট্রাইক রেট কিংবা প্রতিপক্ষ বিবেচনা করলে হয়তো এমন পারফরম্যান্সের আবেদন কিছুটা কমবে, কিন্তু বিশ্ব সেরা ব্যাটারদের সাথে তাল মিলিয়ে রান করাটা তো মিথ্যে হয়ে যাবে না। এখনো বাঘা বাঘা বোলারদের সামনে তিনিই বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ওপেনার।
একটা সময় বলা হতো, তামিম ইকবালের ব্যাট হাসলেই জিতবে বাংলাদেশ। সেই দিন এখন আর নেই, দলে ম্যাচ উইনার আছেন অনেক। কিন্তু তামিমের গুরুত্ব তাতে একটুও কমে না; তাই তো ড্যাশিং ওপেনার পুরোপুরি ছন্দে ফেরার প্রত্যাশা করতেই হচ্ছে বাংলাদেশকে।