নিখাঁদ ভালোবাসার ডাক

খবরের শিরোনামে তিনি সব সময়ই ছিলেন। ছিলেন না কেবল কোনো কাঠামোতে। কোনো এক অদ্ভুত কারণে দারুণ পারফরম্যান্স থাকার পরও লম্বা সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিয়ন্ত্রিত কোনো দলে তাঁর ঠাঁই হয়নি। তবে, এবার সেই অচলায়তনটা ভাঙল। একটু দেরিতে হলেও বিসিবি স্মরণ করলো নাঈম ইসলামকে। জাতীয় দলের ছায়া দল হিসেবে পরিচিত বাংলা টাইগার্স দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন বর্ষিয়ান এই ক্রিকেটার।

খবরের শিরোনামে তিনি সব সময়ই ছিলেন। ছিলেন না কেবল কোনো কাঠামোতে। কোনো এক অদ্ভুত কারণে দারুণ পারফরম্যান্স থাকার পরও লম্বা সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিয়ন্ত্রিত কোনো দলে তাঁর ঠাঁই হয়নি। তবে, এবার সেই অচলায়তনটা ভাঙল। একটু দেরিতে হলেও বিসিবি স্মরণ করলো নাঈম ইসলামকে। জাতীয় দলের ছায়া দল হিসেবে পরিচিত বাংলা টাইগার্স দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন বর্ষিয়ান এই ক্রিকেটার।

সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। আসরের দ্বিতীয় রান সংগ্রাহক ব্যাটার তিনি। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে ১৫ ম্যাচ খেলে করেছেন ৮৫৯ রান। পেয়েছেন দুটি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি। ব্যাটিং গড় ৬৬.০৭। স্ট্রাইক রেট ৭৬.২৮। এর আগে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও রানের মধ্যেই ছিলেন। এই পারফরম্যান্সেরই পুরস্কার পেলেন তিনি এবার।

আসছে ২৭ মে, শুক্রবার থেকে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্প। খেলা ৭১-কে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নাঈম বলেন, ‘খুবই ভাল লাগছে। এটা অবশ্যই খুব দারুণ একটা অনুভূতি। সুযোগটা কাজে লাগানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করবো।’

নাঈম ইসলামের বয়স এখন ৩৫। এই বয়সে এসেও রীতিমত হাঁটুর বয়সীদের সাথে পাল্লা দিয়ে পারফরম করে যাচ্ছেন। রহস্যটা কী? নাঈম বলেন, ‘আমি সব সময় নিজেকে আরো ভাল পারফরম্যান্সের জন্য প্রস্তুত রাখি। দেখেন, আমি ক্রিকেটটাকে ভালোবাসি। খেলিও ভালোবাসা নিয়েই। ফলে, ক্রিকেটের প্রতি আমার নিবেদন নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না। সেই ভালোবাসাটাই আসলে আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।’

সর্বশেষ নাঈম যখন জাতীয় দলে খেলেন তখনও ছিলেন সেরা পারফরমারদের একজন। ২০১২ সালে শেষ টেস্ট খেলেন। এর ঠিক আগেই যে টেস্ট ম্যাচটা খেলেন, সেখানেই মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পান ক্যারিয়ারের একমাত্র আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির দেখা।  সর্বশেষ ওয়ানডে ২০১৪ সালের মার্চে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই ম্যাচেও ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন। ২০১৩ সালে খেলা শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৭ বলে করেন ১৮ রান। ফলে, পারফরম্যান্সে তাঁর কোনো ঘাটতি ছিল – সেটা বলা যাবে না। বরং টিম কম্বিনেশনের জন্য বাদ পড়েছেন। আর ফেরা হয়নি। অথচ, এই আট-নয় বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের পর রান করে গেছেন।

তাহলে নাঈম কি অবিচারের শিকার নন? নাঈম কী ভাবেন এই নিয়ে? তিনি জবাব দিলেন, ‘দেখেন, ভাল সময় খারাপ সময় জীবনে আসবেই। আমরা তো মানুষ। মানুষের জীবনে উত্থান-পতন তো থাকবেই। ফলে এসব মেনে নিয়েই সামনে এগোতে হবে। অবিচারের শিকার হয়েছি – সেটা বলার সুযোগ নেই। আমি বলবো, আমার সময়টা ভাল ছিল না।’

তবে, একটু দেরিতে হলেও বিসিবির কাঠামোর মধ্যে ঠাঁই হয়েছে তাঁর। আর এই বাংলা টাইগার্স হল জাতীয় দলের ঠিক আগের ধাপ। নাঈমও টের পাচ্ছেন চ্যালেঞ্জটা। তিনি বলেন, ‘যেকোনো ক্রিকেটারই চায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলতে। আমিও চাই। প্রত্যেকটা ক্রিকেটারই আসলে এর জন্যই খেলে। ফলে, জাতীয় দল থেকে যদি ডাক আসে, তাহলে নিজের সর্বোচ্চটাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।’

বয়স ক্রিকেটে কোনো আজকাল কোনো ইস্যু নয়। এই বয়সেও দিব্যি জাতীয় দলে এসে পারফরম করার নজীর আছে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিস রজার্স, পাকিস্তানের ফাওয়াদ আলম, কিংবা ভারতের আশিষ নেহরা – নজীর আছে বিস্তর। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এই প্রক্রিয়াটা কি নাঈমকে দিয়ে শুরু হবে? – উত্তর জানার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে সময়ের দিকে।

  • ২৯ সদস্যের বাংলাদেশ টাইগার্স স্কোয়াড: সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান, জাকির হাসান, মোহাম্মদ মিঠুন, ফজলে রাব্বী, আশিক উল আলম, নাহিদুল হক, সানজামুল ইসলাম, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, আল আমিন হোসেন, আবু হায়দার রনি, মেহেদী হাসান রানা, আবু জায়েদ চৌধুরি রাহী, কামরুল ইসলাম রাব্বী, নাঈম ইসলাম, সৌম্য সরকার, রনি তালুকদার, পিনাক ঘোষ, জাকির আলী অনিক, সাজ্জাদুল রিপন, শাহিন আলম, সাব্বির রহমান, জাকিরুল আহমেদ জেম, আবদুল হালিম, মাইশুকুর রিয়াল, হাসান মাহামুদ, রাকিন আহমেদ, সৈকত আলী, নাজমুল ইসলাম অপু।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...