ক্রিকেটারের ছেলে ক্রিকেটার হবে ব্যাপারটা স্বাভাবিক। তবে কেউ কেউ আবার ভিন্ন পেশা বেছে নিতে চায়। কেউ চায় বাবার মতো বা তাঁর চেয়েও বড় ক্রিকেটার হতে। এমনি ক্রিকেটে বেশ কিছু বাবা-ছেলের জুটি আছে। যেখানে দু’জনেই নিজ নিজ দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন।
আমাদের আজকের আয়োজন ক্রিকেটার বাবার ক্রিকেটার ছেলেদের নিয়ে। আমরা চেষ্টা করেছি এমন একটি একাদশ গঠন করতে যাদের বাবারা ছিলেন ক্রিকেটার। একাদশ করতে গিয়ে দেখা গেল, এদের অনেকেই বাবার কীর্তিকে দিব্যি ছাড়িয়ে যেতে পেরেছেন।
- শন মার্শ (অস্ট্রেলিয়া)
সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে দুই মার্শ ভাইদ্বয় (শন মার্শ ও মিশেল মার্শ) অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা পারফরমার একজন, যদিও ফর্ম যাওয়া আসার মধ্যে থাকে। এক বিশ্বকাপ সহ বেশ কয়েক ম্যাচ অজিদের পক্ষে জিতেছেন মার্শদ্বয়ের বাবা জিওফ মার্শ। শন মার্শও দীর্ঘদিন অজিদের হয়ে খেলেছেন। নিজের সেরা সময়ে টেস্টে অজিদের অন্যতম সেরা একজন ছিলেন তিনি। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (আইপিএল) তিনি বেশ সফল হয়েছেন।
- মুদাসসর নজর (পাকিস্তান)
মুদাসসর নজর হলেন সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার নজর মোহাম্মদের ছেলে। নজর মুহাম্মদ পাকিস্তানের হয়ে পাঁচ টেস্টে খেলার সুযোগ পান। তবে বাবাকেও ছাড়িয়ে যান মুদাদসসার। টেস্টে পাকিস্তানের অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবেই ক্যারিয়ার শেষ করেন তিনি।
- মহিন্দর অমরনাথ (ভারত)
মহিন্দর অমরনাথ হলেন ভারতের সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার লালা অমরনাথের ছেলে। আশির দশকে ভারতের অন্যতম সেরা একজন খেলোয়াড় ছিলেন মহিন্দর। ১৯৮৩ সালে ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জয় পায়, সেবার ফাইনালে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন মহিন্দর। মহিন্দরের দুই ভাই সুরিন্দর ও রাজিন্দরও ক্রিকেটার। এর মধ্যে সুরিন্দর জাতীয় দলেও খেলেছেন।
- যুবরাজ সিং (ভারত)
যুবরাজ সিং আধুনিক ক্রিকেটে ভারতের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন। ২০১১ বিশ্বকাপে ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্টও নির্বাচিত হন তিনি। যুবরাজের সিংয়ের বাবা যুগরাজ সিংও ভারতের হয়ে জাতীয় দলে খেলেছেন। যদিও, ক্রিকেটীয় পরিচয় ভুলে তিনি এখন পুরোদস্তর অভিনেতা।
- জনি বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড): উইকেটরক্ষক
অনেকেই হয়তো জানেন না ইংলিশ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টোর বাবাও ইংল্যান্ডের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন। জনির বাবা ডেভিড বেয়ারস্টো নিজেও ছিলেন একজন উইকেটরক্ষক! এছাড়া ডেভিড বেয়ারস্টো হোমটাউন ক্লাবের পক্ষে ফুটবলও খেলেছেন।
- মিশেল মার্শ (অস্ট্রেলিয়া)
মিশেল মার্শের বাবা জিওফ মার্শ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন। এই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারের অন্যতম ভরসার নাম মিশেল মার্শ।
- ক্রিস কেয়ার্নস (নিউজিল্যান্ড)
ক্রিস কেয়ার্নসের বাবা নিউজিল্যান্ডের অলরাউন্ডার ল্যান্স কেয়ার্নসও কিউইদের পক্ষে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছেন। বাবার নামকে ছাড়িয়ে গেছেন ক্রিস কেয়ার্ন। নব্বই দশকের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন ছিলেন তিনি। ইনজুরি প্রবণতা না থাকলে দিব্যি ক্যারিয়ার আরো লম্বা হত।
- স্যাম কুরান (ইংল্যান্ড)
ইংলিশ অলরাউন্ডার স্যাম কুরানের বাবা কেভিন কুরান জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড় ছিলেন! তিনি জিম্বাবুয়ের হয়ে ১৯৮৩ এবং ১৯৮৭ বিশ্বকাপে অংশ নেন। স্যামের ভাই টম কুরানও ক্রিকেটার, ইংল্যান্ডের জার্সিও এরই মধ্যে শরীরে চাপিয়েছেন। আরেক ভাই বেন কুরানও আছেন অপেক্ষায়।
- শন পোলক (দক্ষিণ আফ্রিকা): অধিনায়ক
শন পোলকের বাবা পিটার পোলক ১৯৬৬ সালের উইজডেন ক্রিকেটার অব দ্যা ইয়ার নির্বাচিত হন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য ছিলেন। তার ছেলে শন পোলক দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের অন্যতম সেরা বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
- স্টুয়ার্ট ব্রড (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের ম্যাচ রেফারি হিসেবে কাজ করা ক্রিস ব্রড হলেন ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের বাবা। ক্রিস ব্রডও ইংল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। তবে তাঁর ছেলে স্টুয়ার্ট ব্রড সাদা পোশাকে নিজেকে নিয়ে গেছেন বিশ্বের সেরাদের তালিকায়।
- হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়রের বাবা ঘরোয়া ক্রিকেটে অ্যান্টিগার হয়ে খেলেছেন। বাবা জাতীয় দলে না খেলতে পারলেও ছেলে জাতীয় দলে ঠিক জায়গা করে নিয়েছেন। একটি নয়, দু’টো জাতীয় দলে খেলেছেন হেইডেন ওয়ালশ। প্রথমে তিনি খেলেন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে, এখন তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের নিয়মিত সদস্য।