বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন হতাশায়। হারিয়ে যাওয়ার অন্ধকার গলির দিকে দ্রুত গতিতে ধাবিত হচ্ছিলেন ইয়াশ দয়াল। কিন্তু প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির জোরে তিনি স্বরূপে ফিরেছেন। আর নিজের দুর্দিন কাটিয়ে উঠে লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হওয়ার ক্ষুধা খুলে দিয়েছে নতুন রাস্তা। জাতীয় দলে প্রথমবারের মত ডাক পেয়েছেন ইয়াশ দয়াল।
সেই ম্যাচটির কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। রিঙ্কু সিং অসাধারণ দক্ষতায় পাঁচ পাঁচটি ছক্কা হাঁকান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের মঞ্চে। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ জিতিয়েছিলেন রিঙ্কু। টানা পাঁচটি ছক্কা হজম করতে হয়েছিল ইয়াশকে। গোটা বিশ্বজুড়েই বিস্ময় ছড়িয়েছিল। হতভম্ব ইয়াশ অসহায় নয়নে স্রেফ দেখে গেছেন।
চারিদিকে ট্রলের বন্যা বয়ে যেতে শুরু করে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ইয়াশ দয়াল। ঠিক সে আসরের পরপরই ইয়াশের মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মায়ের অসুস্থতাও তার ভেতরটা যেন ভেঙে-চুড়ে ফেলে। তবুও ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যাননি তিনি। ক্রিকেটকেই আকড়ে ধরেছিলেন মুক্তির পথ হিসেবে।
এরপর তো আইপিএলের মঞ্চেই আবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে খেলেছেন ২০২৪ সালের আইপিএল। ১৪ ম্যাচে ১৫টি উইকেট বাগিয়েছিলেন ইয়াশ। তাতেই তার প্রবল ইচ্ছেশক্তি আর নিজেকে প্রমাণ করবার তীব্র তাড়নার বহিঃপ্রকাশ করে।
এমনকি ২০২৪ সালের দুলীপ ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচের দুই ইনিংসেই তিনি চারটি করে উইকেট নিজের করে নেন। এরপর তাকে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত না করা হতো বিশাল বড় অন্যায়। ভারতের ক্রিকেট বোর্ড সে অন্যায়টি করতে চায়নি। বরং ভাল পারফরমেন্সের উপহার হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট দলে জায়গা পেয়েছেন ইয়াশ।
তবে শুধু দুলীপ ট্রফির পারফরমেন্স দেখেই তাকে দলে ডাকেনি ভারত। বরং প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে ইয়াশের প্রথম শ্রেণির দারুণ পরিসংখ্যান। লাল বলে ২৪ ম্যাচ খেলেছেন এখন অবধি ইয়াশ। এর মধ্যে ৭৬টি উইকেট নিজের করে নিয়েছেন এই পেসার। ২৮.৮৯ গড়ে উইকেট শিকার করে তিনি দরজায় কড়া নাড়ছিলেন। এ দফা আর অগ্রাহ্য করেনি ভারত জাতীয় দলের নির্বাচকরা।
একাদশে ইয়াশ সুযোগ পাবেন কি-না, সেটা হয়ত সময় গড়ালেই জানা যাবে। আর সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহারটাই হয়ত করতে চাইবেন ইয়াশ।তিতিক্ষার দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে সুবর্ণ সুযোগের দ্বারপ্রান্তে এসেছেন তিনি। ইয়াশ তো জানেন কতখানি কাঠখড় তিনি পুড়িয়েছেন।