গতির ঝড় তুলতে পারেন, বাংলাদেশের বোলারদের জন্য যেটা অনেকটা আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতই ব্যাপার। আর যখন সেই নাহিদ রানা খেলতে নামলেন – বোঝা গেল আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে বাংলাদেশ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অভিষেকের প্রথম সেশনেই গতির ঝড় তোলেন। ব্যাটারদের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়। আসছিল না কেবল উইকেট। সেই আক্ষেপ তিনি মেটালেন একদম শেষ সেশনে গিয়ে।
খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুই ব্যাটারকে আউট করলে। তাঁরা হলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কুশল মেন্ডিস। এই দুটো উইকেট যে বাংলাদেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
দুইজনই ১০২ করে রান করে বাংলাদেশের বোলার ও ফিল্ডারদের ভুগিয়েছেন যথেষ্ট। ৫৭ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে যখন ধুকছিল শ্রীলঙ্কা দল – তখন জুটি বাঁধেন দু’জন। এই দু’জনের ২০২ রানের বিশাল জুটিতেই ম্যাচে ফিরে শ্রীলঙ্কা।
বোঝাই যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের গলার কাটা হয়ে ছিলেন এই দু’জন। ফলে এই দু’জনকে তুলে ফেলার কৃতিত্ব দিতেই হচ্ছে নাহিদ রানাকে। প্রথম দিনের শেষ বেলায় রীতিমত ত্রাসই ছড়িয়েছেন রানা। ঘন্টায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার ছুঁইছুঁই গতি তোলে সাড়া ফেলে দিয়েছেন তিনি।
রানার এই উত্থানকে অভাবনীয় বলতেই হয়। চার বছর আগেও ক্রিকেট বল নিয়ে বল করার অভ্যাস ছিল না। ২০২০ সালে ক্রিকেট বলে বোলিং করা শুরু করেন। ক্রিকেট বল হাতে নেওয়ার এক বছরের মধ্যেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক।
আর অভিষেকের প্রথম আসরেই বাজিমাত। ৬ ম্যাচে নেন ৩২ উইকেট। হয়ে যান টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার। সেখান থেকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এবং অত:পর টেস্ট ক্রিকেট।
নাহিদের বড় সম্পদ তাঁর উচ্চতা। নিজের উচ্চতার কারণে সহজাত বাউন্স পান। আর সেটিকেই তিনি অস্ত্র বানিয়ে ব্যাটারদের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ান। ডেলিভারি হ্যান্ড সোজা, পেয়ে যান কিছু বাড়তি মুভমেন্ট। লাইন লেংথ নিয়ে কাজ করলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে দুর্দান্ত এক পেসার হতে পারেন তিনি।
পেসারদের গতির বিপরীতে ইনজুরিও উঁকি দেয় আড়ালে। সেই বাস্তবতা রানারও আছে। অ্যাকশনও ঝুঁকিপূর্ণ। তবে, সে সব কিছুকেই মাথায় রেখে আগামীর পথে সম্মুখপানে এগিয়ে চলতে হবে নাহিদ রানাকে। আর রানা যত এগিয়ে যাবেন, যতই উপকৃত হবে বাংলাদেশ দল।