জিতলেও দুশ্চিন্তা ‘টপঅর্ডার’

ঘুরেফিরে শুরুর কয়েক ওভারেই আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশ তাদের ওপেনারদের হারায়। আউটের ধরন গুলো যেমন এক, তেমনি বোলারও প্রায় একই।

পুল শট খেলতে গিয়ে মিড উইকেট এরিয়াতে লিটন দাসের ক্যাচ, ফ্রন্ট ফুটে খেলতে গিয়ে তামিম ইকবালের এলবিডব্লু নয়তো কট বিহাইন্ড – আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা মানেই শুরুর দিকে এসব দৃশ্য। ওপেনিংয়ে সুযোগ পাওয়া রনি তালুকদার কিংবা নাইম শেখদের গল্পও প্রায় এমনই।

ঘুরেফিরে শুরুর কয়েক ওভারেই আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশ তাদের ওপেনারদের হারায়। আউটের ধরন গুলো যেমন এক, তেমনি বোলারও প্রায় একই। হয় ফজলহক ফারুকী নাহলে মুজিব-উর-রহমান তুলে নেন টাইগার ওপেনারদের উইকেট।

ব্যতিক্রম হয়নি প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও। প্রথম ওভারেই ফজল হক ফারুকীর ইনসুয়িং বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়েছেন রনি তালুকদার। আরেক ওপেনার লিটন দাসও পুল করতে গিয়ে আউট হয়েছেন মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে – যদিও এবার বোলারের নাম আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তিন নম্বরে নামা ব্যাটারও রেহাই পাননা এদের হাত থেকে; এই যেমন চলতি সিরিজে দ্বিতীয়বারের মুজিবের বলে আউট হয়েছেন নাজমুল শান্ত।

১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাত ওভারের মাঝেই তিন উইকেট হারিয়ে বসেছে বাংলাদেশ। তবে তাওহীদ হৃদয় আর শামীম হোসেনের ব্যাটে ছড়ে জয় ছিনিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। অনূর্ধ-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা এই দুইজনের গড়া ৭৩ রানের দুর্দান্ত জুটিতে আফগান বধের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা।

জিতলেও ভাবনায় বিষয় আফগানিস্তানের বিপক্ষে অধিকাংশ ব্যাটারদের ব্যর্থতা। দলটির বিপক্ষে ব্যাটিং ধ্বস অতি নিয়মিত দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। এর আগে প্রথম আর দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও একই পরিস্থিতিতে পড়েছিল টিম বাংলাদেশ।

প্রথম ম্যাচে ৭২ রানের মাথায় তিন উইকেট পড়লেও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ১৬৪ রানের মাথায় নবম উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে তো আরো বাজে অবস্থা, মাত্র ২৫ রানেই সাজঘরে ফিরে গিয়েছিল তিন টপ অর্ডার ব্যাটারকে। যদিও মুশফিকুর রহিমের অর্ধ শতকের উপর ভর করে পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে পেরেছিল টিম টাইগার্স।

ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতলেও শুরুর দিকে ঠিকই অস্বস্তিতে ছিল ব্যাটাররা। নাইম শেখ এবং নাজমুল শান্ত সেসময় বিদায় নিলেও অবশ্য অস্বস্তি কাটিয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন অধিনায়ক লিটন দাস; বাংলাদেশও জিতেছিল আধিপত্য দেখিয়ে।

ফলে একটা কথা স্পষ্ট যে টপ অর্ডারদের ব্যাট থেকে বড় রান আসলে বাংলাদেশ অনায়াসে ম্যাচ জিততে পারে রশিদ খানদের বিপক্ষে। কিন্তু সেটাই ঘটে কালেভদ্রে, ফজলহক ফারুকীর পেস কিংবা মুজিব-উর-রহমানের রহস্য মাখানো স্পিন কোনোটাই আত্মবিশ্বাসী হয়ে খেলতে পারছে না টাইগার ব্যাটাররা। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বের অন্যান্য বাঘা বাঘা বোলারদের কিভাবে সামলাবেন লিটন,তামিমরা সেই প্রশ্নও উঠছে।

বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপের মত বড় মঞ্চে নামার আগে তাই লাল-সবুজের বড় দুশ্চিন্তার কারণ নড়বড়ে টপ অর্ডার। নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল ফর্মে নেই, লিটন দাসও ধারাবাহিক নন – দ্রুত এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না পারলে বিশ্ব মঞ্চে ভাল কিছু করার স্বপ্ন স্বপ্ন-ই রয়ে যাবে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...