দ্য বাটলার ম্যাজিক

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের গ্রুপ পর্বের ম্যাচেই মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়নি একটুও। অস্ট্রেলিয়াকে রীতিমত উড়িয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। বলা ভালো, জস বাটলারের ঝড়ে উড়ে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে বাটলার আবারো প্রমাণ করলেন সাদা বলের ক্রিকেটে দুনিয়ার অন্যতম সেরা হিটার তিনি।

অস্ট্রেলিয়া খুব লড়াকু সংগ্রহ করতে পেরেছিল এমন না। আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২৫ রানেই অল আউট হয়ে গিয়েছিল অজিরা। তবে জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড যেটা করেছে তা অবিশ্বাস্য। ১২তম ওভারেই নিজেদের জয় তুলে নিয়েছে অজিরা। আর সেটার কারিগর হিসেবে ছিলেন জশ বাটলার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এরচেয়ে বড় ইনিংস হয়তো ইংল্যান্ডের হয়ে আরো খেলেছেন অনেকেই। তবে কোনটাই জস বাটলারের মত এতটা বিধ্বংসী, এতটা ক্লিনিক্যাল ছিল না।

বাটলার তাঁর প্রথম ১০ বল থেকে করেছিলেন মাত্র ৯ রান। পরের ৬২ রান করেছেন মাত্র ২২ বলে। অ্যাস্টন অ্যাগারকে লং অফের উপর দিয়ে একটা ছয় মেরে সেই ঝড়ের শুরু করেছিলেন বাটলার। এরপর আর আসলে কারো কিছু করার ছিল না। ইংল্যান্ডেরও না, অস্ট্রেলিয়ারও না। সবাই শুধু মুগ্ধ হয়ে দেখেছে দ্য বাটলার শো।

ম্যাচের পর বাটলারের এই ইনিংস নিয়ে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক মরগ্যান বলেন, ‘২০১৬ সালেও বাটলার এমন একটি ইনিংস খেলেছিল। সেই ওয়ানডে ম্যাচে মাত্র ৪৬ বলেই সেঞ্চুরি করেছিল সে এবং প্রতিটা বল ব্যাটের মাঝখানে খেলতে পেরেছিল। এইগুলো প্রমাণ করে ও পৃথিবীর অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান এবং এইসব দিনে তাঁকে থামানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।’

বাটলারের তিনটি ছয় এখনো ক্রিকেটপ্রেমীদের মাথায় আঁটকে আছে। মিশেল স্টার্ককে দুটি ছয় মেরেছেন তিনি। ১৪৪ কিমি প্রতি ঘন্টায় আসা বলকে পরপ্র দুইবার মাঠের ওপাড়ে আঁচড়ে ফেলেছেন। একটি ছিল ৯৪ মিটার ও একটি ৯৫ মিটার লম্বা ছয়। এরপর অ্যাডাম জ্যাম্পাকে ১০২ মিটার লম্বা একটি ছয় মারেন তিনি।

ওদিকে লিয়াম লিভিংস্টোন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বাটলার যতগুলো ছয় মেরেছিল সবগুলোই ১৫-২০ রো পরে গিয়ে পড়েছে। কয়েকটা তো ৫০ রো দূরে গিয়েও পড়েছে। আমার মনে হয় সাদা বলের ক্রিকেটে সে দুনিয়ার সেরা হিটার। তাকে থামানোর মত কেউ থাকেনা। সেদিনের ইনিংসটা সব দিক থেকেই পারফেক্ট ছিল। সামনে থেকে এমন একটা ইনিংস দেখা আসলে চোখের শান্তি।’

বাটলার ইংল্যান্ডের হয়ে আগেও এই ইনিংস গুলো খেলেছেন। এবার বিশ্বকাপের মত আসরেও নিজের সেই এবিলিটি দেখাচ্ছেন। এবার সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনালে এমন একটি ইনিংস খেলতে পারলে বাটলারকে হয়তো ইংল্যান্ডের সেরা হিটার হিসেবেও অ্যাখ্যা দেয়া যাবে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link