অচেনা কিংবদন্তির না বলা গল্প

আচ্ছা বলুন তো, দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে ১০০ উইকেট নেয়া প্রথম বোলার কে? উত্তরটা আমিই বলে দিচ্ছি, নিল অ্যাডকক। নামটা ভীষণ অপরিচিত ঠেকছে, তাই না? তো চলুন তাঁর সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই।

শুরুতে বলে নেয়া ভাল, নিল অ্যাডককের উত্থান হয়েছিল পঞ্চাশের দশকে। আর পঞ্চাশের দশককে বলা হয় ক্রিকেটে ফাস্ট বোলারদের স্বর্ণযুগের প্রথম অধ্যায়। তখন ইংল্যান্ডের ছিল ফ্রেড ট্রুম্যান, ব্রায়ান স্ট্যাথাম, ফ্রাঙ্ক টাইসন; অস্ট্রেলিয়ার ছিল রে লিন্ডওয়াল, কিথ মিলার, অ্যালান ডেভিডসন; ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছিল ওয়েস হল, চার্লি গ্রিফিথ, রয় গিলক্রিস্ট; পাকিস্তানের ছিল ফজল মাহমুদ, খান মুহম্মদ আর দক্ষিণ আফ্রিকার ছিল নিল অ্যাডকক, পিটার হেইনের মত একঝাঁক দুরন্ত ফাস্ট বোলার।

নিল অ্যাডকক’কে মনে করা হয় দেশটির ইতিহাস প্রথম জেনুইন ফাস্ট বোলার। তাঁর বোলিংয়ে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল অ্যাকশন। রিদমিক, ওপেন চেস্টেড, কুইক আর্ম অ্যাকশন থেকে প্রচুর পেস জেনারেট করতে পারতেন তিনি। ক্রিকেটের বাইবেল খ্যাত ‘উইজডেন’ তাঁর বোলিং অ্যাকশনকে তুলনা করেছে উইন্ডমিলের সাথে!

উইজডেনের ভাষায়, ‘Unlike many fast bowlers Adcock does not employ a pronounced movement of the body at the point of delivery. He bowls without interruption in the course of his run, swinging his arm on a trunk that is virtually upright — like a sudden gust turning a light windmill.’

ছয় ফুট তিন ইঞ্চি লম্বা দীর্ঘদেহী এই ফাস্ট বোলারের প্রধান সম্পদ ছিল গতি। ওয়েস হল কিংবা ফ্রাঙ্ক টাইসনের মত নিল অ্যাডকককেও তাঁর সময়ের ‘দ্রুততম’ ফাস্ট বোলারের স্বীকৃতি দিয়েছেন অনেকে।

নিল অ্যাডকককে বলা যায় পেস, বাউন্স আর অ্যাগ্রেসনের সংমিশ্রণে এক ডেডলি কম্বিনেশন। গুড লেংথ থেকে বুক বা গলা সমান উচ্চতায় আচমকা বলকে লিফট করাতে পারতেন তিনি। ব্যাটসম্যানকে তীব্র অস্বস্তিতে ফেলতে অত্যন্ত কার্যকরী ছিল এ ধরনের বোলিং।

সাবেক ইংরেজ ব্যাটসম্যান টম গ্রেভেনির ভাষায়, ‘He displayed the rare gift of being able to make the ball lift to an awkward height for the batsman.’

ওপেন চেস্টেড একশনের হয়েও নিখুঁত আউটসুইঙ্গার দিতে পারতেন অ্যাডকক। তবে তাঁর আর্মারিতে ভয়ংকরতম অস্ত্রটি ছিল ব্যাটসম্যানের পাঁজর লক্ষ্য করে ছোঁড়া নিখুঁত বাউন্সার।

নিল অ্যাডককের বোলিং পার্টনার ছিলেন ১৪ টেস্টে ৬৮ উইকেট নেয়া ডানহাতি পেসার পিটার হেইন। গুড লেংথ থেকে অস্বাভাবিক উচ্চতায় বল ওঠানোর কায়দাটা জানতেন হেইনও। এমনকি ফ্লাট পিচেও গতির ঝড় তুলতে পারতেন দুজনেই। অ্যাডককের চাইতে এক ইঞ্চি বেশি লম্বা হেইন পারদর্শী ছিলেন স্লেজিংয়েও।

সাবেক ইংরেজ অধিনায়ক কলিন কাউড্রের দৃষ্টিতে ‘হেইন-অ্যাডকক’ জুটি নাকি ‘মিলার-লিন্ডওয়াল’ জুটি থেকেও ভয়ানক ও আগ্রাসী ছিলেন।

টম গ্রেভেনির মতে, ‘Two of the nastiest customers I came across.’ কিংবদন্তি ইংরেজ ব্যাটসম্যান পিটার মে’র চোখে, ‘The most hostile pair of fast bowlers I had ever faced. Together, the two were terrifying.’

গতি এবং স্কিলে অ্যাডকক এগিয়ে থাকলেও ফাস্ট বোলারসুলভ আগ্রাসন কিংবা খুনে মেজাজের দিক থেকে হেইনকেই এগিয়ে রেখেছেন সবাই।

শন পোলকের বাবা সাবেক ফাস্ট বোলার পিটার পোলকের মতে, ‘Adcock was quicker but Heine put the heat into the combination.’ বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার চার্লস ফরচুনের মতে, ‘Adcock was ‘quick and incisive’ and Heine was a ‘battle-axe’ with full of aggression.’

নিল অ্যাডককের ফার্স্ট ক্লাস ডেব্যু ১৯৫২ সালে, ট্রান্সভালের হয়ে নাটালের বিপক্ষে। অভিষেকে মনে রাখার মত কিছু করতে না পারলেও জ্বলে উঠেছিলেন ঠিক তার পরের ম্যাচেই। অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের বিপক্ষে মাত্র ৬৫ রান খরচায় তুলে নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট!

এক ম্যাচ পরই কিম্বার্লিতে গ্রিকোয়াল্যান্ডের বিরুদ্ধে আবারও নিলেন ১০ উইকেট। রোডেশিয়ার বিপক্ষে ঘরোয়া মৌসুমের শেষ ম্যাচেও নেন ৮ উইকেট। অভিষেক ফার্স্ট ক্লাস সিজনে ৬ ম্যাচ খেলে অ্যাডককের শিকার ছিল ১৪.৯০ গড়ে ৪০ উইকেট।

১৯৫৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডারবানে অ্যাডককের টেস্ট অভিষেক। প্রথম ইনিংসে উইকেটশূন্য থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে রেখেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটা হয়েছিল জোহানেসবার্গের পুরনো স্টেডিয়াম এলিস পার্কে। ওই ম্যাচেই টেস্ট ইতিহাসের ভয়ংকরতম স্পেলগুলোর একটি উপহার দিয়েছিলেন নিল অ্যাডকক।

নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারেই অ্যাডককের বিষাক্ত বাউন্সারের ছোবলে আঘাতপ্রাপ্ত হন দুই ওপেনার জিওফ র‍্যাবোন ও মার্ক চ্যাপলি। সেবা শুশ্রূষা নিয়ে কিছুক্ষণ পর খেলতে নামলে মাত্র ৯ রানের মধ্যে দুজনকেই আবার ফিরে যেতে হয় প্যাভিলিয়নে।

ডেভিড আয়রনসাইডের বলে র‍্যাবোনের (১) গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়েছিল উইকেটরক্ষক রাসেল এন্ডিনের হাতে; আর অ্যাডককের গুড লেন্থে পড়ে হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা একটি বল বুকে লেগে ‘প্লেড অন’ হয়েছিলেন চ্যাপলি (৮)।

চার নম্বরে নেমেছিলেন নিউজিল্যান্ডের তৎকালীন ‘সেরা ব্যাটসম্যান’ বার্ট সাটক্লিফ। অ্যাডককের প্রথম দুটো ডেলিভারি বেশ ভালভাবেই সামলেছিলেন তিনি। কিন্তু গোলযোগটা বাঁধল এর পরের বলে।

গতির তোড়ে বেসামাল সাটক্লিফ কিনা পড়িমরি করে খেলতে গেলেন হুক! ব্যাটে বলে সংযোগ না হওয়ায় অ্যাডককের ‘ওয়েল ডিরেক্টেড’ বাউন্সারটা সোজা গিয়ে লাগল মাথায়। আঘাত সইতে না পেরে তৎক্ষণাৎ লুটিয়ে পড়লেন মাটিতে। কানসহ মাথার বাম পাশের অনেকখানি জায়গা কেটে গিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরতে লাগল। জরুরি ভিত্তিতে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে নাকি বেশ কয়েকটা সেলাইও দিতে হয়েছিল।

খানিক বাদে খেলা আবার শুরু হল। পাঁচে নামা অলরাউন্ডার জন রিডও টিকতে পারলেন না বেশিক্ষণ; মাত্র ৩ রান করে ক্যাচ দিলেন অ্যাডককের বাউন্সারে, উইকেটরক্ষক এন্ডিনের হাতে। ইতিমধ্যেই তাঁর শরীরে ৫ বার আঘাত হেনেছে অ্যাডককের মিসাইল!

কিউইদের স্কোর ২৪/৩। এদিকে ‘গোলাবর্ষণ’ যেন থামছিলই না কিছুতে। খানিক্ষণ বাদে অ্যাডককের আরও একটি প্রাণঘাতী শর্ট পিচ বলের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন ছয়ে নামা লরি মিলার। বুকে আঘাতের যন্ত্রণা ও ক্ষত নিয়ে সাটক্লিফের মত তাঁকেও ছুটতে হয়েছিল হাসপাতালে।

সেদিন গুড লেন্থ থেকে সাপের ফণার মত বল ওঠাচ্ছিলেন অ্যাডকক। আর তাতেই নাকের জল চোখের জলে একাকার অবস্থা হয়েছিল প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানদের।

দলীয় ৩৫ রানের মাথায় এক প্রান্ত আগলে রাখা ব্যাটসম্যান ম্যাট পোরকেও (১৫) বরণ করতে হয়েছিল ওপেনার মার্ক চ্যাপলির পরিণতি। অ্যাডককের বাউন্সার বুকে লেগে ‘প্লেড অন’ এর শিকার হয়েছিলেন তিনিও।

নিল অ্যাডককের ঝুলিতে সেদিন উইকেট জুটেছিল ওই তিনটেই। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে দলকে ১৩২ রানের অসাধারণ এক জয় উপহার দিয়েছিলেন তিনি। ম্যাচটা বলতে গেলে একাই জিতিয়েছিলেন অ্যাডকক। মাত্র ৮৭ রান খরচায় নিয়েছিলেন ৮ উইকেট।

ওই ম্যাচটা অবশ্য ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে আরও একটি বিশেষ কারণে। এক অকুতোভয় যোদ্ধার সাহসিকতার দৃষ্টান্ত হিসেবে! শুনতে চান সেই গল্প? বলছি তবে শুনুন।

সেদিন লাঞ্চের পরপরই হাসপাতাল থেকে ফিরে এসে আবার ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন ‘আহত’ বার্ট সাটক্লিফ। শুধু নামেনই নি, ৮১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলকে ফলোঅনের হাত থেকেও বাঁচিয়েছেন। মাথায় ‘রক্ত ভেজা’ বিশাল এক ব্যান্ডেজ নিয়েও খেলেছেন ৮০ রানের লড়াকু এক ইনিংস।

বার্ট সাটক্লিফের ১০৬ বলে ৮০ রানের বিধ্বংসী ইনিংসটিতে ছিল ৭টি বিশাল ছক্কার মার! দুঃসাহসের চূড়ান্ত নমুনা প্রদর্শনকারী অনবদ্য ওই ইনিংসটিকে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ইনিংসের স্বীকৃতি দিয়ে থাকেন অনেকে।

যাই হোক এবার মূল প্রসঙ্গে ফেরত আসি। স্বাগতিক প্রোটিয়ারা কিউইদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল ৪-০ ব্যবধানে। দুইবার ইনিংসে ৫ উইকেটসহ অ্যাডকক নিয়েছিলেন ২৪ উইকেট।

১৯৫৫ সালে প্রথমবারের মত ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন অ্যাডকক। অভিষিক্ত পিটার হেইনের সাথে প্রথমবারের মত জুটি বেঁধে বোলিং করেছিলেন ওই সফরেই।

কেন ব্যারিংটন, টম গ্রেভেনি, পিটার মে, ডেনিস কম্পটন, কলিন কাউড্রে, ট্রেভর বেইলির মত ব্যাটসম্যান সমৃদ্ধ ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ তখন বিশ্বসেরা। ব্যাটসম্যানদের নৈপুণ্যে লর্ডস ও ট্রেন্টব্রিজে সিরিজের প্রথম দুটো টেস্ট হেসেখেলেই জিতেছিল স্বাগতিকরা। তবে সফরকারী প্রোটিয়ারা পাল্টা আঘাত হেনেছিল তৃতীয় টেস্টে। অ্যাডকক-হেইন জুটির কল্যাণে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র‍্যাফোর্ডে তুলে নিয়েছিল ৩ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর এক জয়। অ্যাডকক ৬টি আর হেইনের শিকার ছিল ৮ উইকেট।

হেডিংলিতে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে মাত্র ৪ ওভার বল করেই গোড়ালির হাড় মচকে গিয়েছিল অ্যাডককের। ওই ম্যাচে আর বোলিংই করতে পারেন নি তিনি। তবে অ্যাডককের অভাবটা বুঝতে দেন নি বাকি বোলাররা। বাঁহাতি পেসার ট্রেভর গডার্ড (৯ উইকেট) আর অফ স্পিনার হিউ টেফিল্ডের (৭ উইকেট) দুর্দান্ত বোলিংয়ে হেডিংলি টেস্ট জিতে সিরিজে দারুণভাবে ফিরে এসেছিল প্রোটিয়ারা।

বিশ্লেষকদের মতে, অধারাবাহিক, নড়বড়ে ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও প্রোটিয়াদের এভাবে ঘুরে দাঁড়ানোটা ছিল রীতিমতো বিস্ময়ের।

ইনজুরির কারণে অ্যাডকক মিস করেছিলেন পরের ম্যাচটাও। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ৯২ রানে হেরে প্রোটিয়াদের সিরিজ খোয়াতে হয়েছিল ২-৩ ব্যবধানে।

১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজেও হয়েছিল একই দশা! পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটোতেই হেরে বসে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। আর তৃতীয় টেস্টটা শেষ হয়েছিল অমীমাংসিতভাবে। তবে নিল অ্যাডকক, পিটার হেইন ও হিউ টেফিল্ডের (এক ইনিংসে ৯ উইকেট নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন কিংবদন্তি এই অফ স্পিনার) দুর্দান্ত বোলিংয়ে শেষ দুই টেস্ট জিতে সিরিজে অবিশ্বাস্য কামব্যাক করেছিল প্রোটিয়ারা।

২-০ তে পিছিয়ে থাকা সিরিজ শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছিল ২-২ ব্যবধানে! হিউ টেফিল্ড নিয়েছিলেন ৩৭ উইকেট, আর অ্যাডককের শিকার ছিল ১৪.৯০ গড়ে ২১ উইকেট।

১৯৫৭-৫৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম সিরিজে অ্যাডকক উপহার দিয়েছিলেন একরাশ হতাশা। পাঁচ ম্যাচ খেলে সর্বসাকুল্যে পেয়েছিলেন মাত্র ১৪ উইকেট, ২৯.২৮ গড়ে। সে তুলনায় যথেষ্ট ইম্প্রেসিভ ছিলেন পিটার হেইন; ১৯ উইকেট নিয়েছিলেন ১৮.৮৯ গড়ে।

সিরিজে অ্যাডককের একমাত্র উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্সটা এসেছিল ডারবানের কিংসমিডে; অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে গড়েছিলেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। প্রোটিয়ারা সেবার একটা ম্যাচও জিততে পারে নি; হেরেছিল ০-৩ ব্যবধানে।

১৯৬০ সালের ইংল্যান্ড সফরটা ছিল অ্যাডককের খেলোয়াড়ি জীবনের উজ্জ্বলতম অধ্যায়। কেননা সেবার তিনি গতিময় ফাস্ট বোলিংয়ের সাথে দেখিয়েছিলেন মনোমুগ্ধকর সুইংয়ের প্রদর্শনী!

স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজটা ০-৩ ব্যবধানে হারলেও দারুণ লড়াই করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দুইবার ইনিংসে ৫ উইকেটসহ ২৬ উইকেট নিয়ে অ্যাডককও নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। এছাড়া ১৯টা ফার্স্ট ক্লাস ট্যুর ম্যাচ খেলে শিকার করেছিলেন ১০৮ উইকেট! মাত্র ১৪ গড়ে!

যার ফলস্বরূপ ১৯৬১ সালে উইজডেন মনোনীত বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারটা উঠেছিল অ্যাডককের হাতে। ১৯৬২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজটাই ছিল অ্যাডককের ক্যারিয়ারের শেষ সিরিজ। দীর্ঘদিন ধরে পিঠ ও গোড়ালির ইনজুরিতে ভোগা অ্যাডকককে থামতে হয়েছিল মাত্র ৩১ বছর বয়সেই।

নয় বছরের নাতিদীর্ঘ ক্যারিয়ারে নিল অ্যাডকক টেস্ট খেলেছেন ২৬টি। মাত্র ২১.১১ গড়ে শিকার করেছেন ১০৪টি উইকেট। ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৫ বার। সেরা বোলিং ৬/৪৩।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সেরা বোলিং গড়ের রেকর্ডটা আজও তাঁর দখলে।

এছাড়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে মাত্র ১৭.২৫ গড়ে অ্যাডকক নিজের ঝুলিতে পুরেছেন চার শতাধিক উইকেট। ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৯ বার, ম্যাচে ১০ উইকেট ৪ বার। সেরা বোলিং ৮/৩৯।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link