পেস বান্ধব দেশগুলোর মাঝে কেবল নিউজিল্যান্ডেই নিয়মিত সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। অথচ, ২০২১ সাল পর্যন্ত কোন জয়ের মুখ দেখতে পায়নি টাইগাররা।
এই লজ্জা খানিকটা কমেছে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে, এবাদত হোসেনের অবিশ্বাস্য এক স্পেলে তখনকার টেস্ট চ্যাম্পিয়নদের তাঁদের মাটিতে হারিয়ে চমক উপহার দেয় মুমিনুল হকের দল।
এরপর বাকি ছিল সাদা বলে জয় পাওয়া; সেই অতৃপ্তিও পূর্ণতা পেল পাঁচদিনের ব্যবধানে। ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রথমবারের মত ওয়ানডেতে কিউইদের হারায় বাংলাদেশ; এরপর ২৭ তারিখে টি-টোয়েন্টিতেও জয় তুলে নেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
তিন ফরম্যাট, ঐতিহাসিক তিনটা জয় – তিনের এই খেলা অবশ্য এক মোহনায় মিলেছে আরেকটা ‘তিন’-এর কল্যাণে। মাত্র তিনজন টাইগার ক্রিকেটার এই তিন জয়ের সাক্ষী হতে পেরেছিলেন মাঠ থেকেই – তাঁরা হলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস এবং শরিফুল ইসলাম। শুধু মাঠেই থাকেননি, সবাই কিন্তু দলের জয়ে প্রতিবারই রেখেছিলেন অবদান।
রূপকথার জন্ম দেয়া সেই টেস্ট ম্যাচে লিটন আর শান্ত দু’জনেই পেয়েছিলেন হাফ সেঞ্চুরি, তাঁদের ব্যাট থেকে এসেছিল যথাক্রমে ৮৬ ও ৮১ রান। আর বল হাতে শরিফুল প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট। এবাদতের পাশাপাশি তাই তাঁরাও ছিলেন নায়ক।
ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি জয়ে অধিনায়কের আসনে ছিলেন স্বয়ং নাজমুল শান্ত। প্রথমবারের মত ওয়ানডেতে জয় পাওয়ার দিন অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি, করেছিলেন নান্দনিক এক ফিফটি; লিটন অবশ্য কিছু করাই সুযোগ পাননি।
কেননা শরিফুলরা আগেই গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ব্ল্যাকক্যাপদের – মাত্র ৯৯ রানে অলআউট হয়েছিল দলটি, যেখানে তিন উইকেট নিয়েছেন এই বাঁ-হাতি পেসার। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে তো মোমেন্টাম এনে দিয়েছিলেন এই তরুণ নিজেই।
প্রথম ওভার করতে এসেই পরপর দুই বলে তুলে নিয়েছিলেন দুই উইকেট, সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা।পরবর্তীতে লিটনের ধৈর্যশীল ৪২ রানের ইনিংসে আট বল হাতে রেখেই উদযাপনে মাতে মেহেদী, সৌম্যরা। অধিনায়ক শান্ত দারুণভাবে নেতৃত্ব দেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেছেন মূল্যবান ১৯ রান, যদিও তাঁর কাছে প্রত্যাশা ছিল আরেকটু বেশি।
সব মিলিয়ে দলগত পারফরম্যান্সেই তিন সংস্করণে তিনটি স্মরণীয় মুহূর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। জিততে শিখে গিয়েছে বাংলাদেশ, এখন তাই শুধু জেতার পালা।