আমি জাতীয় দলে কবে সুযোগ পাবো, স্যার?

তবে বোলিং আক্রমণ বিশ্বমানে পরিণত করার ক্ষেত্রে ভরত অরুণের নাম আলাদা করে নিতেই হবে। মোহাম্মদ শামির ফিটনেসের দুর্বলতা দূর করেছেন, জাসপ্রিত বুমরাহকে রীতিমত অপ্রতিরোধ্য এক বোলারে পরিণত করেছেন। আর আনকোরা মোহাম্মদ সিরাজের পুরো ক্যারিয়ারই তো গড়ে উঠেছে অরুণের অধীনে। রঞ্জি ট্রফিতে হায়দ্রাবাদ থেকে জাতীয় দলে শুরুর সময়টুকুর পুরোটা জুড়ে সিরাজের মেন্টর হিসেবে ছিলেন অরুণ। তাঁর অধীনেই ধীরে ধীরে ধারাবাহিকভাবে ভালো করতে শুরু করেন এই পেসার। 

ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা ক্রিকেট দলের কথা বললে সবার প্রথমে মাথায় আসে ১৯৮৫ সালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী সেই দলের কথা। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে মহেন্দ্র সিং ধোনির বিশ্বকাপজয়ী দলের কথাও বলবেন অনেকে।

২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশেলে দারুণ এক দল গড়ে তুলেছিলেন ধোনি। তবে কোনো ট্রফি না জিতলেও সেরার দৌড়ে পিছিয়ে থাকবে না বিরাট কোহলি এবং রবি শাস্ত্রীর ভারতও। এই জুটির নৈপুণ্যেই প্রথম বারের মতো ঘরের বাইরে টেস্ট সিরিজ জিততে শুরু করে ভারত। 

ভারত বরাবরই ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য। ভারতের দুর্বোধ্য স্পিন পিচ সফরকারী ব্যাটসম্যানদের জন্য রীতিমত বধ্যভূমি। তবে ঘরের মাঠের বাঘেরাই যেন প্রতিপক্ষের মাঠে বিড়াল হয়ে যেতেন। অন্তত ২০১৭ সালের আগে এটাই ছিল নিয়মিত দৃশ্য। কিন্তু রবি শাস্ত্রী কোচ হয়ে আসার পর বদলে যায় দৃশ্যপট, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টানা দুই টেস্ট সিরিজ জেতে ভারত। এছাড়া ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট ড্রয়ের পাশাপাশি আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালও খেলে দলটি। 

শুধু জয় নয়, এই সময়ে ভারত দেখেছে অসাধারণ কিছু তরুণ প্রতিভার উত্থান। সুরিয়াকুমার  যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ, শুভমান গিল, শ্রেয়াস আইয়ারদের  মতো ভবিষ্যতের তারকারা উঠে এসেছেন। কোহলি এবং শাস্ত্রী ছাড়াও বোলিং কোচ ভরত অরুণ, ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গার এবং ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধরও কৃতিত্ব পাবেন এই তরুণদের উত্থানের পেছনে। 

তবে বোলিং আক্রমণ বিশ্বমানে পরিণত করার ক্ষেত্রে ভরত অরুণের নাম আলাদা করে নিতেই হবে। মোহাম্মদ শামির ফিটনেসের দুর্বলতা দূর করেছেন, জাসপ্রিত বুমরাহকে রীতিমত অপ্রতিরোধ্য এক বোলারে পরিণত করেছেন।

আর আনকোরা মোহাম্মদ সিরাজের পুরো ক্যারিয়ারই তো গড়ে উঠেছে অরুণের অধীনে। রঞ্জি ট্রফিতে হায়দ্রাবাদ থেকে জাতীয় দলে শুরুর সময়টুকুর পুরোটা জুড়ে সিরাজের মেন্টর হিসেবে ছিলেন অরুণ। তাঁর অধীনেই ধীরে ধীরে ধারাবাহিকভাবে ভালো করতে শুরু করেন এই পেসার। 

২০১৬-১৭ রঞ্জি ট্রফিতে ৪১ উইকেট শিকারের পর জাতীয় দলে ডাক পান সিরাজ। অরুণ জানতেন খুব তাড়াতাড়ি ডাক পেয়ে গেছেন সিরাজ, তাই ধৈর্য ধরতে বলেন এই বোলারকে। এক সাক্ষাৎকারে অরুণ বলেন, ‘হায়দ্রাবাদে ভালো করার পর আমি জাতীয় দলে কাজ করতে শুরু করি এবং সিরাজ এ দলে ডাক পেয়ে যায়। প্রতিটা ম্যাচে ভালো করার পর সে আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করতো আমাকে কবে জাতীয় দলে ডাকবেন স্যার। আমি সব সময় বলতাম এ দলের হয়ে আরো উইকেট নিতে থাকো, এরপরই ডাক পাবে।’

এ দলের পাশাপাশি আইপিএলে ভালো করার সুবাদে ২০১৭ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় সিরাজের। কিন্তু বাজে ইকোনমির কারণে শুরুর দিকে থিতু হতে পারেননি, বারবার আসা-যাওয়ার মাঝে ছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠে সিরাজ বর্তমানে জাতীয় দলের অন্যতম সেরা অস্ত্র। তবে সিরাজের শুরুর দিকের সেই দিনগুলো আজো অরুণের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। 

তিনি বলেন, ‘প্রতিবার সে একটা ভালো স্পেল করার পরই সে আমাকে ফোন করতো। একবার তো এমন এক ফোন কলের পর রবি শাস্ত্রী আমাকে জিজ্ঞেস করেন এই ছেলে কে? আমি সিরাজের পুরো ঘটনা তাঁকে বলি। রবি সে সময় একটা কথা বলেছিল তোমাকে অবশ্যই তাঁর আত্নবিশ্বাসের কথা মানতেই হবে। কখন আমাকে জাতীয় দলে ডাকছেন? এমনটা বলার মতো আত্নবিশ্বাস সবার থাকে না।’

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...