ভারতের বাঁ-হাতি আতঙ্কের মূলে যারা

বাঁ-হাতি পেসারের সঙ্গে ভারতীয় টপ অর্ডারের যেন দা-কুমড়া সম্পর্ক। ২০১৭ সালে মোহাম্মদ আমির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের টপ অর্ডারে ত্রাস ছড়িয়েছিলেন। সেটির ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ট্রেন্ট বোল্ট এবং ম্যাট হেনরি সাফল্য পেয়েছিলেন রোহিত, বিরাটদের বিপক্ষে।

সাম্প্রতিক সময়ে শাহীন শাহ আফ্রিদি নিয়মিতই বিপদে ফেলেন প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের ব্যাটারদের। ২০২১, ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কিংবা ২০২৩ সালের এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে এই পেসারের ইনসুইং সামলাতে পারেনি ভারতীয় টপ অর্ডার।

বোল্ট, স্টার্ক কিংবা শাহীনের মত বিখ্যাত পেসার ছাড়াও বিশ্বকাপে এমন কয়েকজন বাঁ-হাতি পেসার খেলবেন যারা স্বাগতিকদের পরীক্ষা নিতে পারেন।

  • রিকি টপলি (ইংল্যান্ড)

ওয়ানডে ক্যারিয়ারঃ ৩৮ উইকেট, ২৬.৮১ গড়, ৫.২১ ইকোনমি

ইংল্যান্ডের দীর্ঘদেহী পেসার রিকি টপলি যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই আতঙ্কের কারণ। গতিময় ডেলিভারি আর সুইংয়ের মিশেলে ব্যাটারকে বোকা বানান তিনি। তবে ভারতের বিপক্ষে একটু বেশিই পারফর্ম করেন টপলি; মাত্র ১৬.৪২ বোলিং গড়ে দলটির বিপক্ষে ১২ উইকেট শিকার করেছেন এই বাঁ-হাতি।

নতুন বলে উইকেট তোলার পাশাপাশি মাঝের ওভারে পার্টনারশিপ ভাঙ্গা কিংবা ডেথ ওভারে রান আটকানোতে পারদর্শী তিনি। বিশ্বকাপে তাই ভারতকে সাবধানী হতেই হবে এই ইংলিশ তারকার বিপক্ষে।

  • স্যাম কারেন (ইংল্যান্ড)

ওয়ানডে ক্যারিয়ারঃ ২৮ উইকেট, ৩৬.৭৮ গড়, ৫.৮৯ ইকোনমি 

নতুন বলে নিয়মিত বোলিং না করলেও দুই দিকেই সুইং করাতে পারেন স্যাম কারেন। সতীর্থ রিকি টপলির মত গতি না থাকলেও কারেনের বোলিং ভাণ্ডারও যথেষ্ট সমৃদ্ধ। ইয়র্কার, স্লোয়ার আর কুইক বাউন্সারে যেকোনো ব্যাটসম্যানকেই কাবু করার সামর্থ্য আছে তাঁর।

ভারতের বিপক্ষে রেকর্ড বেশ সাদামাটা হলেও ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যান অব দ্য সিরিজ জেতা বাঁ-হাতি পেসারকে আলাদা চোখেই দেখবে রোহিত বাহিনী।

  • শরিফুল ইসলাম (বাংলাদেশ)

ওয়ানডে ক্যারিয়ারঃ ৩৩ উইকেট, ২৪.৮৪ গড়, ৫.৩৭ ইকোনমি 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের পেস বিভাগ বিশ্বের অন্যতম সেরা। আর এই পেসারদের একজন শরিফুল ইসলাম; তাঁকে ব্যাখ্যা করতে একটা লাইন-ই যথেষ্ট – মুস্তাফিজ নয়, টাইগারদের প্রথম পছন্দের বাম-হাতি পেসার এখন শরিফুল।

এবারের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে যেভাবে বোলিং করেছেন এই তরুণ সেটা ভয় ধরাতে পারে বিশ্বের যেকোনো টপ অর্ডারের মাঝে। অবশ্য ভারতের বিপক্ষে এখনো খেলা হয়নি শরিফুলের, আর সেটা আরো বড় দুশ্চিন্তার কারণ টিম ইন্ডিয়ার জন্য। কেননা অপরিচিত বোলারকে খেলতেই বেশি সমস্যা হয় রোহিত শর্মাদের।

  • মার্কো জ্যানসেন (দক্ষিণ আফ্রিকা)

ওয়ানডে ক্যারিয়ারঃ ১৮ উইকেট, ৩৮.২২ গড়, ৬.২৩ ইকোনমি

৬ ফুট ৮ ইঞ্চি – এমন উচ্চতার একজন পেসার ঠিকঠাক লাইন লেন্থে বল করতে পারলে যেকোনো ব্যাটিং লাইন আপকে কাঁপিয়ে দিতে পারে। আর তিনি যদি হন বাঁ-হাতি, তাহলে ভয়টা বেড়ে যায় আরো অনেকখানি। দক্ষিণ আফ্রিকার মার্কো জ্যানসেনকে তাই বিশেষ নজরে রাখতেই হয়; তাঁর রিলিজ পয়েন্টের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবে ভারতকে।

দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ভারতের ম্যাচ হবে ইডেন গার্ডেনে। এই পিচে নতুন বলে পেসাররা সাহায্য পান, আর সেটা কাজে লাগাতে পারলে প্রোটিয়াদের নিশ্চিতভাবেই উড়ন্ত সূচনা এনে দিবেন মার্কো জ্যানসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link