আবহে মিশে থাকা জয়

বাংলাদেশের এই জয়টা অপ্রত্যাশিত নয়। এই সিরিজের আবহে এরকম জয় মিশেই ছিল। তবে এটি কেবলই শুরু। কাল আবার এই স্পিরিট, এই ফোকাস ধরে রাখতে হবে। আজকের ঘাটতির জায়গাগুলোয় উন্নতি করতে হবে। নইলে আজকে উচ্ছ্বাস কাল রূপ নেবে হাহাকারে।

সব ফরম্যাটে জয়ের জন্য বেশির ভাগ সময়ই আমাদের নির্ভর করতে হয় টিম পারফরম্যান্সে। প্রয়োজন পড়ে অনেকের সম্মিলিত অবদানের। আজকের জয়টিও ঠিক তেমনই। ছোট ছোট অবদানে বড় এক জয়।

তবে এই ছবিটি দেওয়ার একটি কারণ আছে। দলের জয়ে ভূমিকা তো বেশ কজনেরই আছে। আফিফ হোসেনের ১৭ বলে ২৩ রানের ইনিংসটি আজকের প্রেক্ষাপটে মহামূল্য। বাংলাদেশ ১৩০ পার হতে পেরেছে তার সৌজন্যেই। যদিও মাঝবিরতিতে আমার মনে হচ্ছিল ১৫ রানের মতো কম হয়েছে। তবে ওই ১৩০ পার হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

শুধু রান করাই নয়, তার ব্যাটিংয়ের ধরনও ছিল চোখে পড়ার মতো। ভয়ডরহীন।

ব্যাটিংয়ে ওই পুঁজির পর গুরুত্বপূর্ণ ছিল বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করা। ভেবেছিলাম, পাওয়ার প্লেতে অন্তত দুটি উইকেট দরকার। কিন্তু হয়ে যায় আরও ভালো। তিন ওভারে তিন উইকেট নেওয়ার পর এই ম্যাচ না জেতার কারণ ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটিং লাইন আপ অনভিজ্ঞ। এরকম উইকেটে টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর বাকিদের খাবি খাওয়ার কথা। ব্যাটিংয়ে গভীরতাও বেশি নেই।

তার মানে এই নয় যে স্রেফ উইকেটের কারণে ও ওদের অনিভজ্ঞতায় এই জয়। নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করতে হতো। ১৩১ রানের পর নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখা, টিম স্পিরিট ধরে রাখা ও স্কিল মেলে ধরার ব্যাপার ছিল। সেসব ঠিকঠাক পারার কৃতিত্ব অবশ্যই বাংলাদেশের।

মনে রাখতে হবে, টি-টোয়েন্টিতে ২৩ রানের জয় এমনিতেই পরিস্কার ব্যবধানের জয়। ১৩১ রানের পুঁজি নিয়ে ২৩ রানের জয় মানে বেশ বড় জয়। এবং ম্যাচ শেষের বেশ কিছুক্ষণ আগেই আসলে ম্যাচের ভাগ্য পরিষ্কার হয়ে যায়। টি-টোয়েন্টিতে সেটিও সচরাচর হয় না। এটিকে তাই দাপুটে জয়ও বলা যায় শেষ পর্যন্ত।

বেশ কয়েকজনের ছোট ছোট অবদানেই তা সম্ভব হয়েছে। আফিফ, নাসুম তো বটেই, সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যদিও ব্যাট হাতে খুব স্বচ্ছন্দ ছিলেন না। তবে উইকেটে থেকেছেন এবং প্রয়োজনীয় কিছু রান করেছেন।

আরেকটি বড় অবদানও তার ছিল। নাসুম যখন দ্বিতীয় ওভারে ছক্কা হজম করলেন একটু খাটো লেংথের বল করে, সাকিব গিয়ে নাসুমকে বলেছিলেন, এই উইকেটে সামনে বল করতে এবং যতটা সম্ভব আস্তে বল করতে। সেটির ফলও মিলেছে। বলতে পারেন, নাসুম কিছুটা ভাগ্যবানও ছিলেন। তা ছিলেন বটে। তবে এটাই ক্রিকেট। কোনোদিন অসাধারণ বল করেও উইকেট মেলে না, কখনও ধরা দেয় অপ্রত্যাশিতভাবে।

বাংলাদেশের এই জয়টা অপ্রত্যাশিত নয়। এই সিরিজের আবহে এরকম জয় মিশেই ছিল। তবে এটি কেবলই শুরু। কাল আবার এই স্পিরিট, এই ফোকাস ধরে রাখতে হবে। আজকের ঘাটতির জায়গাগুলোয় উন্নতি করতে হবে। নইলে আজকে উচ্ছ্বাস কাল রূপ নেবে হাহাকারে।

– ফেসবুক থেকে

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...