গত পাঁচ নভেম্বর রাহুল দ্রাবিড় বিরাট কোহলিকে প্রতিপক্ষের হুমকি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। সেটা কিন্তু ব্যাটার হিসেবে নয়, বোলার হিসেবে – দ্রাবিড়ের চোখে বিরাট ‘রং ফুটেড ইনসুইং মেনাস’। এরপর থেকেই তাঁর হাতে বল তুলে দেয়ার জন্য রোহিত শর্মাকে অনুরোধ করে চলছেন গ্যালারিতে খেলা দেখতে আসা দর্শকেরা।
শেষমেশ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে সেই আশা পূরণ হয়েছে। পঞ্চাশতম ওয়ানডে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা কোহলিকে দেখা গিয়েছে বোলিং প্রান্তে। ডাচদের ব্যাটিং ইনিংসের ১৬তম ওভার থেকেই ‘কোহলিকে বল দাও’ এমন আবেদন জোরালো হয়ে উঠেছিল। তবে আরো খানিকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়, ২৩তম ওভারে গিয়ে হাতে বল তুলে নেন তিনি; পুরো গ্যালারি থেকে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে।
প্রথম ওভারের পাঁচ বলে তিন রান দেন এই তারকা; পরের বলটা ব্যাটারের ব্যাট ছুঁয়ে কিপারের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়, স্লিপ ফিল্ডার থাকলে তখনি হয়তো উইকেট পেয়ে যেতেন তিনি। তবে পরের ওভারে আবারো বল করতে এসে ঠিকই উইকেট শিকার করেন এই ডানহাতি; যেন তেন উইকেট নয় কিন্তু, নেদারল্যান্ডস দলপতি স্কট এডওয়ার্ডসকে ফিরিয়েছেন তিনি।
শতক হাঁকিয়ে উদযাপন করতে পছন্দ করা বিরাট কোহলিকে অনেকদিন পর উইকেট উদযাপন করতে দেখেছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা। এর আগে ২০১৪ সালে সর্বশেষ ওয়ানডে উইকেট পেয়েছিলেন তিনি, সেদিন ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছিলেন এই মিডিয়াম পেসার। দিল্লির ছেলে হলেও চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম কোহলির জন্য বাড়ির উঠোন। তাই তো দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই মাঠে উইকেট পাওয়া একটু বেশিই বিশেষ।
সবমিলিয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তিন ওভার হাত ঘুরিয়ে তাঁর বোলিং ফিগার ছিল ৩-০-১৩-১। সংখ্যা তত্ত্বে আহামরি না হলেও, নামটা যেহেতু ‘বিরাট কোহলি’ তাই পুলকিত হতেই হয়।
শুধু তিনিই নয়, এই ম্যাচে শুভমান গিল, সুরিয়াকুমার যাদবের মত ব্যাটাররাও বোলার হিসেবে তাঁদের নতুন করে চিনিয়েছেন। আর ইনিংসের শেষদিকে ভারতীয় কাপ্তান নিজেই এসেছেন বোলিং করতে, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ওয়ানডেতে বোলিং করা ‘হিটম্যান’ এরপর ঝুলিতে পুরেছেন একটা উইকেট।
ষষ্ঠ বোলারের খোঁজে থাকা ভারত হয়তো গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে সফল হয়েছে। কোহলির ইনসুইং সবসময় হয়তো উইকেট এনে দিতে পারবে না তবে অধিনায়ক অন্তত তাঁর ওপর আস্থা রাখতেই পারে। আবার অধিনায়ক নিজেও চাইলে পার্ট টাইমার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।