হাতে শেষ তিন উইকেট,কার্টেল ওভারের ম্যাচে ওভার বাকি মোটে ৬ টা। আমাদের সেট ব্যাটার তৌহিদ হৃদয় অফস্পিনার মুজিবের সামনে ঠেলে দিলেন লেফটি তাসকিনকে।
মুজিবের দ্রুতগতির বলে তাসকিন এলবিডব্লিউ হলেন। বেশ! পরের চারটি বল সলিড ডিফেন্স করে সামলালেন নতুন ব্যাটার হাসান মাহমুদ।
পরের ওভার,পেসার ওমরজাইয়ের প্রথম বলেই ফ্লিক। করে স্কয়ার লেগে পাঠিয়ে সিংগেল নিলেন ৪৮ রানে অপরাজিত ব্যাটার তাওহীদ হৃদয়। পরের পাঁচ বল সামলালেন ১ এভারেজের ব্যাটার হাসান মাহমুদ। চারটি ডটের বদলে যদিও একটি বাউন্ডারি বের করলেন!
এরপরের ওভারে যেটি ঘটলো তার চেয়ে দৃষ্টিকটু কিছু এই ম্যাচে হতে পারে না। রশিদ খান বোলিংয়ে আসলেন, তার বলেও প্রথমটিতেই বলটা লং অনের দিকে আলতো পুশ করে হাসান মাহমুদকেই স্ট্রাইকে পাঠালেন।
দশ নম্বর ব্যাটার,যার এভারেজ ২ এরও কম, আপনি তাঁকে ঠেলে দিলেন তর্কসাপেক্ষে বিশ্বের সেরা স্পিনার রশিদের সামনে। ভাগ্যিস, কোনোভাবে নিজেট উইকেটটা পরের পাঁচ বলে বাঁচালেন হাসান!
অবশেষে পরের ওভারের তৃতীয় বলে হাসান মাহমুদের কাছ থেকে স্ট্রাইক পেয়ে আলতো পুশে দুই রান নিয়ে নিজের ফিফটি পূর্ণ করে তার পরের বলেই দলের রান বাড়াতে প্রথমবারের মতোন ডাউন দ্য উইকেটে চার্জ করতে এলেন হৃদয়, পারলেন না,কট বাহাইন্ড হয়ে ফিরে গেলেন সাজঘরে।
আপনি যদি সত্যিই ফারুকী বা আফগান অন্যান্য পেসারদের বিপক্ষে চার্জ করার সক্ষমতা রাখেন, এটা বিশ্বাস করেন,তবে কেন তখন শুরু করলেন না,যখন তাসকিন আউট হলেন। প্রতিটি ওভারে প্রথম বলেই।
কেন আপনি দশম ব্যাটারকে স্ট্রাইক দিবেন, যার ব্যাট হাতে সক্ষমতা নেই,তা আপনি জানেন? কেন রশিদ খানের ওভারটিও আপনি হাসান মাহমুদকে খেলাবে, যাকে সামলাতে বিশ্বের সেরা ব্যাটাররাও ভোগেন! কেন নিজের অর্ধশতক করার পরের বলেই মনে হল,আপনার বাউন্ডারি বের করা প্রয়োজন!
আপনি তরুণ হোন,আর যাই হোন,অভিজ্ঞতার যতোই অভাব থাকুক,তা কোন অজুহাত হতে পারে না।এটা হয় আপনার গেম সেন্সের অভাব,আপনি টিভিতেও যথেষ্ট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখেন নি,তাই জানেন না, টেইল এন্ডার নিয়ে কী করে ব্যাট করতে হয়!
অথবা,আপনি স্রেফ নিজের গা বাঁচিয়ে সেইফ খেলে নিজের ফিফটিতে নিশ্চিত করেছেন,যাতে বাংলাদেশ দলের থোড়াই উপকার হয়েছে!এটা তিনি সতীর্থ বড় ভাইদের কাছ থেকে শিখেছেন কি না,তা তিনিই ভাল জানেন।
ফর্ম আপনার ভাল বা খারাপ যেতে পারে, আপনার অ্যাবিলিটি কম- বেশি হতে পারে, কিন্তু ম্যাচের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মাঠে আপনার অ্যাপ্রোচ, অ্যাটিটিউড,এগুলোই বড় পার্থক্য গড়ে দিবে,অন্য এভারেজ ক্রিকেটারদের থেকে আপনাকে আলাদা,অনন্য করে তুলবে।
ম্যাচের বিশেষ মুহূর্তে আমার তরফ থেকে তাওহীদ হৃদয়ের গেইম অ্যাপ্রোচের সমালোচনায় বাংলাদেশ দলের ইনিংস ধরে রাখায় তার কৃতিত্ব বা অবদান ফিকে হয়ে যায় না। তাওহীদের গাটসি ব্যাটিংয়ের জন্যই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝেও বাংলাদেশ দল লড়াই করার ন্যূনতম পুঁজি পেয়েছে। যদিও, তাতে শেষ রক্ষা হয়নি।